লিভিং ইনসাইড

শীত পেরিয়ে আসছে গরম, থাকুন সাবধানে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 02/03/2020


Thumbnail

শীত কমে এসেছে, জোরেসোরে গরম না এলেও কিছুটা তাপ উষ্ণতাবোধ হচ্ছে। গরমের আগমন বেশ ভালোই টের পাওয়া যাচ্ছে। তবে শীত যাই যাই করে পুরোপুরি চলেও যায়নি। সন্ধ্যার পর সকালে অনেকটাই শীত থাকছে। আশপাশে একটু একটু হিম, ভোরের শিশির আর হালকা কুয়াশা মনে করিয়ে দিচ্ছে শীত এখনো যায়নি পুরোটা।

এখন দিনে গরম ও রাতে শীত। আবহাওয়ার এ মিশ্র অবস্থায় ছড়িয়ে পড়ছে সর্দি-কাশি, টনসিল, চর্মরোগসহ নানান ব্যাধি।

আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সময়ে সুস্থ থাকাটা মোটেও অসম্ভব কোনো কাজ নয় ৷ তাই এই সময়ে সুস্থ থাকতে হলে প্রয়োজন সচেতনতা এবং সতর্কতা। এই মৌসুমে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আবহাওয়া থাকে গরম। ফ্যান চালিয়ে ঘর ঠাণ্ডা রাখতে হয়। সন্ধ্যার পর অল্প ঠাণ্ডা পড়ে। রাতে আর ভোরে বেড়ে যায়। তাই অনেকেই পাতলা কাঁথা বা চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমান।

বড়দের মতো শিশুরা হঠাৎ আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে না। অনেক সময় কাঁথা গায়ে ঘুমানোর সময় গরম লাগে। এই কারণে রাতে পাখাও ছেড়ে রাখেন অনেকে। যে কারণে ভোরে আরো ঠাণ্ডা লাগে। তারপরও আলসেমি করে বিছানা থেকে উঠে ফ্যান বন্ধ করা হয় না। ফলাফল সর্দি, কাশিসহ আরও কিছু শারীরিক সমস্যা।

শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। একটু অসতর্কতার ফলে সাধারণ সর্দি-কাশি থেকে নিউমোনিয়া পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। শীতের সময় শিশুদের প্রস্রাবের বেগ বেশি থাকে। রাতে ঘুমের মধ্যে বিছানায় প্রস্রাব করে বেশিক্ষণ থাকলে তা থেকে সর্দি-কাশি ও চর্মরোগ হতে পারে। শিশুদের ঠাণ্ডা লাগলে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সতর্কতা

রাতের ঘুমানো আগে ফ্যানের স্পিড কমিয়ে রাখুন। শিশুদের গায়ে যেন সরাসরি কুয়াশা না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখুন। বাস, ট্রেন বা লঞ্চে- দূর পথের যাত্রায় ঠাণ্ডা বাতাস থেকে যাতে সর্দি, কাশি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। দরকার হলে মাফলার ব্যবহার করুন।

যারা মোটরসাইকেল চালান, ঘর থেকে বের হওয়ার আগে শীতের পোশাক সঙ্গে রাখুন। মাথায় হেলমেট তো থাকছেই। শীতে অপরিচ্ছন্ন থাকলে চর্মরোগ হতে পারে। নিয়মিত গোসল ও পরিচ্ছন্ন জামা-কাপড় ব্যবহার করুন।

যাদের ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা বেশি, তারা সরাসরি ঠাণ্ডা বাতাসে না থাকলেই ভালো করবেন। যাদের টনসিল, শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি আছে তারা ঠাণ্ডা পানি, আইসক্রিম, বরফ ব্যবহারে সতর্ক থাকুন। শিশুদের ফ্রিজ থেকে ঠাণ্ডা কোনো খাবার বা আইসক্রিম খাওয়াবেন না।

সকালে শিশুদের শরীর অলিভ অয়েল অথবা সরিষার তেল দিয়ে মালিশ করুন। প্রবীণরাও শরীরে তেল ব্যবহার করতে পারেন। ঘরে কাপড়ের স্যান্ডেল ব্যবহার করতে পারেন।

অসুস্থ হয়ে পড়লে

ভাইরাস আক্রান্ত হয়েই এ সময় অধিকাংশ রোগব্যাধি হয়। কারো গায়ে ঘামাচির মতো দানা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের চর্মরোগ সাধারণত অপরিচ্ছন্নতার কারণে হয়। এই সমস্যা দেখা দিলে নিমপাতা সেদ্ধ করা পানিতে গোসল করতে পারেন।

ঠাণ্ডা লেগে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা হতে পারে। জ্বর সাধারণত সাতদিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। সর্দি পুরোপুরি ভালো হতে কারও কারও ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ দিন লাগতে পারে।

শীতে আবহাওয়া শুষ্ক হওয়ায় ত্বক ফেটে যেতে পারে। এর থেকে রেহাই পেতে অলিভ অয়েল বা সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন। টনসিলের সমস্যা থাকলে ঠাণ্ডা পানি ও খাবার যত কম খাওয়া যায় ততই ভালো।

গোসলের সময় গায়ে গরম পানি দিলেও মাথায় দিন ঠাণ্ডা পানি। কারণ মস্তিষ্ক সবসময় উষ্ণ থাকে। মাথায় গরম পানি দিলে অসুস্থ শরীরে মেজাজ আরও খিটখিটে হতে পারে। শীতল পানি মেজাজ ঠাণ্ডা রাখে।

শরীরের যেসব জায়গার ত্বক ঢাকা যায় না যেমন- মুখমণ্ডল, হাতের কব্জিতে তেল লাগালে শীতের প্রকোপ কম অনুভূত হয়।

আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সময়ে সাধারণত বেশি রাত থেকে শুরু করে ভোরবেলা পর্যন্ত তাপমাত্রা বেশ কমে যায়। হাল্কা গরম হয়, এমন চাদর এই সময় ব্যবহার করা উচিত। রাতে অথবা ভোরে ঘরের বাইরে থাকলে হাল্কা গরমজামা এবং মাফলার সঙ্গে রাখা উচিত।

শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে আবহাওয়ার পরিবর্তনের এই সময় একই সঙ্গে সচেতন এবং সতর্ক থাকতেই হবে।

 

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭