ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পুরো ভারত ‘লক ডাউন’; আবেগী মোদি যা বললেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 24/03/2020


Thumbnail

জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘লক ডাউন’ এর ঘোষণা দিলেন। আজ রাত ১২ টা থেকে ২১ দিনের জন্য পুরো ভারত ‘লক ডাউন’ করা হলো। করোনা সংক্রামণ ঠেকাতেই ভারত এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। ভারত জুড়ে নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। 

ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অংশ, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে এই ‘লক ডাউন’ পদ্বতির মাধ্যমে করোনা সংক্রামণ ঠেকাতে চাইছে।

‘লক ডাউন’- ই করোনা ভাইরাস ঠেকাতে সবচেয়ে সফল পদ্বতি হিসেবে এখন পর‌্যন্ত স্বীকৃত হয়েছে। আর এজন্য সব দেশের মতো ভারতও ‘লক ডাউন’ পদ্বতিতে গেল।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণের গুরুত্বপূর্ণ অংশ: 

- ২১ দিনের লকডাউন দীর্ঘ সময়, কিন্তু আপনাদের জীবন আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমার বিশ্বাস প্রত্যেক ভারতবাসী সরকারের নির্দেশ মেনে চলবেন। আশাকরি খুব শীঘ্র এই সঙ্কট কাটিয়ে বেরিয়ে আসতে পারব আমরা।

- আপনাদের কাছে অনুরোধ, এই সঙ্কটের সময় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ খাবেন না। আমার বিশ্বাস প্রত্যেক ভারতীয় সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলবেন।

- এই সঙ্কটের সময় নানারকম গুজবও ছড়াচ্ছে। এই ধরনের গুজব এবং কুসংস্কার এড়িয়ে চলুন। শুধুমাত্র কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে চলুন।

- এই সঙ্কটের সময়ে সব রাজ্যগুলিকে স্বাস্থ্য পরিষেবাকেই প্রাধান্য দিতে হবে।

- দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবাকে মজবুত করতে আজ ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার। এতে আইসোলেশশন বেড, আইসিইউ, ভেন্টিলেটরের সংখ্যা বাড়ানো যাবে। এরই সঙ্গে মেডিক্যাল এবং প্যারামেডিক্যাল প্রশিক্ষণের কাজও গতি পাবে।

- দরিদ্র মানুষের সেবায় এই সঙ্কটের সময়ও অনেকে এগিয়ে আসছেন।

- করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলি নিরন্তর কাজ করে চলেছে। আপনারা যাতে সব জরুরি পরিষেবা পান, তা সুনিশ্চিত করতে একজোট হয়ে কাজ করছেন সকলে।

- আপনাদের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিচ্ছেন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা। পরিবার-পরিজনদের ফেলে রাস্তায় নেমে কাজ করছে পুলিশ। আপনাদের রাগ-অভিমান সহ্য করছেন। তাঁদের কথা ভাবুন।

- যাঁরা পরিস্কারের কাজে যুক্ত, তাঁদের জন্য প্রার্থনা করুন।

- আপনাদের কাছে হাতজোড় করে প্রার্থনা করছি, জীবন বাজি রেখে যাঁরা কাজ করে চলেছেন, সেই ডাক্তার, নার্স, প্যারামেডিক্যাল কর্মী, হাসপাতাল কর্মী, অ্যাম্বুলেন্স চালকদের জন্য প্রার্থনা করুন।

- যত দিন দেশ লকডাউন থাকবে তত দিন এই সংকল্প নিয়ে চলতে হবে।

- ভারত এখন এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে যেখানে আমাদের সকলকে সংযম বজায় রাখার সঙ্কল্প নিতে হবে। প্রাণ থাকলে তবেই দেশ থাকবে।

- করোনা থেকে বাঁচার একটাই উপায়, লক্ষ্মণরেখা পার করবেন না।

- চিন, রাশিয়া, ফ্রান্স, ইটালি- সহ এই দেশগুলির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত। তা সত্ত্বেও করোনার মোকাবিলা করতে পারেনি তারা। এই পরিস্থিতিতে উপায় কি? একটাই উপায়, যাঁরা করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছেন তাঁদের থেকে শিক্ষা নেওয়া। ওই সব দেশে সরকারের কথা শুনে বাড়ির বাইরে বের হননি সাধারণ মানুষ। আমাদেরও তা মেনে চলতে হবে।

- সারা বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষে পৌঁছতে ৬৬ দিন লেগেছিল। তার পর ১১ দিনে সংখ্যাটা বেড়ে ২ লক্ষ দাঁড়ায়।

- করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে শুরুতে দেখলে বোঝাই যায় না। তাই বাড়িতে থাকুন। কেউ রাস্তায় বেরোবেন না।

-এই ক’দিন বাইরের বাইরের জীবন ভুলে যান।

-প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নয়, আপনাদের পরিবারের এক জন সদস্য হিসাবে এমনচা ঘোষণা করছি।

- এটা না করলে দেশ আরও ২১ বছর পিছনে চলে যাবে।

- আগামী তিন সপ্তাহ এই লকডাউন জারি থাকবে।

- আপনাদের কাছে অনুরোধ, এই সময় যে যেখানে রয়েছেন, সেখানেই থাকুন।

-প্রত্যেক ভারতীয়, প্রত্যেক পরিবারকে বাঁচানোই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।

-দেশের যা পরিস্থিতি, তাতে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

-দেশের প্রতিটি রাজ্য, জেলায় এই নির্দেশ কার্যকর হবে।

-আজ রাত ১২টা থেকে গোটা দেশে সম্পূর্ণ ভাবে লকডাউন জারি হতে চলেছে।

-গত দু’দিনে দেশের অনেক রাজ্য লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারগুলির এই সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিতে হবে।

-এমন দায়িত্বহীনতা চলতে থাকলে, ভারতকে এর চরম মূল্য চোকাতে হবে। কী ক্ষতি হবে তা অনুমানও করতে পারবেন না।

-কিছু মানুষের ভুল সিদ্ধান্তের ফলে‌ বহু মানুষের জীবনে বিপদ ডেকে আনতে পারে।

-কিছু মানুষ ভাবছেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা শুধুমাত্র আক্রান্তদের জন্যই প্রয়োজন। এই ধারণা ভুল। প্রত্যেক পরিবারের জন্য এই দূর্তব প্রয়োজন।

-করোনার থেকে বাঁচার আর কোনও উপায় নেই।

-বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বৈশ্বিক মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার একটাই উপায়, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।

-করোনাভাইরাস এত দ্রুত হারে বাড়ছে, যে সবরকম ব্যবস্থা সত্ত্বেও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না বিশ্বের সব দেশ।

-এর জন্য সকলের প্রশংসা প্রাপ্য।

-ভারতবাসী দেখিয়েছেন যখন দেশ এবং মানবতার উপর সঙ্কট আসে, তখন কী ভাবে একজোট হয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায়।

- আপনাদের বাড়ির দরজার বাইরে লক্ষ্ণণরেখা টানা হল। মনে রাখবেন, তার বাইরে পা রাখলেই করোনার মতো মহামারিকে বাড়িতে ডেকে আনবেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭