ইনসাইড বাংলাদেশ

উন্নয়ন সহযোগীরা টাকা কমাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 03/07/2017


Thumbnail

দেশে বেসরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বিদেশী অনুদানের পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই এদেশের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো বিভিন্ন খাতে বিদেশি সহায়তা পেয়ে আসছিলো। কিন্তু এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আগের বছরের চেয়ে ৮৫০ কোটি টাকার কম অনুদান এসেছে।

তাছাড়া এনজিওগুলোর অর্ধশত প্রকল্পও কমেছে। বর্তমানে শুধুমাত্র এনজিওর অনুদান বা প্রকল্প কমছে তাই নয়, বরং আন্তর্জাতিক অনেক দাতা সংস্থাই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ করে নতুন করে আর অর্থায়ন করছে না। আবার যারা অর্থায়ন করতে আসছে তারা অনেক যাচাই-বাছাই করছে। সব মিলিয়ে সঙ্কটে পড়ছে বাংলাদেশের এনজিও খাত।

প্রতিবছর স্বাস্থ্য খাতে প্রচারণার জন্য বিশ্বব্যাংক যে আর্থিক সহায়তা দিতো, তা এ বছর স্থগিত রাখা হয়েছে। জনসচেতনতা মূলক কাজের জন্য পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় একাধিক টেন্ডার ডেকেছিল তা শেষ মূহুর্তে বাতিল করে দেয়া হয়। অন্যদিকে, ঢাকা শহরে ৩০ ভাগ এলাকায় ডিজিটাল মিটার করার কথা ছিল, কিন্তু এ কাজটিও বিশ্ব ব্যাংক স্থগিত করে রেখেছে। এছাড়া ইন্টারন্যাশনাল মনিটরিং ফান্ড অনলাইন ভ্যাটের আইন কার্জকরের জন্য যে টাকা দিতে চেয়েছিল তা এখন তাঁরা দিবে না।

এদিকে, এনজিওগুলোর অর্ধশত প্রকল্পও কমেছে। বর্তমানে শুধুমাত্র এনজিওর অনুদান বা প্রকল্প কমছে তাই নয় বরং আন্তর্জাতিক অনেক দাতা সংস্থাই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ করে নতুন করে আর অর্থায়ন করছে না। আবার যারা অর্থায়ন করতে আসছে তারা অনেক যাচাই-বাছাই করছে। সব মিলিয়ে সঙ্কটে পড়েছে বাংলাদেশের এনজিও খাত।

এ সব কিছুর পিছে কারণ তিনটি। প্রথমত, জাতীয় নির্বাচন সামনে। এসময়ে দাতা সংস্থারা বড় ধরনের কোন সাহায্য-সহযোগিতা দিতে চায় না।

এসবের কারনের দেশ, সরকার যততা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তার চেয়ে বেশি হচ্ছে এনজিওগুলো। বর্তমানে এদেশে এনজিওর সঠিক সংখ্যা কতো তার কোনো সঠিক হিসাব নেই। তবে অধিকাংশ এনজিওই নিষ্ক্রিয়। দেশে সক্রিয় এনজিওগুলো সাধারণত সমাজসেবা অধিদফতর, মহিলাবিষয়ক অধিদফতর, সমবায় অধিদফতর, রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানি ও মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটিসহ বিভিন্ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে নিবন্ধিত।

তবে এনজিও ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে বিদেশি সহায়তাপুষ্ট প্রায় আড়াই হাজার এনজিও রয়েছে। তার মধ্যে ২৫০টি বিদেশি এবং ২ হাজার ২৪৪টি দেশি এনজিও। তাছাড়া গত ৭ বছরে আন্তর্জাতিক সহায়তা পেতো এমন ৫শ’ এনজিওর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এই সহায়তা না পাওয়ার কারণে অনেকগুলো সংস্থা বন্ধ হয়ে গেছে।

এর পেছনে আরও একটি বড় কারণ বিশ্বে যুদ্ধ ও সংঘাতপূর্ণ অঞ্চল বেড়ে যাওয়ায়। বর্তমানে সিরিয়া, আফ্রিকার মত দেশেগুলোর দিকে দাতা সংস্থারা নজর দিচ্ছে। দেশগুলোতে শরণার্থীর সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় দাতা সংস্থাগুলো সরাসরি সহায়তা দিচ্ছে সেখানে। আবার বাংলাদেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাওয়ায় বিশেষ করে মধ্যম আয়ের দেশের দিকে অগ্রগতির কারণেও দাতা সংস্থাগুলো অর্থায়ন কমাচ্ছে।

গতবছর নতুন করে বৈদেশিক অনুদান রেগুলেশন আইন ২০১৬ করা হয়েছে। ওই আইনের কয়েকটি ধারা নিয়েও এনজিওগুলোর আপত্তি আছে। সেটি বাস্তবায়িত হলে অর্থ পেতে আরো সমস্যা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত অর্থবছরে এনজিও খাতে ৪ হাজার ৯৩২ কোটি টাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকার সহায়তা এসেছে স্বাস্থ্য খাতে। চলতি অর্থবছরেও অর্থ আসার পরিমাণ সেভাবে বাড়েনি। এমনকি প্রকল্প অনুমোদনের সংখ্যাও কম। সব মিলিয়ে অনেক এনজিওর অবস্থাই এখন আর আগের মতো ভালো নয়। মূলত অর্থায়নের অভাবেই ছোট ছোট অনেক এনজিও নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে।

যেখানে দেশের উন্নয়ে নিরব ভাবে বিপ্লব ঘটিয়ে গেছে এ সব এনজিওগুলো, সেখানে এই সহযোগিতা বন্ধ করে দিলে কি করে উন্নয়ন ঘটাবে এই সংস্থা গুলো?

বাংলা ইনসাইডার/আরএস




প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭