ইনসাইড পলিটিক্স

খালেদার হাজার কোটি টাকাই কাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 20/02/2020


Thumbnail

বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে বিএনপির মধ্যে লুকোচুরি খেলা চলছে। বিএনপির নেতারা মুখে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই বলে চিৎকার চেচামেচি করলেও বাস্তবে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য তৎপরতা এবং উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। বরং তারা খালেদা জিয়অর মুক্তির বিষয়ে নাটক করে জলঘোলা করতে চাইছেন বলে মনে করছেন বিএনপির তৃণমূল নেতারা। তারেক জিয়াও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চায় না বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। মূলত বেগম জিয়ার পরিবার মুক্তি নিয়ে যে একটি প্রক্রিয়া শুরু করেছিল, সেই প্রক্রিয়া যখন পরিণতির দিকে যাবে সেই সময় তারেক পাশার দান উল্টে দিয়েছে। তিনি মুক্তির দীর্ঘপথ গ্রহণের পর দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন এখন হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

প্রশ্ন হলো খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপি তার পুত্র তারেক জিয়া কেন এই লুকোচুরি খেলছে? বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, বেগম খালেদা জিয়া দেশে বিদেশে প্রায় হাজার কোটি টাকা সম্পদের মালিক। বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পর এই সম্পদ কার দখলে যাবে তা নিয়েই টানাপোড়েন। সেই টানাপোড়েনের কারণেই খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখা হয়েছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, সৌদি আরবে বেগম খালেদা জিয়া প্রায় সাড়ে পাঁচশো কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ হিসেবে। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছে প্রায় আরো সাড়ে তিনশো কোটি টাকার সম্পদ। সিঙ্গাপুরে বেগম খালেদা জিয়ার নামে একশ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। মালেশিয়াতেও রয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার সম্পদ।

এছাড়াও দেশে বেগম খালেদা জিয়ার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ এনবিআরের হিসেব অনুযায়ী ১২০ কোটি টাকা। বেগম খালেদা জিয়ার এই সম্পদের মালিক কে হবেন তা নিয়ে বিএনপিতে এবং বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের মধ্যে বিতর্ক চলছে। তারেক জিয়া মনে করছেন, বেগম খালেদা জিয়া যদি মারা যান, তাহলে একমাত্র সন্তান হিসেবে (যেহেতু কোকো মারা গেছেন) এই সম্পদ দখলে যাবে তারেক জিয়ার এবং এই সম্পদ দখলের জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত কিংবা উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করার ব্যাপারে আগ্রহী নন তারেক জিয়া। তবে বেগম খালেদা জিয়া যদি জেল থেকে বের হতে পারেন তাহলে তিনি নিজের চিকিৎসার পাশাপাশি নিজের সম্পদের বিলিবণ্টনের ব্যবস্থা করবেন। বিশেষ করে প্রয়াত কোকোর দুই কন্যা এই সম্পদের একটি বড় অংশ পাবে বলে আভাস পাওয়া গেছে। এছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দার, তাঁর বোন সেলিনা ইসলামও এই সম্পদে ভাগ বসাবেন। আর এই কারণেই তাঁরা বেগম খালেদা জিয়াকে যেকোনভাবে মুক্ত করার চেষ্টা করছেন। বিএনপির একটি মহল মনে করছে, বেগম খালেদা জিয়ার যে সম্পদ, সেই সম্পদে দলীয় ভাগও রয়েছে। কাজেই বেগম খালেদা জিয়ার অবর্তমানে তাঁর টাকা দলীয় তহবিলেও ব্যবহৃত হতে পারে। একারণে তাঁরা মনে করছে যে, বেগম খালেদা জিয়া যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁর সম্পদের সুনির্দিষ্ট সুরাহা না দিবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁর জেলে থাকাই শ্রেয়।

তবে বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, বেগম খালেদা জিয়ার সম্পত্তি নিয়ে মূলত বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার এবং তারেক জিয়ার মধ্যে দ্বন্দ্বটা দৃশ্যমান হয়েছে। তারেক জিয়া পুরো সম্পত্তিটি নিজের কবজায় আনতে চান। বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার সাবেক একান্ত সচিব মোসাদ্দেক আলী ফালুর ব্যবসায়ীক সম্পর্ক রয়েছে। মোসাদ্দেক আলীর নামে বেনামে যে সমস্ত সম্পত্তিগুলো রয়েছে সেগুলো বেগম জিয়ার সম্পত্তি বলেই বিএনপির অনেক নেতাকর্মী মনে করেন।

বেগম খালেদা জিয়ার তার সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২০০১ থেকে ২০০৭ সালে কোকোকে মোসাদ্দেক আলীর পার্টনার বানিয়েছিলেন। এখন বেগম খালেদা জিয়ার যে শারীরিক অবস্থা সেই শারীরিক অবস্থায় যদি তিনি কোনো উইল না করে থাকেন তাহলে এই সম্পদগুলো ভাগ বন্টনের ক্ষেত্রে তারেকের কর্তৃত্বই চূড়ান্ত হবে। আর পুরো সম্পদ তারেকের কবজায় চলে যাবে। যেটা পরিবার চাইছে না। এজন্য তারা মনে করছে বেগম খালেদা জিয়াকে প্যারোল বা যে কোনো প্রক্রিয়ার মুক্ত করা। মুক্ত করে তার কাছ থেকে এই সম্পদগুলো উইলে লিখে নেওয়া বেগম জিয়ার পরিবারের উদ্দেশ্য।

আর এই টানাপোড়েনের কারণেই বেগম খালেদা জিয়াকে করুণ পরিণতি বরণ করতে হচ্ছে।

বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭