নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 09/12/2019
আগামী জানুয়ারি থেকে নতুন করে শুরু হচ্ছে শুদ্ধি অভিযান। শুদ্ধি অভিযানের প্রথম পর্বে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তারপরই হঠাৎ করে থমকে যায় শুদ্ধি অভিযান।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা অবস্থায় যখন কারো বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তখন তার দায় দায়িত্ব দলের উপর বর্তায় এবং দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু দল যদি আগে থেকে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাকে দল থেকে বাদ দেয়। তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় দলের ভাবমূর্তি উজ্জল হয়। এমন একটি ধারণা পেষণ করছে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারক মহল। আর এ ধারণ থেকেই শুদ্ধি অভিযানের অবয়ব রূপ পাল্টে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, সারা দেশে আওয়ামী লীগের যে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মী, যাদের বিরুদ্ধে দূর্নীতি, টেন্ডারবাজী, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজীসহ নানা ধরণের অভিযোগ রয়েছে তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এদেরকে আগামী কাউন্সিলের মাধ্যমে দল থেকে উৎপাটিত করা হবে। দল থেকে সরে যাওয়ার পরই তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এতে আওয়ামী লীগ, যে কোনো দূর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজী, সন্ত্রাসী এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আশ্রয় প্রশয় দেয় না তা প্রমাণিত হবে। শুদ্ধি অভিযানের পর আওয়ামী লীগের অনেকের মধ্যেই কথা উঠেছে যে তারা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে ছিল। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে আগে ব্যবস্থা নেওয়া হলো না কেন।
বিশেষ করে যুবলীগের দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান, যুবলীগের সমাজ কল্যাণ সম্পাদক জিকে শামীম। এরকম অনেকের বিরুদ্ধে কথা উঠেছে যে, পদে থাকা অবস্থায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হলো কেনো। তাদের বিরুদ্ধে যখন অভিযোগ এসেছে তখন সঙ্গে সঙ্গে কোনো তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলো না। এই ব্যর্থতার কারণেই যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধরীকে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছিল।
একারণে তাই আওয়ামীলীগ মনে করছে, বিরোধী দলের জন্য সমালোচনার খোঁড়াক হচ্ছে আওয়ামীলীগের নেতা দূর্নীতিবাজ কিংবা আওয়ামীলীগের নেতা ক্যাসিনো বানিজ্যের সাথে জড়িত ইত্যাদি। একারণেই আওয়ামীলীগ তাঁর শুদ্ধি অভিযান আগে ঘরের ভেতরে শুরু করবে, যারা অভিযুক্ত, যাদের বিরুদ্ধে এ ধরণের কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে- তাদেরকে আগে দল থেকে বের করা হবে।
আওয়ামীলীগের আগামী ২০ এবং ২১ শে ডিসেম্বর যে কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেই কাউন্সিল অধিবেশন মূলত দলের অভ্যন্তরীণ শুদ্ধি অভিযান বলে আওয়ামীলীগ ঘোষণা করেছে। দলের মধ্যে যারা সুবিধাবাদী, অনুপ্রবেশকারী এবং দলের নাম ভাঙিয়ে যারা দলের ক্ষতি করছে- তাদেরকে এবার কাউন্সিলের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কাজেই ডিসেম্বরের ২০,২১ তারিখে কাউন্সিল অধিবেশন শেষ হয়ে গেলে যারা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতৃত্বে থাকবে না এবং বিভিন্ন অঙ্গসহযোগী সংগঠনে জায়গা পাবে না তখন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে আওয়ামীলীগের দিকে কেউ আঙুল তুলে বলতে পারবে না, আওয়ামীলীগের অমুক নেতা ক্যাসিনো বানিজ্য করেছে, আওয়ামীলীগের অমুক নেতা টেন্ডারবানিজ্য করেছে। এরপরেই নতুন আওয়ামীলীগের শুদ্ধি অভিযান শুরু হবে। আওয়ামীলীগের দায়িত্বশীল সুত্রগুলো বলছে, দুর্নীতিবাজ, ক্যাসিনো বানিজ্য, মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত অন্তত প্রায় সাড়ে সাতশ আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীর নামের তালিকা আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে রয়েছে। এরা যেন কোন পর্যায়ের কোন কমিটিতে না থাকতে পারে, সে ব্যপারে আওয়ামীলীগ সভাপতি সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। এই নির্দেশনার প্রেক্ষিতে এবারের কাউন্সিলে স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে কঠোর নজরদারি রাখা হয়েছে। যেন কোন দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ কমিটিতে না ঢুকতে পারে। কাউন্সিল অধিবেশন শেষ হলেই সাঁড়াশি শুদ্ধি অভিযান শুরু হবে এবং এই চিহ্নিত সাড়ে সাতশ জনকে আইনের আওতায় আনা প্রক্রিয়া শুরু হবে।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭