ইনসাইড পলিটিক্স

তারেককে অপ্রয়োজনীয় মানছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 27/01/2020


Thumbnail

এবার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রচারণায় খুব ভালো করেছে বিএনপি। সরকারি দলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে তারা। কোথাও কোথাও সরকারি দলের চেয়েও প্রচার প্রচারণায় এগিয়েও আছে তারা। বিএনপির একাধিক নেতা মনে করছেন, প্রচার প্রচারণায় বিএনপির এগিয়ে থাকার একটি বড় কারণ হলো এবার নির্বাচন প্রচারণার দায়িত্ব তারেকের হাতে না থাকা।

বিএনপির এক নেতা আলাপকালে বলেন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে বিএনপি প্রচার থেকে দূরে গিয়েছিল তারেক রহমানের নির্বুদ্ধিতা, অপকৌশল আর ষড়ষন্ত্রের রাজনীতির কারণে। আর এবার নির্বাচনে যেহেতু তারেক জিয়া থেকে দূরে আছেন সেজন্য বিএনপির প্রচারণা ঠিকভাবে হচ্ছে।

তারেকের আধিপত্য শুরুর পর বিএনপি এবারই প্রথম তার প্রভাবমুক্ত ভাবে কাজ করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। আর এই কাজের মাধ্যমে তারা প্রমাণ করছেন তারেক বিএনপির জন্য একটি আপদ (বারডেন)। গতকাল কুটনৈতিকদের সঙ্গে আলাপ করেছে বিএনপি। সেখানে পশ্চিমা দেশের একজন কুটনৈতিক বলেছেন, এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপির কিছু ইতিবাচক দিক তারা লক্ষ্য করেছেন। তার মধ্যে একটি হলো নির্বাচনে তারা দূর্ণীতির দায়ে দণ্ডিত এবং লন্ডনে পলাতক, যার বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের সঙ্গে এবং আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছে এমন একজন নেতাকে তার নির্বাচনী প্রচারণা থেকে দূরে রাখতে পেরেছেন। এর আগেও পশ্চিমা দেশগুলো তারেককে বিএনপির রাজনীতি থেকে দূরে রাখার পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু সে সময় বিএনপি সেই পরামর্শটি শোনেনি।

দ্বিতীয় যে বিষয়টি বিএনপির ইতিবাচক বলে পশ্চিমা কুটনৈতিকরা বলছেন তা হলো ধর্মান্ধ মৌলবাদী শক্তি জামায়াতে ইসলামকে তারা নির্বাচনী প্রচারণায় সম্পৃক্ত করেনি। এই প্রশংসা যখন করা হয় তখন এ বৈঠকে বিএনপির একজন নেতা বলেন দুটি একই সূত্রে গাঁথা। তারেক জিয়া নির্বাচন পরিচালনায় সম্পৃক্ত নয় বলেই জামাতকে এই নির্বাচনী প্রচারণায় সম্পৃক্ত করা হয়নি। বিএনপির নেতারাই এখন মানছেন তারেক এখন বিএনপিতে অপ্রয়োজনীয়। তারেকের নির্দেশনা ছাড়াই বিএনপি অনেক ভালো চলতে পারে।

বিএনপির একজন নেতা বলছিলেন, ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর তারেক জিয়া সকালে এক ধরনের নির্দেশনা দিতেন, দুপুরে আরেক ধরনের নির্দেশনা দিতেন আর রাতের বেলা দুইটি নির্দেশনাই বাতিল করে দিতেন। দলের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করতেন আর এক নেতাকে আরেক নেতার পিছনে লাগিয়ে দিতেন।

এবার বি্এনপি শুরু থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবার নির্বাচনে তারা তারেক জিয়ার কথা শুনবেন না। নির্বাচনে তারা এমনিও হারবেন তবে নির্বাচনে তারা একটি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এই নির্বাচনে বিএনপির অধিকাংশ নেতাই নিয়েছিলেন ঢাকায় তাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করার নির্বাচন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন প্রভাবশালী সদস্য আলাপকালে স্বীকার করেছেন এই নির্বাচনে বিএনপি ইতোমধ্যেই অনেক কিছু অর্জন করেছে। তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেনের মতো দুজন তরুণ নেতাকে তারা পেয়েছেন। যারা দীর্ঘদিন ধরে দলকে সার্ভিস দিতে পারবেন। তারা ঢাকায় দলের নেতা কর্মীদেরকে চাঙ্গা করতে পেরেছেন। প্রত্যেকটা ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে তারা প্রার্থী দিতে পেরেছেন। এর ফলে নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেনো তারা সক্রিয় থাকবেন। নেতৃবৃন্দের মধ্যে যে বিভক্তি ছিল তা কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন।

বিএনপির ঐ নেতা আরো বলেন, তারেকের কৌশল ছিল বিএনপির এক নেতার সঙ্গে আরেক নেতার মধ্যে বিভক্তি তৈরি করে দলকে বিভ্রান্ত করা।

বিএনপির সকল নেতাই স্বীকার করেছেন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তাদের সবচেয়ে বড় লাভ হলো তারেকের রাহুগ্রাস থেকে তারা বিএনপিকে মুক্ত করতে পেরেছেন। এই নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেনো তারেক যদি বিএনপিতে অপাংক্তেও হন তাহলে নিশ্চয় বিএনপি এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন দলটির অধিকাংশ নেতারাই।

বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭