লিভিং ইনসাইড

কর্মক্ষেত্রেও থাকে আপনার শত্রু!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 07/12/2019


Thumbnail

অনেকেই অনেক বড় গলা করে বলেন সহকর্মী তো বন্ধুর মতো, সুখে দুঃখে, কাজেকর্মে খুবই সহযোগী। কিন্তু সবার এমন সহকর্মী সৌভাগ্য হয় না। সবার অফিসে আপনার সহকর্মী যে সবসময় বন্ধুই থাকবে এমন নিশ্চয়তা নেই। বন্ধুত্বের আড়ালে, ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে আপনাকে কেউ যেন ক্ষতি করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। যে সহকর্মীরা বন্ধুবেশে অন্যের ক্ষতি করে তাদের ধরা সহজ না। এরা একবার ধরা পড়লেও পরে আবার সাবধান হয়ে যায়। তাই অফিসে বন্ধুবেশী শত্রু শনাক্ত করুন। বুঝে নিন এই সহকর্মীরা কেমন হতে পারে- 

সহকর্মী যখন পলিটিশিয়ান

কিছু সহকর্মী থাকে যারা নিজের সাফল্য বসের কাছে ঢাকঢোল পিটিয়ে জানায়। খেয়াল রাখবেন এরা আবার কখনো আপনার কোনো সাফল্য নিজের বলে চালিয়ে দিতে পারে। মনে রাখতে হবে, এ ধরনের সহকর্মীরা আপনার কাছে এক কথা বলবে, আর বসের কাছে বলবে আরেক কথা। বসের অফিসে এরা প্রতিদিন বার বার গিয়ে নিজের গুণগান প্রকাশ করার চেষ্টা চালায়।

এদের থেকে রক্ষা পেতে হলে আপনি বস ও অন্য সহকর্মীদের সবসময় ই-মেইলের মাধ্যমে কাজের বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদান করুন। এতে আপনার কাজের কথা সবাই জানতে পারবেন এবং পলিটিশিয়ান সহকর্মী কাজের ক্রেডিট নেওয়ার সুযোগ পাবে না।

সহকর্মী যখন ধূর্ত

এ ধরনের সহকর্মীরা আপনার কাজের প্রশংসা করতে পারে। তবে সাবধান, যাচাই করুন এটা তাদের মনের কথা কিনা। এরা হয়তো গোপনে আপনার কোনো ক্ষতি করবে না, তবে অফিসে আপনার অবস্থানে বা তারচেয়েও বড় পদে যাওয়ার চেষ্টায় থাকবে।

এ ধরনের উচ্চাকাঙ্ক্ষী সহকর্মীদের কাছ থেকে নিজেকে রক্ষা করার সবচেয়ে ভালো পথ হলো তাদের আচরণ ও কথাবার্তা যাচাই করা। নিশ্চিত হোন, আপনার সামনে যে কথা বলছে ওই সহকর্মী, সেটা কি যুক্তিসঙ্গত? যখন আপনি থাকেন না, অন্যদের সঙ্গেও তিনি একইরকম কথা বলেন না তো?

সহকর্মী ভুল ধরার ওস্তাদ

কিছু সহকর্মী থাকেন, যাদের মূল কাজই হলো সহকর্মীর ভুল ধরে বেড়ানো। এরা যেকোনো পরিস্থিতিকে নেতিবাচক ভঙ্গিতে দেখেন। আর তাই এ ধরনের সহকর্মীর আচরণ আপনার জন্য খুব ক্ষতির কারণ হতে পারে।

এক্ষেত্রে আপনাকে একটি কাজই করতে হবে, তা হলো ভুল না করা। পারতপক্ষে ভুলের মাত্রা কমিয়ে ফেলুন। কাজের ক্ষেত্রে নিজেকে এমনকি ভুল ধরা সহকর্মীকেও চ্যালেঞ্জ করুন। সমস্যাগুলোকে বড় করে না দেখে সমাধানের পথ বের করুন।

সহকর্মী যখন আইডিয়া কপি করে

কাজের ফাঁকে হয়তো অফিস সংক্রান্ত কোনো দারুণ আইডিয়ার কথা আপনার সহকর্মীদের সঙ্গে শেয়ার করলেন আপনি। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে, কারণ এক শ্রেণীর সহকর্মী থাকে, যারা ভালো আইডিয়াগুলো চুরি করে নিজের বলে বসের কাছে চালিয়ে দেয়।

এ থেকে বাঁচতে আপনি যদি দীর্ঘ সময়ের কোনো মিটিংয়ে আপনার দারুণ সেই আইডিয়াটির কথা ভুলে বলে ফেলেন, তাহলে আগে শনাক্ত করুন কোন সহকর্মীর সেই আইডিয়া চুরি করার মানসিকতা আছে। দীর্ঘক্ষণের মিটিং শেষে সাধারণত কারো মনে থাকে না, কে কি বললো। তাই অন্যদের সামনে সন্দেহভাজন সহকর্মীকে উদ্দেশ্য করে আপনার আইডিয়ার কথা ইঙ্গিত দিয়ে তা বসকে জানাবেন উল্লেখ করুন।

যে সহকর্মী সময় নষ্ট করে

অনেক সহকর্মী আছে, যারা অফিসে কাজের কথা খুব একটা বলে না। বরং সময় পেলেই হয়তো আপনার পাশে এসে বসে যাবতীয় অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে। কাজের চাপ ভুলে যেতে বিনোদনমূলক এ ধরনের কথা শুনতে হয়তো আপনারও ভালো লাগে। তবে মনে রাখতে হবে, এতে কাজের ক্ষতি হচ্ছে, পিছিয়ে পড়ছেন আপনি।

এজন্য প্রতিদিনের কাজের ফাঁকে ১৫/২০ মিনিটের আড্ডা গ্রহণযোগ্য। এতে মানসিকভাবে আপনিও ফ্রেশ হবেন। তবে এর বেশি সময় যদি আপনার সহকর্মী নষ্ট করে, তাহলে তাকে ভদ্রভাবে বলুন- ‘আমাদের কাজ পড়ে আছে, চলুন কাজ শেষ করি আগে।’

যে সহকর্মী কাজ চাপিয়ে দেয়

অফিসে কিছু সহকর্মী থাকে, যারা নিজের কাজ অন্যদের উপর চাপিয়ে দেয়। বিশেষ করে জুনিয়ররা তাদের কাজটিই আগে করবে, এটা ভেবে তারা নিশ্চিন্তে সময় পার করে দেয়। এটি মোটেও সবসময় গ্রহণযোগ্য নয়। অফিসের কাজে টিমওয়ার্ক থাকতে হবে। এখানে কেউ কারো ব্যক্তিগত কাজ করতে দায়বদ্ধ না। সবাই যার যার দায়িত্ব পালন করবে, এটাই নিয়ম।

তাই এ ধরনের সহকর্মীর খপ্পরে পড়ে গেলে প্রথমে কাজটি আগে শেষ করুন। তারপর বসের কাছে গিয়ে বিষয়টি অফিস ও কাজের আঙ্গিকে ব্যাখ্যা করুন। ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে এগুলো বিবেচনা করবেন না।

যে সহকর্মী মিটিংয়ে আধিপত্য বিস্তার করে

এক ধরনের সহকর্মী থাকে, যারা অফিসের বিভিন্ন মিটিংয়ে সবসময় আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। এরা বক্তা, ভালো শ্রোতা না। এরকম সহকর্মীর কারণে হয়তো আপনার মতো আরো অনেকে মিটিংয়ে কথা বলার সুযোগ পান না।

এক্ষেত্রে আপনাকে সৃজনশীল হতে হবে। ওই সহকর্মীর কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনুন। কথার রেশ ধরেই তার প্রস্তাবনার দুর্বল দিকগুলো সম্পর্কে তার কাছ থেকে জানার চেষ্টা করুন। এভাবে নিজের ফাঁদে পড়বে সে। এ সুযোগে আপনি ব্যতিক্রম ও বুদ্ধিদীপ্ত আইডিয়াগুলো মিটিংয়ে উপস্থাপন করুন।

 

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭