ইনসাইড পলিটিক্স

কাউন্সিলে প্রেসিডিয়ামে ব্যাপক পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/11/2019


Thumbnail

আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এবার আওয়ামী লীগেরকাউন্সিলে নানা দিকে চমক আসছে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক সূত্রে জানা গেছে। আওয়ামীলীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বলেছেন, এবার আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে বেশ কিছু চমক আসবে।

তবে একটি সূত্র বলছে, এবার কাউন্সিলে সবচেয়ে পরিবর্তন হবে দলের প্রেসিডিয়ামে। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুসারে দলের সভাপতির পরই প্রেসিডিয়ামের স্থান। প্রেসিডিয়াম হলো দলের মূল চালিকা শক্তিও নীতিনির্ধারক সংস্থা। ১৫ সদস্যের প্রেসিডিয়ামে সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুর পর বর্তমানে ১৪ সদস্যের প্রেসিডিয়াম রয়েছে। এই প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মধ্যে অন্তত ১০জনই বাদ যেতে পারে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র আভাস দিয়েছে। তবে বার্ধক্যজনিত কারণেই তারা বাদ পড়ছেন বলে জানাচ্ছে সূত্রটি। এ সূত্রগুলো বলছে দলকে আরো গতিশীল এবং তারুণ নেতৃত্বকে জায়গা করে দেওয়ার জন্য প্রেসিডিয়াম থেকে প্রবীনদেরকে উপদেষ্টামণ্ডলীতে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। 

প্রেসিডিয়ামের যে সব সদস্য বাদ পড়তে পারেন বলে আভাস পাওয়া গেছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন বেগম সাজেদা চৌধুরী। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ এবং দলীয় কর্মকাণ্ডে অনুপস্থিত। এছাড়াও শেখ ফজলুল করিম সেলিম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ইঞ্চিনিয়ার মোশারফ হোসেন, পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য, নুরুল ইসলাম নাহিদ, শ্রী রমেশ চন্দ্র সেন, অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান এবং আবদুল মতিন খসরুরা রয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, দলের প্রোসিডিয়ামই হওয়া উচিত দলীয় কর্মকান্ডের মূল কেন্দ্র। কিন্তু বর্তমান প্রেসিডিয়ামের অধিকাংশ সদস্যদেরই দলীয় কর্মকাণ্ডে কার্যক্রম নেই। শুধু দলের কার্যনির্বাহী সভায় প্রেসিডিয়ামের সদস্যরা উপস্থিত হন। দলীয় কর্মকাণ্ডে বা সাংগঠনিক বিষয়ে তাদের ভূমিকা লক্ষনীয় নয়। শুধু আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়ামই ছিল মূল শক্তি। যেসময় তোফায়েল আহম্মেদ,আমির হোসেন আমু, আবদুর রাজ্জাকের মতো ব্যক্তিরা প্রেসিডিয়ামে ছিলেন। তখন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম অনেক শক্তিশালী এবং সক্রিয় ছিল।

আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়ামকে আবারো শক্তিশালী করতে চায় কারণ সমস্ত চাপ দলের সাধারণ সম্পাদকের উপর না দিয়ে প্রেসিডিয়ামের সদস্যদের মাধ্যমে দল পরিচালনা করার যে নীতি সেই নীতিতে ফিরে যেতে চায় আওয়ামী লীগ। সেক্ষেত্রে তরুণ এবং দলের কর্মকান্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তারা প্রেসিডিয়ামের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। প্রেসিডিয়ামের অন্তর্ভুক্তির জন্য যাদের নাম বেশি আলোচিত হচ্ছে তাদের মধ্যে মাহবুব আলম হানিফ। যিনি ইতোমধ্যেই আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ডাক্তার দিপুমনিও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আবদুর রহমান যারা মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এছাড়াও রাজশাহীর মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, খুলনার মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, সিলেটে মেয়র নির্বাচনে পরাজিত বদরউদ্দিন আহমেদ কামরানসহ মাঠ পর্যায়ে প্রবীণ এবং ভালো সংগঠকদেরকে প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভূক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতা বলেছেন, প্রেসিডিয়াম এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বর ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করেই এবিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে তিনি দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপর চাপ কমাতে চান এবং প্রেসিডিয়ামকে কার্যকর করতে চান।

আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতা বলেছেন, আওয়ামী লীগ এখন একটা পরিবর্তনের মাঝপথে রয়েছে। কারণ আগামী দিনের নেতৃত্বে তরুণদেরকে জায়গা করে দেওয়ার জন্য, নেতৃত্বের যে পুনর্বিন্যাস এবং নেতৃত্বের যে পরিবর্তন সেই পরিবর্তনে ধারার সূচনা করতে হবে এই কাউন্সিলের মধ্যমে। সেক্ষেত্রে দলে যারা তরুণ এবং সম্ভাবনাময় আর যারা দলের জন্য শ্রম দিতে পারবে তাদেরকেই প্রেসিডিয়ামে নিয়ে আসা হবে।

আওয়ামী লীগের ঐ নেতা বলেছেন, শুধু প্রেসিডিয়াম নয়, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ব্যাপক পরিবর্তন আনা হবে। নবীন এবং প্রবীণদের মিশ্রণে একটি নতুন কমিটি করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রেসিডিয়ামের ক্ষেত্রে দেখা হবে দলের জন্য কাজ করা, দলের জন্য নেতৃত্ব দেওয়া এবং সারাদেশে সাংগঠনিক তৎপরতা সম্পর্কে যারা অবহিত তেমনি কেন্দ্রীয় কমিটির ক্ষেত্রে দেওয়া হবে অপেক্ষাকৃত তরুণ পাশাপাশি যাদের বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতি এবং কোনো অভিযোগ নেই তাদেরকেই কেন্দ্রীয় কমিটিতে আনা হবে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন এখনো সম্মলনের জন্য একমাস সময় বাকি আছে। এই সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন মহলের সঙ্গে কথা বলবেন এবং শেষ পর্যন্ত দলের জন্য যেটা মঙ্গলময় এবং ভালো হয় সে ব্যাপারে তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭