ইনসাইড থট

নবীন ইশরাকের উচ্চাভিলাষী ঘোষণা; বিশ্বমানের মেট্রোপলিটন ঢাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 29/01/2020


Thumbnail

উত্তরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুই  মেয়র প্রার্থীর  পর এবার দক্ষিণের বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন এবার ‘‘বিশ্বমানের ঢাকা’’ করার ঘোষণা দিয়েছেন। ইংরেজিতে উল্লেখ করেছেন ‘World Class Dhaka Metropolis’ কথায় মনে হচ্ছে বাকী দুই মেয়র প্রার্থীকে ছাড়িয়ে গেলো। ইশরাক হোসেন রাজনীতিতে নবাগত। বিএনপির মত বড়দলের মেয়র প্রার্থী হ্ওয়ার পেছনে তার বড় যোগ্যতা হচ্ছেন তিনি অবিভক্ত ঢাকার প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে। ২০০২ সালে সাদেক হোসেন খোকা যখন মেয়র নির্বাচন করেছিলেন তখন আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি। আর তখন প্রতীকও দলীয় ছিল না। এবার অবশ্য ধানের শীষের ভোটযুদ্ধ হবে নৗকার সাথে। আর ইশরাক হোসেনকে লড়তে হচ্ছে ফজলে নূর তাপসের সাথে যিনি এ পর্যন্ত তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। আর যার বাবা বাংলাদেশের রাজনীতির এক উজ্জল নক্ষত্র শেখ ফজলুল হক মনি। যাকে ১৫ আগস্টে হত্যা করা হয়েছিল, সেদিন মাকেও হারিয়েছিলেন ফজলে নূর তাপস।

ইশরাক হোসেনের প্রধান প্রতিদ্বন্ধী ফজলে নূর তাপস এখনো নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন নি। কিন্তু তিনি বিজয়ী হলে দায়িত্ব নেয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ঢাকার পরিবর্তনের সূচনা করার আশ্বাস দিয়ে পাঁচটি প্রধান কাজের কথা বলছেন। আর নিজের নির্বাচনী ইশতেহারে ইশরাক হোসেন স্বল্প মেয়াদে ১০০ দিনের অগ্রাধিকার কর্মসূচী গ্রহনের কথা বলেছেন। তার আছে ইশতেহারে আছে মধ্যেও দীর্ঘ মেয়াদের পরিকল্পনার কথাই। ইশতেহারে তিনি বলেছেন ‘‘গনতান্ত্রিক ও সামাজিক মূল্যবোধে অনুপ্রাণিত হয়ে ঐতিহাসিক ঢাকার ছেলে হিসেবে আমি ইশরাক হোসেন ঐতিহ্য ও আধূনিকতার সম্মিলনে যানজট-দূষণমুক্ত,পরিবেশসম্মত,ভারসাম্যমূলক সুষম উন্নয়নের মাধ্যমে একটি বিশ্বমানের ঢাকা World Class Dhaka Metropolis গড়ার পরিকল্পনা তুলে ধরছি”।

গনশুনানীর মাধ্যমে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ, কৃষক মার্কেট, নাইট মার্কেট করার কথা বলেছেন ইশরাক হোসেন। তার ইশতেহারে যথারীতি আছে যানজট নিরসনের কথা। ঢাকায় এখন মেট্রোরেলের কাজ চলছে মাথার উপর দিয়ে। বিএনপির মেয়র প্রার্থী অবশ্য ‘‘আন্ডারগ্রাউন্ড টানেলের’’ কথা বলেছেন। অন্য দুজন মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম এ তাবিথ আউয়ালের মত ইলেকট্রিক বাস চালানোর পাশাপাশি ইশরাক হোসেন স্মার্ট বাস স্টেশনের কথাও বলেছেন।

ডেঙ্গু মোকাবেলায় আতিকুল ইসলামের মত ইন্ট্রিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্টের কথাও বলেছেন তিনি। আসলে এবারের মেয়র নির্বাচনের প্রধান ফ্যাক্টরই হচ্ছে ঢাকার অসহনীয় যানজট, মশা নিধন, রাজধানীর বায়ুদূষন শব্দদূষণরোধ আর রাজধানীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কোনো মেয়র প্রার্থীরই উপায় নাই এগুলোকে এড়িয়ে যাওয়া। প্রশ্ন হলো কে এইসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভালো করবেন। এবারের নির্বাচন হচ্ছে দলীয় প্রতিকে। এখন আওয়ামী লীগের সরকার দেশ পরিচালনা করছে। আর মেয়রদেরকে তাদের দায়িত্বে থাকা নাগরিক সেবাগুলো নিশ্চিত করতে ভর করতে হয় সরকারের আর্থিক অনুদান আর ইন্নয়ন প্রকল্পে বিদেশী অর্থ সহায়তার ওপর। আবার অন্যরকম অভিজ্ঞতা আছে। যেমন রাজধানী ঢাকার সরাসরি ভোটে নির্বাচত প্রথম দুই মেয়র মোহাম্মদ হানিফ এবং সাদেক হোসেন খোকা (দুজনই প্রয়াত হওয়ায় তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত আমরা) দুজনই মেয়র হিসেবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সরকারের সাথে কাজ করেছেন। কিন্তু রাজধানী ঢাকার নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে যেভাবে এই দুই মেয়রকে হিমশিম খেতে হয়েছে তা খুব কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা আমার আছে।

এখন অবশ্য সময়ের সাথে পাল্টেছে অনেক কিছুই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে উদ্যোগী হয়ে ঢাকার যানজট নিরসনে মেট্রোরেলের প্রকল্প নিয়ে তাকে অনেকটাই দৃশ্যমান করেছেন। মেট্রোরেলের প্রথমধাপ উত্তরা থেকে মতিঝিল উত্তর দক্ষিণ দুই সিটি করপোরেশনকেই ছুঁয়ে যাচ্ছে। তাই মেয়র নির্বাচনে এসব উন্নয়ন প্রকল্পের সুবিধা আ্ওয়ামী লীগের প্রার্থীরা পাবেন নাকি উন্নয়ন পেয়েও সুশাসনের অভাববোধকারী রাজধানীবাসী বিরোধিদের বেছে নিবে সেটা দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে ১ ফেব্রুয়ারি ভোটের রাত পর্যন্ত। তার আগে এখন পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণে দুটো নির্বাচনী সংঘর্ষের একটি হয়েছে ইশরাকের বাড়ির সামনেই। আর নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর ইশরাক হোসেনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার চার্জ গঠন হয়েছে আদালতে। সেসব সাহসের সাথেই মোকাবেলা করছেন ইশরাক হোসেন। চার প্রধান মেয়র প্রার্থীর মধ্যে নবীন ও বয়সে তরুণ ইশরাক হোসেন শেষ পর্যন্ত তারুণ্যের শক্তি দেখাবে, সেই প্রত্যাশা।

বাংলা ইনসাইডার

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭