কালার ইনসাইড

ফাঁকা অফিসে অভিনেত্রীকে যৌন হেনস্তা অরিন্দম শীলের!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 12/01/2020


Thumbnail

হলিউড, বলিউডের পর এবার #মিটুর জোয়ার এসে ভিড়ল টালিউডেও। ‘মিতিনমাসি’, ‘ঈগলের চোখ’, ‘এবার শবর’–এর মতো জনপ্রিয় সিনেমার পরিচালক অরিন্দমের বিরুদ্ধে উঠেছে যৌন হেনস্তার অভিযোগ। তা-ও আবার যে সে কেউ নয়, অভিযোগটি তুলেছেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র।

রূপাঞ্জনার অভিযোগ, কলকাতার ইস্টার্ন বাইপাসের কাছে অরিন্দমের অফিসে স্ক্রিপ্ট পড়ে শোনানোর অছিলায় তার সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করেছিলেন পরিচালক। শুধু তাই নয়, ঘনিষ্ঠ আলিঙ্গনের মাধ্যমে তাকে কদর্য ইঙ্গিতও করেছিলেন অরিন্দম।

ভারতের সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজারকে রূপাঞ্জনা বলেন, “অরিন্দম পরিচালিত ‘ভূমিকন্যা’ সিরিয়ালের প্রথম এপিসোডের স্ক্রিপ্ট পড়ে শোনার জন্য আমায় ওর অফিসে ডাকা হয়েছিল। মনে আছে, তখন পুজো আসছে আসছে এমন একটা সময়। সম্ভবত তৃতীয়া। বিকেল পাঁচটার সময় আমায় পৌঁছতে বলা হয়েছিল। সেই মতো অরিন্দমের অফিসে যেতেই দেখি অফিস ফাঁকা, শুধু প্রোডাকশনের ছেলে ছিল। বিকেল পাঁচটার সময় অফিস ফাঁকা দেখে প্রথমে একটু অস্বস্তি হয়েছিল। ঢুকতেই তিনি জিজ্ঞসা করেন, চা খাবি? চায়ের লোকটি চা দিয়ে যাওয়ার পরেই সেখান থেকে কায়দা করে তাকে সরে যেতে বলেন উনি। তখন অফিসে শুধু আমরা দুজন। আমার ভীষণ আনক্যানি ফিল হচ্ছিল। আর ওর চেম্বারটা এমন ভেতরে যে চিৎকার করলেও কেউ শুনতে পাবে না। হঠাৎই নিজের জায়গা থেকে উঠে এসে ঘরেই একটা কাউচে এসে বসলেন। বলে বোঝাতে পারব না। ওর বসা, কথা বলা...ভীষণ ইঙ্গিতপূর্ণ। হাত বাড়িয়ে আমাকে ডাকছে।”

একটু থেমে রূপাঞ্জনা আবার বলা শুরু করলেন, “তিনি বসতে যাওয়ার আগে আমার মাথায় হাত বুলোচ্ছেন...কখনও পিঠে। আমি ভগবানকে ডাকছি তখন। আরে বাবা, আমি তো নতুন মেয়ে নই। এতদিন ধরে কাজ করছি। সাইবাবাকে ডেকে চলেছি, কেউ একজন যেন চলে আসে। কিন্তু কেউ তো নেই। মনে হচ্ছিল এবার বুঝি আমি রেপড হয়ে যাব। কেউ হাত-ফাত বুলিয়ে চলে যাচ্ছে..., এরপর যে তিনি কী করতে পারেন সেটা হয়তো একজন নারীর পক্ষে আন্দাজ করা খুব সহজ। আমি আর থাকতে না পেরে ওকে বেশ স্পষ্ট ভাষায় বলি, ‘অরিন্দমদা, প্লিজ টেল মি অ্যাবাউট দ্য স্ক্রিপ্ট। উনি বোধহয় তখন বুঝতে পারলেন, যেসব নারীর সঙ্গে উনি সচরাচর এ ধরনের ট্রিক খেলে থাকেন, আমি তাদের মধ্যে পড়ি না।”

রূপাঞ্জনার কথা অনুযায়ী, “এরপর আচমকাই ‘ডিরেক্টর মোডে’ চলে যান অরিন্দম। স্ক্রিপ্ট বোঝাতে শুরু করেন। এরপর পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমি জানি না কীভাবে, কোথা থেকে ওর স্ত্রী সেখানে উপস্থিত হন। আমাকে দেখে তিনিও অপ্রস্তুত। তিনি বোধহয় জানতেন না, তার স্বামী সেসময় আমাকে ওর অফিসে ডেকেছেন। আমাদের তিনজনের মধ্যে তখন অদ্ভুত নিস্তব্ধতা। সেকেন্ডের মধ্যে বউভক্ত হয়ে গেলেন তিনি। যে মানুষটা কিছুক্ষণ আগে আমায় নোংরা ইঙ্গিত করছিলেন তিনি হঠাৎ করে কীভাবে স্ত্রীকে দেখে একদম পাল্টি খেয়ে গেলেন আমি বুঝতেই পারছিলাম না। এরপর আমাকে তিনি ড্রপও করে দেন। ওর কোনও একটা প্রিমিয়ারে যাওয়া ছিল। যদিও সেটার কোনও প্রয়োজন ছিল না।”

ওখান থেকে বেরিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন অভিনেত্রী। কিন্তু এত দিন চুপ ছিলেন কেন? রূপাঞ্জনা জানান, যে চ্যানেলে ‘ভূমিকন্যা’ সম্প্রচারিত হত সেই চ্যানেলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন তিনি। যাতে চ্যানেলের ইমেজের কোনও ক্ষতি না হয়, সেজন্যই এতদিন চুপ ছিলেন। তার কথায়- “আর চুপ করে থাকতে পারলাম না। ইন্ডাস্ট্রিতে রোজ নতুন নতুন মেয়েরা আসেন। তারা যাতে ভবিষ্যতে ওই লোকটির থেকে সাবধান হয়ে যান, সে জন্যই মুখ খুলেছি। অরিন্দম শীল একটি অত্যন্ত বদমাশ, বদ লোক। ওর মুখোশ খোলার সময় এসে গিয়েছে। তিনি আগেও আরেক অভিনেত্রীর সঙ্গে এমনটা করেছেন।”

এমন অভিযোগের বিষয়ে পরিচালক অরিন্দম শীল বলেন, ‘‘এটা হয়তো পলিটিক্যাল স্টান্ট। আমি জানি না ও কেন এসব বলছে। এতদিনের বন্ধু ও আমার। যেদিনের কথা ও বলছে সেদিন অফিস থেকে বেরিয়ে ও আমায় টেক্সট করেছিল, আই অ্যাম সো এক্সসাইটেড। একসঙ্গে ওয়ার্কশপ করতে হবে কিন্তু। সেই টেক্সটও দেখাতে পারি আমি। ওর কথামতো যে ‘কুপ্রস্তাব’ দেবে তাকে কি ও আবার পাল্টা টেক্সট করবে? শুধু তাই নয়, ‘মিতিনমাসি’-র সময় আমি নিজে ওকে আমন্ত্রণ করেছিলাম। ও বলেছিল আসার চেষ্টা করবে। হঠাৎ করে ও কেন এসব মনগড়া কথা বলছে, আমি সত্যিই জানি না। একজন নারী হঠাৎ করে কোনও পুরুষ সম্পর্কে যা কিছু একটা বলে দিল মানেই সেটা সত্যি হয়ে গেল? ও মিথ্যে বলছে।”

খবর : আনন্দবাজার



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭