ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানের ‘নতুন সোলাইমানি’ কেমন যোদ্ধা?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/01/2020


Thumbnail

ইরানের আল কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানির মৃত্যুর পর তার পদে বসেছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল কায়ানি। গতকাল সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। কৌশলের দিক থেকে সোলাইমানিকে ভাবা হতো বিশ্বের অন্যতম সেরা সমর নায়ক। তার জায়গাটাতেই বসলেন ইসমাইল কায়ানি। সারা বিশ্বের চোখ এখন সেই পদটিকে ঘিরে, সেই গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটাতে কেন বেছে নেওয়া হলো তাকে? কেমন যোদ্ধা তিনি? সমরকৌশলেই বা কতটুকু বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে পারবেন কায়ানি? বিশ্বজুড়েই এখন ঘুরছে এই প্রশ্নগুলো।

সোলাইমানি গুপ্তহত্যার শিকার হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তার উত্তরসূরি হিসেবে কিয়ানির নাম ঘোষণা করেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সোলাইমানির সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে কায়ানির।

ইরানের ছায়া কমান্ডার হিসেবে খ্যাত সোলাইমানির অধীন আল-কুদস ফোর্স মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে তেহরানের প্রভাব বিস্তারে সহায়তা করেছেন। ছায়াবাহিনীর এক ব্যাপক নেটওয়ার্কও তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
সোলাইমানির দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা হলেন কায়ানি। কুদস বাহিনীর প্রধান হিসেবে সোলাইমানি ইরানের পশ্চিমের দেশগুলোতে কাজ করতেন। আর কায়ানি ছিলেন উত্তরাঞ্চলের দায়িত্বে। সেখানে মাদক পাচার রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। এছাড়া আফগানিস্তানে তালেবানবিরোধী যুদ্ধে নর্থ অ্যালায়েন্সকে সহায়তা করেছেন তিনি কায়ানি।

৬৩ বছর বয়সি ইসমাইল কায়ানির জন্ম ইরানের মাসাদ শহরে। ইরানের দ্বিতীয় জনবহুল এই শহরটি শিয়া মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান। জেনারেল সোলাইমানির মৃত্যুর পর কুদস বাহিনীর দায়িত্ব নিয়েই ইসমাইল কায়ানি বলেছেন, ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহ চান আমরা শহীদ সোলাইমানির হয়ে প্রতিশোধ নিই। নিশ্চিতভাবেই তা করা হবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সোলাইমানির অভাব পূরণ করার যোগ্যতা কায়ানির রয়েছে। সমর কৌশল নির্ধারণে তার রয়েছে ৪০ বছরের অভিজ্ঞতা। ১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামিক রেভোল্যুশন গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) গঠন করা হয়। এর পরের বছরই অর্থাৎ ১৯৮০ সালে এই বাহিনীতে যোগ দেন কায়ানি।

যেই ইরান-ইরাক যুদ্ধকে কাসেম সোলাইমানির ক্যারিয়ারে টার্নিং পয়েন্ট ভাবা হয়, সেখানে কায়ানিরও ছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত চলা ওই যুদ্ধে আফগানিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান সংলগ্ন সীমান্তে কাজ করেছিলেন কায়ানি। 

ইরানি বিপ্লবী গার্ডস বিশেষজ্ঞ আলী আলফোনেহ বলেন, ১৯৮২ সালের মার্চে ইরান-ইরাক যুদ্ধের সম্মুখসারিতে সোলাইমানির সঙ্গে বন্ধুত্ব ঘটে কায়ানির। যুদ্ধের ভেতর দিয়ে তাদের এই বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল।
২০১৫ সালে ইরানের সংবাদ সংস্থা ইরনাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কায়ানি বলেন, আমরা যুদ্ধবন্ধু। যুদ্ধ আমাদের বন্ধুত্ব তৈরি করে দিয়েছিল। ওই কঠিন সময়ে যাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়েছিল, তা ছিল অনেক গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী।

আলফোনেহ বলেন, যুদ্ধের সময় কিয়ানি তখনকার প্রেসিডেন্ট খামেনির সঙ্গে দেখা করেন। যুদ্ধের পর বিপ্লবী গার্ডসের স্থলবাহিনীর উপপ্রধানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল তাকে।

কায়ানি ঠিক কবে আল কুদস ফোর্সে যোগ দিয়েছেন, তা নিয়ে দু’রকম তথ্য পাওয়া যায়। ইরনা বলছে, ১৯৯৭ সালে তিনি এই বাহিনীর উপপ্রধানের দায়িত্ব পান কায়ানি। কিন্তু সুইডেনভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মায়সাম বেহরাভেসের মতে, ২০০৭ সালের পরে কায়ানিকে কুদস ফোর্সে যুক্ত করা হয়েছিল।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭