ইনসাইড গ্রাউন্ড

স্রোতের বিপরীতে থাকা মুশফিককে টুপি খোলা সম্মান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 19/01/2020


Thumbnail

জীবনের থেকে কি ক্রিকেট বড়? অবশ্যই না। একজন পেশাদার ক্রিকেটারের কাছে এই সত্যটা বলা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে যখন আপনি দেখছেন আপনার সতীর্থরা সেই জীবনের ঝুঁকিটাই নিচ্ছে। তবে ব্যতিক্রম মুশফিকুর রহিম। সত্যটাকে সত্য বলেই ভরা সাংবাদিক সম্মেলনে পাশে দাঁড়ালেন নিজ পরিবারের। ঝুঁকি নিয়ে পাকিস্তানের মতো একটি অনিরাপদ দেশে ক্রিকেট খেলতে যেতে চাননা তিনি।

শুধু কি মুশফিক? স্পিন কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টোরি, ব্যাটিং কোচ নেইল ম্যাকেঞ্জি, ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক, ট্রেনার মারিও ভিল্লাভারায়ন আর কম্পিউটার এনালিস্ট শ্রীনিবাসন পাকিস্তান সফরে যাবেন না বলে বোর্ডকে জানিয়ে দিয়েছেন। এর আগে শ্রীলঙ্কা যখন পাকিস্তান সফরে গিয়েছিল, সেবারও পাকিস্তানে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল প্রথম সারির প্রায় সকল ক্রিকেটার। লাসিথ মালিঙ্গা, কুশাল পেরেরার মতো ক্রিকেটারদের রেখেই কোনরকমে পাকিস্তান সফর শেষ করে শ্রীলঙ্কা।

আর বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন একমাত্র মুশফিক। এই সফরে না যাবার জন্য অবশ্য যথেষ্ট যুক্তিও রয়েছে তাঁর কাছে। পাকিস্তানকে পুরোপুরি নিরাপদ মনে করেন না বলে এর আগে পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) খেলার প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানে সফরের জন্য পরিবারের অনুমতি পাননি পাকিস্তানে যাবেন না মুশফিক।  

মুশফিক বলেন, ‘অবশ্যই, যেটা আমি বললাম বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারব না এটার চেয়ে বড় পাপ আমার জন্য কিছু হতে পারে না। আবার একই সঙ্গে দেখুন, পিএসএলের মতো টুর্নামেন্ট সেখানে খেলার প্রস্তাব ছিল। আমি কিন্তু প্রথমেই ওদের না করে দিয়েছি। কারণ আমি জানি এবার পুরো টুর্নামেন্ট পাকিস্তানে হবে। তখনই বলেছি, আমার পরিবার যেহেতু অনুমতি দিচ্ছে না।’

তবে পাকিস্তান যে অনিরাপদ তেমনটাও স্বীকার করতে রাজি নন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। তবে একটি দেশ নিরাপদ কিনা সেটা তো একটি বা দুটি সিরিজে প্রমাণ হয়না। তাই মুশফিক চাচ্ছেন কিছুটা সময়। পাকিস্তানের পরিস্থিতি যদি স্থিতিশীল থাকে আর অন্যান্য ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলো যদি নিয়মিত পাকিস্তান সফরে যায়, তাহলে মুশফিকের যেতেও আপত্তি নেই।

মুশফিক জানান, ‘আমি মনে করি পাকিস্তানের অবস্থা অবশ্যই আগের চেয়ে ভালো। কিন্তু আমি চাই দুইটা বছর অন্যান্য দল গেলে ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে যাওয়ার ওই আত্মবিশ্বাস আসবে। আর আমি কিন্তু পাকিস্তানে আগেও গিয়েছি। আমার কাছে ওটা অনেক ভালো জায়গা, আর সুবিধা অনুযায়ী দারুণ। উইকেটও ব্যাটিং বান্ধব। আশা করি ভবিষ্যতে দুই তিন বছরের মধ্যে যদি ওখানে ধারাবাহিকভাবে স্থিতিশীল অবস্থা থাকে তবে কেন যাব না।’

পাকিস্তান সফর শেষে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটাররা নিরাপদে ফিরলেও অভিযোগ ছিল তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। হোটেল রুম থেকে শুরু করে রেস্টরুমেও যদি বন্দুকধারী নিরাপত্তারক্ষী থাকে তাহলে একজন অ্যাথলেটের জন্য খেলায় মনোযোগ দেয়াটা কতটুকু সম্ভব? ২৪ ঘণ্টা হোটেলবন্দি থাকা আর জেলখানায় আটক থাকার মাঝে কতটুকু পার্থক্য?

এরকম পরিস্থিতিতে মাঠে ক্রিকেট খেলা কতটুকু সম্ভব তা হয়তো বিসিবির বোধগম্য নয়। তবে স্রোতের বিপরীতে গিয়ে মুশফিকের এই সাহসিকতা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। জীবনের আগে ক্রিকেট নয়, ক্রিকেটের আগে জীবন। নিজের পরিবারের পাশে থেকে মুশফিকের এই সাহসিকতা আর সৎ সাহসে মুশফিককে টুপি খোলা সম্মান।

বাংলা ইনসাইডার/এসএম



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭