ইনসাইড থট

অর্থনীতিতে আক্রমণ: ক্ষতগুলো যাদের তৈরী তারাই আক্রমণে প্রস্তুত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 26/11/2019


Thumbnail

কিছু কিছু পাখী গাছের শরীরে ক্ষত তৈরি করে সেই ক্ষততেই নিজের রাজত্ব ঘোষণা করে। হয়তো তাকেই বলে পাখীর বাসা । সেই জাতীয় পাখীকে নিয়ে কাব্য হয়, গল্প রচনা হয়, সুন্দর প্রকৃতির গূণকির্তন হয় । যেদিন ক্ষততে ক্ষততে গাছ নিজেই দাঁড়িয়ে থাকার ক্ষমতা হারায় সেদিন কবি লেখকের কিছু না হলেও মালিক হারায় তার আয় উপার্জনের একটি পথ ।

বাংলাদেশ নামক গাছটির শরীরে ক্ষত তৈরি করে নিজেদের রাজত্ব কায়েম শুরু হয়েছে সেই জন্ম লগ্ন থেকে । বিশেষ প্রজাতীর পাখিগুলোর নিজেদের নির্দিষ্ট কোন গোত্র না থাকলেও কখনও যেন শিকারে পরিণত না হয় তাই তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গোত্রের মুরিদ হয়েছে । সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশ নামক গাছের শরীরে ক্ষত তৈরি করেই চলেছে। ওরা জানে ক্ষতগুলো কিসের, কোথায় এবং তার গভীরতা কতটা ।

জাতীয় নির্বাচন ২০১৮ শেষ হবার পরেই তাদের পেইড এজেন্টগণ বিভিন্ন ভাবে পরাজয়ের প্রতিশোধের ছক আঁকতে শুরু করলো । কেউ কেউতো ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে অজান্তেই নীল নক্সার কথা প্রকাশই করে দিলো । তখন গার্মেন্টস শ্রমিক রাস্তায় আন্দোলন করছে। তারা বিভিন্ন ভাবে গার্মেন্টস শ্রমিকের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে গিয়ে বলেই ফেললেন,"বাংলাদেশ বর্তমান সরকারের মূল ভিত্তি হলো অর্থনীতির চাকা । যাই কিছু ঘটুক সরকার সেই চাকাকে সচল রাখতে পেরেছে বলেই তারা এখনও দাঁড়িয়ে আছে ।

বোঝা গেলো তারা সরকারকে চূড়ান্ত আঘাত করতে অর্থনীতির চাকাকেই টার্গেট করেছে । তার সত্যতা মেলে যখন একি বার্তা আমেরিকায় থাকা কিছু বাংলাদেশি প্রবাসী বিভিন্ন ভাবে একই দিক নির্দেশ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে দেয় । আমি সেদিন লিখেছিলাম , বিশেষ এই গোষ্ঠী টার্গেট করেছে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ।
সরকারের দৃঢ়তায় একটি বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও এর মধ্যেই জ্বলে উঠেছে দাবানল । বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকে আজ অবধি যা কেউ করতে পারেনি, শেখ হাসিনা সেখানেই আঘাত করেছে। আঘাত করতে গিয়ে তিনি দেখেন, পাখীর গল্পটা মিথ্যা নয় । এতো চেষ্টা, এতো বিনিয়োগ, এতো অর্থায়ন অথচ এগিয়ে যাবার গ্রাফ এত ধীর গতি সম্পন্ন কেন ? ভালো করে তাকিয়ে দেখে সেই বিশেষ সম্প্রদায়ের পাখীরা প্রায় সব এসে বাসা বেঁধেছে আওয়ামীলীগ গোত্রে।
গোত্র প্রধান নিজেই যখন জানান দিলেন যেই গোত্রের হওনা কেন কোন ছাড় নয় । এবং তার স্বপক্ষে যথেষ্ট শক্ত অবস্থান বুঝতে পেরেই পাখীগুলো সব একত্রে আবার জেগে উঠেছে ।
এতোদিন কেউ যখন শিকার করতে না পারে তারজন্য গোত্র পরিবর্তন করে টিকে থাকলেও আজ যখন গোত্র প্রধান নিজেই দাঁড়িয়েছে বিপক্ষে তখন তাদের যাবার আর স্থান নেই । পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই । কারণ গোত্র প্রধান নিজেই এখন ক্ষমতায় ।
তাহলে তাদের করণীয় কি ? করবে তারা? বেঁচে থাকতে গেলে তাদের মুখোমুখি যুদ্ধ ঘোষণা ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই ।

১। বিভিন্ন গার্মেন্টসে শ্রমিক ছাঁটাই, বেতন ভাতা নিয়ে অসন্তোষ
২। জুট মিলের অচল অবস্থা আন্দোলন
৩। চামড়া নিয়ে কারসাজী
৪। বিনিয়োগে বাঁধা প্রদান
৫। বিদেশে অর্থ পাচার
৬। ঋণ খেলাপিকে পেশা হিসাবে নেয়া
৭। বাজার ব্যবস্থায় সিণ্ডিকেটের দৌড়াত্ম বেড়ে যাওয়া
৮। প্রবাসীদের বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী বিষয়ে অন্ধকার সময় উঁকি দেয়া
৯। নিরাপদ বাহন রেলগাড়িকে বিপদজনক হিসাবে চিহ্নিত করা
১০। হঠাত করেই জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে যাবার ইংগিত দেখা দেয়া
১১। সরকারী বাজেটের বৃহৎ অংশ চুরি/আত্মসাত করা
১২। সড়ক ব্যবস্থায় প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিগত ভাবে নৈরাজ্য ধরে রাখার চেষ্টা

উক্ত সকল বিষয় সহ প্রায় প্রতিটি স্থানেই যে ক্ষত তৈরি করা হয়েছিলো সেই ক্ষততে পুনরায় আক্রমণ এখন সময়ের ব্যপার মাত্র । কারণ ক্ষত যারা তৈরি করেছে তার পরিমাপ ও পরিসংখ্যান সবই তাদের জানা । আক্রমণের পদধ্বনি এখন দরজায় দাঁড়িয়ে।
বলার অপেক্ষা রাখেনা সরকার নিশ্চিত ভাবে সেই পাখীদের চেনে জানে এবং তাদের কার দৌড় কোন পর্যন্ত সব কিছুই জানে । আর তাই হয়তো ডিফেন্সিভ গেম মনে হয় খেলার কোন সূযোগ আর নেই । আক্রমণাত্মক গেম না খেললে হয়তো বাংলাদেশ নামক দেশটাকে পদদলিত করবে তারা শুধুমাত্র নিজেদের বাঁচানোর তাগিতে ।
পরিকল্পিত আক্রমণ হবে এখন বেস্ট ডিফেন্স । সেই লক্ষেই যদি হয় পরবর্তি ধাপ তাহলে পাখীর সংখ্যা শূন্য না হলেও প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে আসবে তাতে সন্দেহ নেই । কারণ এর সংখ্যা খুব যে বেশি সেটা নয় । সত্যি যদি এই যুদ্ধে জয় জনগণের হয় তাহলে বাংলাদেশ আরো শক্ত অবস্থানে গিয়ে দাঁড়াবে এতে সন্দেহ নেই।

মোঃ তৈমুর মল্লিক
কলামিস্ট
প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক

দুর্জয় বাংলা সাহিত্য ও সামাজিক ফাউণ্ডেশন



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭