লিভিং ইনসাইড

আপনি কি ৮ ঘণ্টার কম ঘুমান?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 26/11/2019


Thumbnail

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যারা কাজের মধ্যে ডুবে থাকতে গিয়ে রাতে দেরিতে ঘুমাতে যান। আবার অনেকেরই অভ্যাস থাকে দেরি করে ঘুমাতে যাওয়ার। ঘুমাতে যাওয়ার আগেই যেন রাজ্যের কাজকর্মের কথা মনে আসে। আবার সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ছুটতে হয় কর্মক্ষেত্রে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এসব কারণে নিয়মিতভাবে ঘুমের পরিমাণ কম হয়ে যায় তাদের। এরপরও শরীরের সব কিছু ঠিক আছে বলে মনে করেন। ভাবছেন হয়ত, পুরোপুরি সুস্থই তো আছেন। তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন। কারণ কাজের চাপ ও কম ঘুমানোর ফলে ভেতরে ভেতরে আপনি জটিল অসুখের শিকার হতে পারেন।

প্রতিদিন অন্তত আট ঘন্টা ঘুমানো জরুরী। এর চেয়ে কম ঘুম হলে শারীরবৃত্তীয় ও মানসিক সমস্যা হতে পারে। আসুন, দেখে নিই, কম ঘুমের কারণে কি ধরনের জটিল সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। সমস্যাগুলো খুব কমন, তারপরেও দেখে নিন একবার-

বিষণ্ণতা

ভাবছেন কম ঘুমিয়েও তো শরীর সুস্থই আছে। কিন্তু খেয়াল করবেন এতে কাজে সবসময় মন বসছে না। হাজারো আবোল-তাবোল কথা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে, মনের মধ্যে অশান্তি লাগছে, কোনোকিছুর প্রতি ইচ্ছাশক্তিও কমে যাচ্ছে। এরপরে কিন্তু নিজেকে আর সুস্থ বলা যায় না। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, ঘুম কম হলে সবচেয়ে আগে প্রভাব ফেলে মনে। এমনকি দীর্ঘদিন ধরে কম ঘুমের ফলে ডিপ্রেশন বা বিষন্নতায় ডুবে যেতে পারে একটা সময়।

বয়স বৃদ্ধি পায়

পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ত্বকের বয়স বেড়ে যায়। ঘুম ঠিকমত না হলে কর্টিসল নামের হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এটি ত্বকের কোলাজেনকে নষ্ট করে দেয়। এদিকে কোলাজেনের কাজ হল ত্বকের টানটান ভাবটা ধরে রাখা। তাই কোলাজেন গেল তো ত্বকের যৌবনও গেল। শুধু তাই নয়, চোখের নীচে কালি পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডার্ক সার্কেলের সংখ্যাও বেড়ে যাবে নিশ্চিত।

শারীরিক সম্পর্কের ইচ্ছা কমে যায়

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কম ঘুমের ফলে শরীরে সেক্স হরমোনের ক্ষরণ কমতে থাকে। শুধু তাই নয় , কমে যায় উত্তেজনা সৃষ্টিকারী হরমোন। এটি কমিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করার ইচ্ছাকে কমিয়ে দেয়। রিল্যাক্স করার সময়ই যদি না মেলে তবে শারীরিক সম্পর্কের ইচ্ছাটাও চলে যায়। ফলে আগ্রহ কমে যাবে সত্যিই।

হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়

গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, কম ঘুম বাড়িয়ে দেয় হৃদরোগের সম্ভাবনা। কম ঘুম হৃৎপিণ্ডের স্পন্দনে ব্যাঘাত ঘটায়। দীর্ঘদিন কম সময় ঘুমোলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা তো কম নয়ই বরং হার্ট ফেইলিওরও হতে পারে। এ ছাড়াও ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস এর মত বিপজ্জনক রোগগুলোও চিরসঙ্গীর মতো আপনার শরীর বাসা বাঁধবে।

স্থূলতা

লোকে বলে এবং ধারণা করে যে বেশি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে মোটা হওয়া যায়। অথচ কম ঘুমানো সত্ত্বেও আপনি আগের তুলনায় মোটা হয়ে যাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এর জন্য দায়ী পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া। পর্যাপ্ত না ঘুমোলে খিদে বেশি পায়, এমনটাও দেখা গেছে বিভিন্ন গবেষণায়। বেশি খাচ্ছেন অথচ কম ঘুমের জন্য বিএমআর রেট সঠিক নয়। ফলে শরীরে জমছে অতিরিক্ত ফ্যাট যা স্থূলতার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়

মস্তিস্কের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিশ্রামও দরকার। নয়তো সে ধীরে ধীরে হারাতে থাকে বিভিন্ন ভাগের শক্তিগুলো। ঘুম পর্যাপ্ত না হলে মস্তিস্কের স্মৃতির অংশটি দুর্বল হতে থাকে যা ভুলিয়ে দিতে থাকে আপনার অতি প্রয়োজনীয় ঘটনা বা কথাগুলোও।

ঠাণ্ডাজনিত সমস্যাগুলো বাড়ে

যাদের আবহাওয়া পরিবর্তনে ঠাণ্ডাজনিত সর্দি-কাশি, অ্যালার্জির সমস্যা হয়, তাদের ঘুমের পরিমাণ কম হলে বা নির্দিষ্ট সময়ের কম ঘুম হলে সমস্যা বেশি দেখা দেয়। হাচি, কাশি, অ্যালার্জি কম ঘুম হলে বাড়বে। তাই এই সমস্যাগুলো এড়াতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতে চেষ্টা করবেন।

দুর্ঘটনার প্রবণতা বাড়ায়

কম ঘুমের ফলে মস্তিস্ক ঠিকঠাক নির্দেশ দেওয়া-নেওয়া করতে পারে না। ফলে যা করতে চান, তা না হয়ে অন্য একটা ভুল কাজ হয়ে যায়। এই সমস্যা অত্যন্ত বিপদের। যেমন রাস্তায় বেরিয়ে ঠিকঠাক গাড়ি চালাতে গেলেও মস্তিস্কের ভুলের জন্য হয়ে যেতে পারে বড়সড় ভুল। কম ঘুমিয়ে হয়তো অনেক কাজ সেরে ফেলা যায়। কিন্তু তাতে শরীরের প্রতি অন্যায় করা হয়। শরীর ঠিক না থাকলে কাজগুলোই বা তখন হবে কী করে। তাই সবার আগে নজর দিন নিজের শরীরে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭