করোনাভাইরাস: কিছু ভুল ধারণা

চীনের করোনাভাইরাস এরই মধ্যে পৃথিবীর অনেক দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। চীনে মারা গেছে দেড় হাজারের বেশি লোক। মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। চীন স্বভাবতই এখন একপ্রকার অচলাবস্থা বিরাজ করছে। এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে করোনাভাইরাস নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য দেখা যাচ্ছে। এই ভাইরাস সম্পর্কে ভুল তথ্য প্রচার করছেন অনেকেই। করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত এই ভুল ধারণাগুলো দিনশেষে নাগরিক দুর্ভোগই বাড়াচ্ছে।

করোনাভাইরাস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্যগুলো সম্পর্কে টাইমস অব ইন্ডিয়া সম্প্রতি একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন এনেছে সবার সামনে। প্রতিবেদনের কিয়দংশ আপনাদের জন্য তুলে ধরা হলো-

সামুদ্রিক মাছ আসলেই ক্ষতিকর কি না

চীনের উহান প্রদেশ থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। উহান মূলত একটি বাণিজ্যিক এলাকা। এখানে প্রতিদিনই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসে ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে। বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ, খাসির মাংস, মুরগী ও স্ন্যাকস এর জন্য উহান বেশ প্রসিদ্ধ। করোনা ভাইরাসছড়িয়ে পড়ার পর অধিকাংশ ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ উহানের সামুদ্রিক মাছ কেনা-বেচা একেবারেই বন্ধ করে দিয়েছেন।

এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা বলছেন, সামুদ্রিক মাছের সঙ্গে করোনাভাইরাসের কোনো সম্পর্ক নেই। সামুদ্রিক মাছ খেলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তেমন কোনো আশঙ্কার কথা জানাননি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

করোনা ভাইরাস আসলেই প্রাণীর মাধ্যমে ছড়ায়?

সম্প্রতি চীনের কিছু ব্লগার বাদুরের স্যুপ খাওয়ার ভিডিও দিয়েছিলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এই ভিডিও দেখে অনেকেই নেতিবাচক মন্তব্য করে বলেন, বাদুরের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ায়। তাই প্রায় সবাই-ই মনে করেন যে এমন ভিডিও প্রচার করা উচিত হয়নি। এই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দেননি চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, করোনাভাইরাস প্রাণীর মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। যদিও এখনও কোনো প্রমাণ তারা দেখাতে পারেনি। এজন্য সবার সতর্কতার প্রয়োজন বলে মনে করে বিশেষজ্ঞরা।

পরে আলোচনায় আসে করোনা বিয়ার

চীনের একটি জনপ্রিয় বিয়ায়ের নাম ‘করোনা বিয়ার’। এই বিয়ার খেলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে অনেকে মনে করেন। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, ভাইরাস ও বিয়ারের নাম একই হওয়ার কারণে এমন বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। করোনা বিয়ারের সঙ্গে করোনা ভাইরাসের কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাননি এই চিকিৎসকরা।

রসুন খেলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ হয়?

রসুন খেলে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করা যায় বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে অনেকেই মন্তব্য করছেন। তবে চিকিৎসকরা এই ব্যাপরটির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন। তাদের মতে, বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধে রসুন আসলেই বেশ কার্যকর। তবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে রসুনের কোনো ভূমিকা নেই।

এই অবস্থায় যেভাবে মাংস খাওয়া উচিৎ

এখন বেশিরভাগই মনে করছেন, প্রাণীদের শরীরেও করোনাভাইরাস থাকতে পারে এবং প্রাণী থেকেই মানুষের দেহে এই ভাইরাস ছড়ায়। এই ব্যাপারে এখনও কোনো প্রমাণ পাননি চিকিৎসকরা। তারপরও যেকোনো মাংস ভালোভাবে সেদ্ধ করে খাওয়ার পরামর্শ দেন তারা।

এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কোনো ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, হাত ধোয়া, বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করা, বিশেষ করে সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত ব্যক্তিকে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

 

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ