ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

চীনের উহান রাজ্যে আটকা পড়েছে ৫০০ বাংলাদেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 25/01/2020


Thumbnail

চীনের হুবেই প্রদেশের উহান রাজ্যে ‘জন্ম’ নেওয়া করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৪১ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রোগটি নিয়েন্ত্রনে আনতে এর মধ্যেই শহরটির যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়াও ঘর থেকে মানুষকে বাইরে বের হতেও নিষেধ করা হয়েছে। ফলে সেখানে ৫০০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি আটকা পড়েছেন। যারা বাংলাদেশ সরকারকে তাদের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়েছে।

উহানে থাকা বাংলাদেশিরা জানিয়েছেন, সেখানকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে ৫০০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি। উহান থেকে বাস, ট্রেন ও বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ মানুষ ঘরে থাকছেন। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় খাবার সংকটেরও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে কোনও বাংলাদেশি আক্রন্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। অন্য দেশের দূতাবাস নিজ দেশের ছাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে কেউ খোঁজ-খবর নেয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা।

হুবেই ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে মেকানিক্যাল অ্যান্ড অটোমেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ছেন রাকিবুল তূর্য। তিনি বলেন, ‘আমাদের ইউনিভার্সিটিতে বাঙালি আছি আমরা প্রায় ২০০ জন। শীতকালীন ছুটি থাকায় ৬০-৭০ জন দেশে গেছে আগেই। পুরো শহর বিচ্ছিন্ন হওয়ায় আমরা সবাই বন্দি দশায় আছি। নিজেদের সেফভাবে চলতে হচ্ছে। আর ইউনিভার্সিটি থেকে যথেষ্ট হেল্প করছে। বাংলাদেশি কেউ আক্রান্ত হয়েছে, এখনও এমন খবর পাওয়া যায়নি। সিটি লকডাউনের জন্য খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবাই ভয়ে আছি। কারণ ভাইরাস খুব দ্রুত স্প্রেড হচ্ছে। আমাদের আশেপাশে ভারত, শ্রীলংকার যারা আছেন তারা জানিয়েছেন, উহানে তাদের যে নাগরিক রয়েছেন চেকআপ করিয়ে তাদের দেশে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু আমাদের দূতাবাস এখনও কোনও খবর নেয়নি। কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানতে পারিনি। আমরা চাইলেও এখন দেশে ফিরে যেতে পারছি না।’

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক ছাত্র হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সবাই উৎকণ্ঠায় আছি। দোকানপাট বন্ধ, ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। দূতাবাস থেকে এখনও কেউ যোগাযোগ করেনি। আমরা দ্রুত দেশে ফিরতে চাই।’

হুবেই ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির শিক্ষার্থী শাফায়াত উল্লাহ খান বলেন, ‘কিছু কিছু সংবাদে বলা হচ্ছে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে আমাদের খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দূতাবাস থেকে আমাদের কোনও খোঁজ নেওয়া হয়নি।’

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইলিয়াস আহমেদ বলেন, ‘বাজার, দোকান, সুপারশপ বন্ধ। ভ্যাকেশন টাইম, ক্যান্টিনও বন্ধ। আমরা বাঙালিরা রান্না করে খাই। যাদের যা মজুত আছে শেষ হয়ে গেলে খুবই খারাপ পরিস্থিতিতে পড়তে হবে। খুব শঙ্কার মধ্যে সময় পার করছি। আমরা সবাই রুমে বন্দি।’

আরেক শিক্ষার্থী মাহিন ইসলাম বলেন, ‘বাজারে খাবার-দাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা চাই বাংলাদেশ অ্যাম্বাসি থেকে আমাদের খোঁজখবর নেওয়া হোক। সরকারের প্রতি আমার অনুরোধ এখানে আমরা যারা বাংলাদেশিরা আছি তারা আক্রান্ত হওয়ার আগেই ব্যবস্থা নিলে ভালো হয়। সবাইকে নিরাপদে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।’

চীনে বাংলাদেশি দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন মাসুদুর রহমান টেলিফোনে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি কেউ আক্রান্ত হয়নি।  শিক্ষার্থীদের অনেকের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে। সেখানে খাবারের একটা সংকট আছে। আমরা চীন সরকারকে বলেছি তারা যেন এ বিষয়ে নজর দেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘চীন সরকারের কিছু বিধিনিষেধ আছে। সবকিছুতে তাদের ওপর নির্ভরশীল। আমরা প্রতিনিয়ত দেশে আপডেট তথ্য পাঠাচ্ছি। এই মুহূর্তে বাংলাদেশি কাউকেই দেশে পাঠানোর কোনও সুযোগ নেই। কারণ চীন সব বিমানবন্দরও বন্ধ রেখেছে।’

বাংলা ইনসাইডার/এসএস



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭