ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বিশ্বের প্রাণঘাতী যত ভাইরাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 27/01/2020


Thumbnail

বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সময় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে প্রাণঘাতী সব ভাইরাস। বার্ড ফ্লু, সোয়াইন ফ্লু বা নিপাহ ভাইরাসের মতো এবার বিশ্ববাসীর সামনে আতঙ্ক নিয়ে হাজির হয়েছে করোনা ভাইরাস। আতঙ্কে রীতিমতো কাঁপছে পুরোবিশ্ব। এতে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। চীনের গণ্ডি পেরিয়ে এই রোগ কখন যে বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে, তা নিয়ে সন্দেহ সবার।

এই করোনা ভাইরাসের মতোই বিশ্বে দাপট চালানো আরও বেশকিছু ভাইরাসের আদ্যপান্ত নিয়ে থাকছে আমাদের আজকের আয়োজন-

বার্ড ফ্লু (এইচ৫এন১)

পৃথিবীর ইতিহাসে সব ফ্লু বা ভাইরাসজাতীয় রোগবালাইগুলোর মাঝে বার্ড ফ্লুয়ের কথা আমাদের সবার মনে থাকবে একটু বেশিই। ১৯৯৭ সালে হংকংয়ে এইচ৫এন১ ভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ২০০৩, ২০০৬, ২০০৭ ও ২০০৮ সালে এশিয়ার আরো কয়েকটি দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়। ২০০৩ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৬৩০ জন বার্ড ফ্লুতে সংক্রমিত হয়েছেন এবং ৩৭৫ জন মারা গেছেন।

নিপাহ ভাইরাস

১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ার পাংকর দ্বীপের ছোট্ট শহর কামপুং তেলুক নিপাহতে নতুন একটি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হয়। পরের বছর ওই শহরের নামে ভাইরাসটির নামকরণ হয় নিপাহ। এই ভাইরাসে আক্রান্তদের মৃত্যুর আশঙ্কা ৫৪ শতাংশ। ২০১৮ সালে ভারতের কেরালায় এই ভাইরাস সংক্রমণে অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৩ সালে বাংলাদেশে নিপাহ ভাইরাসে অন্তত ১০ জন মারা যান৷

সার্স

এই ভাইরাসের প্রথম প্রাদুর্ভাব হয় চীনে। সিভিয়ার একিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (সার্স) বেশ মারাত্মভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ২০০২ ও ২০০৪ সালে এশিয়ার কয়েকটি দেশে সার্স ভাইরাস মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। আট হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয় এই ভাইরাসে। এতে মৃত্যু হয় অন্তত ৭৭৪ জনের। ভয়াবহ শ্বাসকষ্ট হয় ভাইরাসটি শরীরে প্রবেশ করলে। তবে ২০০৪ সালের পর এই ভাইরাসে প্রাদুর্ভাবের খবর আর পাওয়া যায়নি।

সোয়াইন ফ্লু

শূকরের ফ্লুর সঙ্গে লক্ষণ মিল থাকায় একে সোয়াইন ফ্লু নাম দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে প্রথম বিশ্ব জুড়ে এইচ১এন১ ভাইরাসের প্রকোপ দেখা যায়। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১১ থেকে ২১ শতাংশ মানুষ এই ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছেন। দেড় লাখ থেকে প্রায় ছয়লাখ মানুষের মৃত্যু হয় এই ফ্লুতে৷ ঢাকায় নতুন বছরে সোয়াইন ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার খবর শোনা গেলেও আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা।

মার্স (মিডলইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম)

২০১২ সালে প্রথম সৌদি আরবে এই ভাইরাসের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। এটি সার্স ভাইরাস গোত্রেরই একটি ভাইরাস। সৌদিতে মার্সে আক্রান্ত প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। উট থেকে এই ভাইরাসটি মানবদেহে ছড়ায় বলে ধারণা করা হয়। এরপর হাঁচি, কাশি ও সংস্পর্শের মাধ্যমে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাসটি।

অ্যানথ্রাক্স

অ্যানথ্রাক্স গবাদিপশুর একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ যা ব্যাসিলাস অ্যান্থ্রাসিস (Bacillus anthracis) নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়ে থাকে। ব্যাসিলাস অ্যান্থ্রাসিস ব্যাকটেরিয়া সুপ্ত অবস্থায় দীর্ঘদিন (শতাব্দীর পর শতাব্দী) বেঁচে থাকতে পারে। অ্যানথ্রাক্স বা তড়কা রোগের ইতিহাস অনেক পুরনো। খ্রিষ্টপূর্ব ১৪৯১ সালেও মিসরে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ছিল বলে জানা যায়। শুধু মিসর নয়, গ্রিস, রোম এমনকি ভারতবর্ষেও এ রোগের প্রাদুর্ভাব ছিল। সপ্তদশ শতাব্দীর শুরুতে ইউরোপে এ রোগ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে আমেরিকায় ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ার রেকর্ড রয়েছে। এমনকি মাত্র তিন দশক আগে ১৯৭৮-৮০ সালে জিম্বাবুয়েতে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছিল। এতে শুধু পশু নয়, প্রায় দশ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়, মারা যায় প্রায় ১৫১ জন।

ইবোলা

ইতিমধ্যে এই ভাইরাস নিয়ে বহু আলোচনা ও খবর হয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে, দফায় দফায় কয়েক বছরের জন্যে ইবোলার মহামারী দেখা দেবে পৃথিবীতে। বিশ্বের নির্দিষ্ট কিছু অংশে বার বার দেখা দিচ্ছে এই ভাইরাসের আগ্রাসন। সাধারণত আফ্রিকায় মহামারী আকারে দেখা যায়। কিন্তু ইউরোপসহ আমেরিকা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আফ্রিকায় এ রোগে আক্রান্তদের মৃত্যুহার ৯০ শতাংশের মতো। যখন তখন ইবোলা আরও ভয়ংকরভাবে আঘাত হানতে পারে।

বাংলা ইনসাইডার



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭