লিভিং ইনসাইড

শিশুর প্রথম স্কুল, মানিয়ে নিতে সমস্যা হলে…

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 20/01/2020


Thumbnail

আস্তে আস্তে আপনার ছোট্ট সন্তানটি বড় হয়ে গেছে। কথা, কবিতা, দুষ্টুমিতে ভরিয়ে রেখেছে আপনার ঘর। আধো আধো বুলি রেখে পুরো কথা বলতে শিখেছে। কলম, পেন্সিল আর রংপেন্সিল ঘুরিয়ে লেখাপড়া, আঁকিবুকিও শিখে গেছে। অনেক আকাঙ্ক্ষা শেষে একবুক স্বপ্ন নিয়ে তাকে পাঠালেন প্রথম স্কুলে। সোনামনির শিক্ষাজীবন শুরু হলো। কিন্তু প্রথম প্রথম বাচ্চাটির স্কুলে যেতে, নতুন পরিবেশে খাপ খাওয়াতে, পড়াশুনায় মন বসাতে, নতুন নতুন মানুষদের সঙ্গে মেলামেশায় সমস্যা হতে পারে। তাই অভিভাবক হিসেবে বাচ্চাটিকে পরিবেশের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে চেষ্টা করতে হবে। এজন্য মাথায় রাখুন কিছু বিষয়-

সন্তানকে স্কুলে রেখে আসার ক্ষেত্রে প্রথম প্রথম আপনারও খারাপ লাগতে পারে। শিশুর সামনে আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। তাকে হাসিখুশি মুখে স্কুলে নামিয়ে দিন।

স্কুল শুরুর প্রথম কয়েক সপ্তাহ নতুন ক্লাসের চাপে শিশুর মাঝে ক্লান্তি দেখা দিতে পারে। এসময় তার যত্ন নিন, ঘুম এবং খাওয়ার দিকে বাড়তি নজর রাখুন। তাকে দুপুরে পর্যাপ্ত ঘুমাতে দিন। বকাঝকা এই সময়ে একদমই না করা ভালো।

আপনার সন্তানের সঙ্গে স্কুলের গল্প করুন। সবকিছু সুন্দর করে জিজ্ঞেস করুন। নতুন বন্ধুদের কথা জিজ্ঞেস করুন, শিক্ষকরা কেমন ক্লাস নিচ্ছে, ক্লাস করতে কেমন লাগছে, সহপাঠীরা কেউ বিরক্ত করছে কিনা জেনে নিন। ক্লাস শেষের পর সুযোগ থাকে অন্যান্য বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতে দিন। এতে স্কুলের প্রতি তার আগ্রহ বাড়বে।

স্কুলে ভর্তির পরই শিশুর যাতায়াতের ভার স্কুল বাস বা অন্য কারও ওপর ছেড়ে দেবেন না। ক্লাস শুরু হওয়ার পর অন্তত কয়েক সপ্তাহ শিশুকে আনা-নেওয়ার দায়িত্ব আপনিই নিন, এতে শিশুর ভয় কাটবে। শিক্ষক শিক্ষিকাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন। শিশুকে নতুন পরিবেশের সঙ্গে অভ্যস্ত হতে কিছুটা সময় দিন।

স্কুল শুরু হলেই শিশুর ওপর পড়ার ভার চাপিয়ে দেবেন না। খেলার ছলে তাকে পড়ানোর চেষ্টা করুন। প্রথমে অল্প অল্প করে পড়ানোর চেষ্টা করুন। পড়তে না চাইলে জোরাজুরি করবেন না, যখন শিশুর মন চাইবে তখনই গল্পের করতে করতে পড়িয়ে ফেলবেন। আর প্রতিদিনের বাড়ির কাজগুলো তার নিজের হাতে করানোর চেষ্টা করুন, প্রয়োজনে সাহায্য করুন।

স্কুলের বিভিন্ন স্থান তাকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাতে পারেন। স্কুলের শিক্ষক ও সহপাঠীদের সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দিতে পারেন। এতে করে নতুন পরিবেশ ও নতুন মানুষজন সম্পর্কে তার অজানা থাকল না।

স্কুলে যাওয়ার আগেই সন্তানকে তার নাম, বাবা-মায়ের নাম, বাড়ির নাম্বার, ফোন নাম্বার মুখস্ত করিয়ে দিন। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কাজে লাগতে পারে। এছাড়াও ওর রোল নম্বর সেকশন মুখস্ত করিয়ে দিন।

স্কুল সময়ের বেশ কিছু আগেই শিশুকে ঘুম থেকে ডেকে তুলবেন। তাড়াহুড়ো বা বকাবকি করবেন। সকালে স্কুল থাকলে বাচ্চারা ঘুম থেকে উঠতে গড়িমসি, বাহানা এমনকি কান্নাকাটি করে। এজন্য তাকে রাতে তাড়াতাড়ি ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করবেন। তাকে কায়দা-কানুন করে ঘুম থেকে তুলুন। আর স্কুলের সময়সূচি মাথায় রেখে রওনা দিন। যাতে ক্লাস শুরু হওয়ার অন্তত পনেরো থেকে বিশ মিনিট আগে পৌঁছানো যায়। এতে শিশু ক্লান্ত হবে না।

কোনো কারণে সকালে উঠে স্কুলে যেতে না চাইলে রাগারাগি না করে ভালো করে বুঝান। কেন যেতে ইচ্ছে করছে না, শরীর খারাপ লাগছে কিনা জেনে নিন।

স্কুলে শুরুর দিকের পারফরমেন্স খুব মন দিয়ে খেয়াল করুন। স্কুলে যাতে ভালো করতে পারে, সেদিকে প্রণোদনা দিন। ভালো করলে অনেক প্রশংসা করুন, উপহার দিন। খারাপ করলে বুঝিয়ে বলুন যে তার জন্য ভালো করা জরুরি।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭