লিভিং ইনসাইড

সঙ্গী বেশি রেগে যাচ্ছে, সমাধান কি?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 01/03/2020


Thumbnail

খুব রাগ হচ্ছে আজকাল, চোখের সামনে যা কিছুই ঘটছে তার কিছুই ভালো লাগছে না। রিঅ্যাক্ট করা হয়ে যাচ্ছে, কাছের মানুষগুলোর সঙ্গেও আর ভালো কথা বলে পারা যাচ্ছে না। এই রাগের পরিণতি কখনো ভালো হয় না। বিশেষ করে এই রাগ কেড়ে নেয় অনেককিছু, সবচেয়ে কাছে মানুষ, সবচেয়ে কাছের সবকিছুকে। আর পছন্দের মানুষটি হরহামেশাই করতে থাকেন, তখন যেন সম্পর্কটাই তিক্ত হয়ে ওঠে যেন।

পছন্দের ভালোলাগার মানুষের জন্য আমরা অনেককিছুই করার চেষ্টা করি, যাতে মানুষটা খুশি থাকে, সংসার আর সম্পর্কটা যেন ভালো থাকে। আরেকটি বড় উদ্দেশ্য হলো, শত ঝামেলা সত্ত্বেও একটি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা। কিন্তু কখনো কখনো এই চেনা মানুষটির মুখ কেমন যেন পাল্টে যেতে থাকে। বিশেষ করে সামান্যতেই রেগে গেলে বোঝাপড়ায় একটা দূরত্বের সৃষ্টি হয়।

অতিরিক্ত রাগের কারণটা মূলত কি

সঙ্গী রেগে যাচ্ছে, আপনি নিশ্চয়ই প্রথম প্রথম সামলাতে না পেরে ঘাবড়ে যাচ্ছেন। কিছুদিন সহ্যের পর হয়ত আপনি নিজেও রাগারাগি শুরু করে দিলেন। এতে শুরু হয়ে যাচ্ছে তুমুল দাম্পত্য কলহ। তার আগে কেন ভাবছেন না যে এই চেনাসঙ্গীটি কেন রেগে যাচ্ছেন? মনে করে দেখুন তো, মানুষটা সম্পর্কের শুরু থেকেই এমন ছিলেন না এখন বেশি পাল্টে গেছেন। এটা আপনাকে আগে ভাবতে হবে। যদি হঠাৎ করে এমন রেগে যাওয়ার সমস্যা শুরু হয় তাহলে সঙ্গী হিসেবে আপনারই দায়িত্ব তাকে এ থেকে বের করার।

মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন, রাগ খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। কিন্তু সারাক্ষণই যদি একটা মানুষ রেগে থাকে, তাহলে সেটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। আর আমাদের বুঝতে হবে যে অবশ্যই এর পেছনে কিছু কারণ রয়েছে। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা যায় যে হয়তো মানুষটি এখন অল্পতেই রেগে যাচ্ছেন। এর কারণ হয়তো তাঁর অতিরিক্ত উদ্বেগ, হতাশা, একাকিত্ব, একঘেয়েমিবোধ কিংবা বাইপোলার ডিসঅর্ডারও থাকতে পারে। আবার অনেকের এটা জিনগতও হয়ে থাকে।

উদ্বেগ, হতাশার জন্য যে খিটখিটে আচরণ দেখা দেয়, সেটা অধিক সমস্যার সৃষ্টি করে। এর ফলে ব্যক্তির শারীরিক ও সামাজিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনও দেখা গেছে যে শুধু রাগের কারণেই দীর্ঘদিনের একটি সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হয়ে যায়। আর ফলাফল দুজনেই দুইদিকে বিচ্ছিন্ন।

এর সমাধানও সম্ভব

রেগে যাওয়া মানে তো হেরে যাওয়া। আর এই রাগ মাথায় নিয়ে তো একটা সম্পর্ক চলতে পারে না। কিছু বিষয় মেনে চলার প্রয়োজন। কিছু বিষয় মেনে চললেই কিন্তু সমস্যাটা স্থায়ী হতে পারে না। এটি পুরোই নির্ভর করছে আপনার ওপর, আপনি পছন্দের মানুষটির জন্য নিজে কতটা সহযোগিতা করবেন।

১. পাশের মানুষটির মানসিকতা বোঝার চেষ্টা করুন। তাঁর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করুন। তাঁকে বুঝিয়ে বলুন যে রাগ করার ফলে আপনাদের সম্পর্কে কী ক্ষতি হচ্ছে।

২. সরাসরি না বললে নিজে থেকেই বুঝতে শিখুন। যদি তিনি হতাশা, একঘেয়েমি থেকে এমন আচরণ করে থাকেন, তাহলে তাঁর উদ্বেগের কারণ জানার চেষ্টা করুন। তাঁকে উৎসাহ দিন।

৩. অনেক সময় নিজেদের মধ্যে তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতি বা হস্তক্ষেপের কারণেও সম্পর্কে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তাই যতটা সম্ভব তৃতীয় পক্ষকে এড়িয়ে চলুন। নিজেদের মধ্যকার সমস্যা কারও সঙ্গে আলোচনা করা থেকে বিরত থাকুন।

৪. আমাদের মধ্যে প্রচলিত একটি ধারণা রয়েছে যে সম্পর্কে যেকোনো একপক্ষকে ছাড় দিয়ে চলতে হয়। এটি খুবই ভুল ধারণা। একটি সম্পর্ক টিকে থাকে দুজন মানুষেরই ইচ্ছায়। কাজেই সবসময়ই যে একজনকেই মেনে নিতে হবে এমন নয়। কেননা মানুষের মন কখনোই একরকম থাকে না। তাই সবসময় এমন আশা করাটাও ভুল; বরং তাঁর রাগ হলে এবার আপনিই না হয় বুঝিয়ে বলুন।

৫. আবার দুই পক্ষেরই সমান জেদ থাকে। কাজেই কে কাকে আগে সরি বলবেন, এটা নিয়েও সমস্যা হতে পারে। তাই দুজনেরই অহমবোধ কমিয়ে বোঝাপড়ার মানসিকতা রাখতে হবে।

৬. প্রত্যেক মানুষেরই নিজস্ব কিছু সময় কাটানোর প্রয়োজন হয়। তাই প্রিয় মানুষটিকে সময় দিন। তিনি যাতে নিজে থেকেই বুঝতে পারেন।

৭. আর সবথেকে ভালো সমাধান হলো আপনার পছন্দের মানুষটিকে উপলব্ধি করানো যে আপনি তাঁকে কতটা পছন্দ করেন। এই বোধটা কিন্তু দীর্ঘদিনের একটি সম্পর্কের জন্য বেশি প্রয়োজন।

ভালোবেসে যে মানুষটার হাত আপনি ধরেছিলেন, সেই হাত রাগের মতো তুচ্ছ কারণে ছেড়ে দিতে হবে- এটা মেনে নেওয়া যায় না। অনেক বড় সমস্যার সমাধানও রয়েছে আপনাদের দুজনের কাছে। তাই কখনো ছেড়ে চলে যাবো- এটা না ভেবে রাগগুলোকে দমনের চেষ্টা করুন। ত্যাগ করুন কিছুটা, দেখবেন জয় আপনারই হবে।  

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭