ইনসাইড থট

কথা ফুটলো ইউনূসের, কাজ করবেন কবে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 23/03/2020


Thumbnail

এতদিনে মুখ খুললেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। যখন বাংলাদশে ২৭ জন করোনাক্রান্ত রোগী পাওয়া গেল, তখন তিনি একটি কলাম লিখলেন। সেই কলামেও আবার নতুন কিছুই নেই। গত কিছুদিন ধরে আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে করোনা নিয়ে যা যা শুনেছি, যা কিছু দেখেছি, সেগুলোরই সাজানো গোছানো একটা রূপ ইউনূসের এই কলাম। দেশে যখন করোনা পরিস্থিতি নিতে প্রতিটা মানুষ আতঙ্কিত, যখন ড. ইউনূস নিজেই বলছেন যে, বাংলাদেশের জন্য মহাবিপদ ডেকে আনতে পারে করোনা যেই অবস্থায় তার কাছ থেকে আমরা শুধুমাত্র একটি কলাম নয়, বরং আরও বেশিকিছু আশা করি। কারণ তিনি শান্তিতে নোবেলজয়ী, বিভিন্ন এনজিও এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। পাশাপাশি তিনি একজন ধনাঢ্য ব্যক্তিও বটে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি প্রতিষ্ঠান আছে যেখান থেকে নার্সদের বিদেশে পাঠানো হয়। আমরা জানতে চাই যে, বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি নার্সদের পিপিই(ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ) দিয়ে মাঠে নামাবেন কিনা। দেশের চিকিৎসকরা বর্তমানে পিপিই সংকটে ভুগছে। এটা নিশ্চয়ই ড. ইউনূসের অজানা নয়। এমন অবস্থায় ড. ইউনূসের নামজাদা অ্যাপারেল কোম্পানি কি চিকিৎসকদের জন্য পিপিই সরবরাহ করবে?

প্রতি মাসে বিদেশ থেকে কোটি কোটি ডলার ডোনেশন পান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। করোনা সংক্রান্ত গবেষণা বা এর ওষুধ আবিষ্কারের জন্য তিনি এর ছোট্ট একটা অংশ দান করার উদারতা দেখাবেন? অনেক বিত্তবানই কিন্তু করোনা মোকাবেলার জন্য দু হাতে অর্থ দান করছেন। বিল গেটস করেছেন। আবার নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন ও অভিজিৎ ব্যানার্জিও গবেষণার জন্য তাদের সামর্থ অনুযায়ী অনুদান দিয়েছেন। অথচ এরকম কোনো কাজে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম আমরা এখন পর্যন্ত দেখিনি।

বাংলাদেশে মুখরোচক কথা বলা খুব সহজ। অন্যের ঘাড়ে দায় চাপানো আরও সহজ। কিন্তু হাজারো সমস্যার এই দেশে কাজ করাটা কঠিন। আমরা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্বের কাছ থেকে ফাঁকা বুলি নয়, বরং কিছু কাজ দেখতে চাই। যদিও তিনি তা করবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ অতীতে তাকে কখনও নিঃস্বার্থভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি। দেশের সংকটে, জাতির ক্রান্তিকালে তাকে কখনও ইতিবাচক কিছু করতে আমরা দেখিনি। এমনকি রোহিঙ্গা ইস্যুতেও তাকে মুখে কুলুপ এটে বসে থাকতে দেখা গেছে। নোবেলজয়ী হিসেবে তো দূরের কথা একজন সাধারণ মানুষও রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে যেভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে, ইউনূসকে আমরা সেটুকুও করতে দেখিনি। অথচ বিদেশে বিভিন্ন মহলে তার শক্তিশালী লবিং। প্রমাণ ছাড়া মিথ্যে অভিযোগ করে নামে বেনামে লবিং চালিয়ে পদ্মা সেতুর অর্থ বরাদ্দ তিনি বাতিল করে দিতে পারেন। অথচ নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের নিজ ভিটে মাটি ফিরিয়ে দিতে তার কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখি না। দেশের কোনো সংকটে তাকে আমরা পাশে পাই না। তবুও তার কাছ থেকে আমরা সাহায্য প্রত্যাশা করি। কারণ দেশের মানুষকে একটু হলেও স্বস্তি দেওয়ার সামর্থ তার আছে। ড. মোহাম্মদ ইউনূসের বেশকিছু প্রতিষ্ঠান আছে, যেগুলো সরাসরি করোনা প্রতিরোধে সাহায্য-সহযোগিতাসহ বিভিন্ন কাজ করতে পারে।

পাশের দেশ ভারত থেকে শুরু করে ইউরোপের ধনী দেশগুলোতেও নামী দামী ব্যক্তিত্বরা করোনা মোকাবেলায় সরকারকে সাহায্য করছে। জনগণকে সচেতন করছে, গবেষণা কাজে অর্থ সহায়তা করছে। অথচ ড. মুহাম্মদ ইউনূস শুধু গালভরা কথা বলেই নিজের দায়িত্ব শেষ করছেন।

ইউনূস তার কলামের শিরোনাম দিয়েছেন ‘সময় দ্রুত হারিয়ে ফেলছি’। তিনি তার লিখেছেন, আমরা বোধহয় খুব দেরি করে ফেলছি। এই বিলম্ব আমাদের সর্বনাশ ডেকে আনবে। অথচ তিনি নিজেই কি অনেকটা দেরি করে ফেললেন না? করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে আরও প্রায় তিনমাস আগে। বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে, তারও ১৫ দিন পেরিয়ে গেছে। এতদিনে আপনার ঘুম ভাঙলো ড. মুহাম্মদ ইউনূস? এতদিনে পরে গৎবাঁধা এই লেখার উদ্দেশ্যটা কী? সরকারকে একটু খোঁচা দিয়ে আত্মতৃপ্তি পাওয়ার জন্যই কি এই লেখা? খোঁচা মেরে এবং অন্যের ওপর দায় চাপানো ছাড়াও মানুষের জন্য কিছু করে যে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়, সেটা আপনারা শিখবেন কবে?



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭