ইনসাইড পলিটিক্স

তাদের ভাগ্য ঝুলে আছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 14/12/2019


Thumbnail

সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হওয়া আওয়ামী লীগের শুদ্ধি অভিযানে অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন আর কয়েকজনকে দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাড়াতে হয়েছে। যাদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরে দাড়াতে হয়েছে তাদের অনেকেরই ব্যাংক হিসেব জব্দ করা হয়েছিল এবং তাদের বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের ব্যাপারে কোন আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি তারা দল থেকে বহিস্কৃতও হননি। কেবল তারা যে পদে ছিলেন সেই পদ থেকে তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।

এখন আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে ২০ এবং ২১ ডিসেম্বর। এই কাউন্সিল অধিবেশনের আগে প্রশ্ন উঠেছে তাদের কি হবে? এরকম কয়েকজনকে নিয়ে এই প্রতিবেদন;

ওমর ফারুক চৌধুরী

শুদ্ধি অভিযানে সবচেয়ে আলোচিত ছিলেন ওমর ফারুক চৌধুরী। শুদ্ধি অভিযানের সবচেয়ে বড় ঝড় বয়ে যায় আওয়ামী  যুবলীগের উপর দিয়ে। এই সময় যুবলীগের দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপরই ওমর ফারুক চৌধুরীকে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি তার ওপর দেশ ছাড়ার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এছাড়া তার ও তার পরিবারের ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করা হয়।

জানা গেছে, ওমর ফারুক চৌধুরী গত ২১শে নভেম্বর তার আয়কর বিররণী দাখিল করেছেন। তার ব্যাংকিং হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা গেছে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত টাকা পয়সার তেমনে কোনো উৎস পাওয়া যায়নি।

যে কয়েকটি বিষয় নিয়ে এনবিআরের আপত্তি ছিল সেই বিষয়গুলোর ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোনো মামলাও দাখিল করা হয়নি এমনকি তাকে দুর্নীতি দমন কমিশন থেকেও তলব করা হয়নি। এখন ওমর ফারুক চৌধুরীর কি হবে? তার ভাগ্য ঝুলে আছে।

মোল্লা আবু কায়সার

যুবলীগের পরেই ঝড় বয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ওপর দিয়ে। আর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কায়সারকেও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। তারও ব্যাংক হিসেব জব্দ করাসহ বিদেশ সফরের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

জানা গেছে, মোল্লা আবু কায়সারও নভেম্বর মাসে নিজের আয়কর বিবরণী জমা দিয়েছেন। তার যে ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছিল সেখানেও তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত তেমন কোনো সম্পদের তথ্য প্রমাণাদি পায়নি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

তার বিরুদ্ধেও এখন পর্যন্ত এনবিআর বা দুর্নীতি দমন কমিশন কোনো মামলা দয়ের কয়েনি। এখন তার ভাগ্যেও ঝুলে আছে।

পঙ্কজ দেবনাথ

বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথকেও  সম্মেলেনের আগে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়। পঙ্কজ দেবনাথ একজন এমপিও বটে। এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি বা তোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও শোনা যায়নি।

অবশ্য শুদ্ধি অভিযানের শুরু যাদের দিয়ে হয়েছিল সেই শোভন-রাব্বানী ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে দুদক ইতোমধ্যেই অনুসন্ধান শুরু করেছে। এছাড়াও নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনসহ আরো অভিযুক্ত কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত করছে।

প্রশ্ন হচ্ছে যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি এবং মামলা হয়নি তারা কি এভাবে ঝুলে থাকবেন নাকি তাদের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে? তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যতই বা কি? এই প্রশ্নগুলো এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে উঠেছে।

আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন যে, যদি তাদের বিরুদ্ধে করা অনুসন্ধানে নির্দোষ প্রমাণিত হন তাহলেই তাদের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা হবে। সেই চিন্তাভাবনা করবেন শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তিনিই নেবেন।   



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭