ইনসাইড পলিটিক্স

প্যারোল নাকি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 27/02/2020


Thumbnail

আইনি প্রক্রিয়ায় যে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না তা আগেই নিশ্চিত ছিল। তারপরও বিএনপি নেতাদের অনুরোধে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার আইনী লড়াইয়ের ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার ইতিমধ্যেই বিশেষ বিবেচনায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারেক জিয়া এবং বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, প্যারোলে মুক্তি নিলে বেগম জিয়ার রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। জনগনের মধ্যে একটি নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরী হবে। এ কারণেই বিএনপি এবং তারেক জিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, আইনী লড়াইয়ের মাধ্যমেই তারা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনবে, শেষ চেষ্টা করতে চান। আর এই শেষ চেষ্টার জন্যই বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীশ ইস্কান্দার বিএনপি নেতৃবৃন্দকে সময় দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আইনি লড়াইয়ে খালেদা জিয়া যদি শেষ পর্যন্ত মুক্ত না হয়, তাঁরা যেন বেগম জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে আর কোন পদক্ষেপ না নেয়। এরপর তাঁরা তাদের মতো করে কাজ করবেন।

আজ যখন বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়, যেটা বেগম জিয়ার পরিবারের কাছে পূর্ব অনুমিত ছিল, তখন তাঁরা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে টেলিফোন করে শামীম এস্কান্দার বলেন, আপনারা যা যা করার করেছেন, আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। এখন আমরা বেগম জিয়াকে মুক্ত করার ব্যাপারে আমাদের যা করার আছে তা করবো।

ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, এখন বেগম জিয়ার পরিবার যেকোন শর্তেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার ব্যাপারে নতুন করে আলাপ-আলোচনা শুরু করতে চায়। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ইতিমধ্যে খালেদা জিয়ার প্যারোলের ব্যাপার নিয়ে সরকারের সঙ্গে দেন-সরবার প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারেক এবং বিএনপির একটি অংশের আপত্তির জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, এখন সেটা পুনরায় চালু করতে হবে। আর এই প্যারোলের শর্ত হিসেবে খালেদা জিয়াকেই প্রথমেই রাজনীতি থেকে সরে যাবার ঘোষণা দিতে হবে। অর্থাৎ বেগম খালেদা জিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপি চেয়ারপারসনের পদ থেকে পদত্যাগ করবেন। এর পরপরই খালেদা জিয়ার কাছে জেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে একটি প্যারোলের আবেদনের খসড়া পাঠানো হবে এবং এটিতে জেল কর্তিপক্ষের মাধ্যমে বেগম জিয়া স্বাক্ষর করবেন। স্বাক্ষরের পরপরই এই প্যারোলের আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে যাবে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সেখানে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।

কিন্তু সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, সরকার এখন প্যারোলের ব্যাপারে নেতিবাচক অবস্থান গ্রহণ করেছে । কারণ তাঁরা বলছেন, পারোল আবেদনের জন্য যে সময় এবং সুযোগ ছিল, সেই সময় এবং সুযোগ বেগম জিয়া এবং তাঁর পরিবার নষ্ট করেছে। কারণ এখন হাইকোর্টে জামিন আবেদন বাতিল হয়ে যাবার পর নতুন করে প্যারোল দেবার সুযোগ নেই। এবং সরকারের তরফ থেকে আরো বলা হচ্ছে যে, এই মামলায় সরকার বাদী নয়, বাদী হচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন। তাই দুর্নীতি দমন কমিশনের অনাপত্তি ছাড়া প্যারোল সম্ভব না। সরকারের তরফ থেকে এখন বলা হচ্ছে যে, বেগম খালেদা জিয়া দণ্ড মওকূফের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে দণ্ড মার্জনার আবেদন করা ছাড়া উপায় নেই এবং এমন আবেদন করতে হলে বেগম জিয়াকে নিজের দোষ স্বীকার করে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে।

সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, প্যারোল নয়, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা ছাড়া বিকল্প নেই। তবে রাষ্ট্রপতির কাছে শেষ পর্যন্ত বেগম জিয়া ক্ষমা প্রার্থনা করবেন কিনা তা নিয়ে বেগম জিয়ার পরিবারের সংশয় রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বেগম জিয়ার পরবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, যদি শেষ পর্যন্ত বেগম জিয়ার প্যারোলও না হয়, তাহলে বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিবেন যে তাঁরা কি করবেন।

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭