ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মিয়ানমারকে বাঁচাতে পারলো না চীন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 23/01/2020


Thumbnail

মিয়ানমারকে রক্ষা করতে পারলো না চীন। বিশ্বের হাতে গোনা যে ক’টি দেশ প্রকাশ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলে চীন তাদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে। সেনা শাসন, রোহিঙ্গা নিধন প্রতিটি পর্যায়েই মিয়ানমারের প্রতি সমর্থন দিয়ে গেছে বেইজিং। বলা হয়, চীনের এই অবিরাম সমর্থনের কারণেই আন্তর্জাতিক সব আইন-কানুনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করতে পেরেছে মিয়ানমার।

এবার যখন গাম্বিয়ার করা মামলায় আদালতের কাঠগড়ায় মিয়ানমার, তখনও ভাবা হচ্ছিল যে, প্রভাব খাটিয়ে মিয়ানমারকে বাঁচিয়ে দেবে ‘বড় ভাই’ চীন। আদালতের অন্তর্বর্তী আদেশের দিন কয়েক আগে চীনা প্রেসিডেন্টের ঐতিহাসিক মিয়ানমার সফর সেই শঙ্কাই জাগাচ্ছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) আজকের বক্তব্য এবং আদেশ আপাতত ন্যায় বিচারের আভাসই দিচ্ছে।

চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এ সপ্তাহেই মিয়ানমার সফর করেছেন। এই সফরে দু’দেশের মধ্যে ৩৩টি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। যেই রাখাইন রাজ্যে ঘটে যাওয়া গণহত্যা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে, সেখানেও গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে চীন। অথচ রাজ্যের রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় একটি কথাও বলেননি চীনা প্রেসিডেন্ট। মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি ঘোষণা করেছেন যে পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত চীনের পাশে থাকবে মিয়ানমার। সু চি হয়তো আশা করেছিলেন, চীনের সঙ্গে এই বন্ধুত্বের ওপর ভর করেই পাড় পেয়ে যাবেন তিনি। কিন্তু সু চির আশা আদালত আজ এক তুড়িতে উড়িয়ে দিয়েছেন।

মিয়ানমারের আবেদন এক বাক্যে খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। আইসিজের বিচারক প্যানেলের প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুল কায়ি আহমেদ ইউসুফ স্পষ্ট করেই বলেছেন যে, রাখাইনে যা হয়েছে তাতে গণহত্যার উদ্দেশ্য প্রমাণিত। এর দায় মিয়ানমার কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। আদালতের আজকের বক্তব্য গাম্বিয়া তথা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য এক বিশাল জয়।

আমাদের কারোরই অজানা নয় যে, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে শক্তিধর দেশগুলোর নির্দেশনাতেই চলে সবকিছু। এমনটাও দেখা যায় যে, পর্দার আড়ালের কূটনীতিতে ঘুরে যায় বিচারের রায়। রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচারের ক্ষেত্রেও তেমনটা ঘটবে কিনা সে প্রশ্ন উঠছিল শুরু থেকেই। বিশেষ করে, বিচারক প্যানেলের ভাইস প্রেসিডেন্ট চীনের নাগরিক হওয়ায় অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করে বলছিলেন যে, হয়তো আন্তর্জাতিক বিচার আদালত আজ পক্ষপাতমূলক আদেশ জারি করবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা হয়নি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, গাম্বিয়া যে মামলাটি করেছে সেটার নিষ্পত্তি হতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে, আদালত নিরপেক্ষভাবেই কাজ করছে। আজকের অন্তবর্তীকালীন আদেশে মিয়ানমারের পরাজয় স্পষ্ট। কিন্তু চূড়ান্ত রায় আসতে এখনও অনেকটা পথ বাকি। শেষ পর্যন্ত প্রভাবমুক্ত থেকে আদালত নিরপেক্ষ রায় দেবেন কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭