নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 27/03/2020
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে ১৯৭১ সালের মার্চ মাস ছিল উত্তাল ঘটনাবহুল মাস। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ হঠাৎ এক হটকারী সিদ্ধান্তে পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বাংলার আপামর জনতা। অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর ২৫ মার্চ পর্যন্ত নানান ঘটনার মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে বাংলার স্বাধিকার আন্দোলন রূপ নেয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের প্রতিদিনের ঘটনাপ্রবাহ থাকছে বাংলা ইনসাইডারের পাঠকদের জন্য। আজ ২৭ মার্চের ঘটনা প্রবাহ:
২৭ মার্চ, ১৯৭১
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার হওয়ার পর থেকেই পাক বাহিনীকে বাংলার মাটি থেকে হটাতে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙালি। আর পাক হানাদার বাহিনী দেশব্যাপী তাদের নৃশংসতা চালাতে থাকে। এই সময়টাতেই বিদেশী সাংবাদিক সাইমন ড্রিং ঢাকায় লুকিয়ে থেকে গোপনে ছবি ও প্রতিবেদন মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টকে পাঠাচ্ছিলেন। তার মাধ্যমেই সারা পৃথিবীর মানুষ পাক বাহিনীর গণহত্যা সর্ম্পকে জানতে পারে। হৈ চৈ পরে যায় বিশ্বব্যাপী। কিন্তু পাকিস্তান সামরিক জান্তার অপর্কম আড়াল করতে দৈনিক সংগ্রাম একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে তারা বলে ‘এগুলো কোন গণহত্যার ছবি নয়, ৭০ এর ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসের পর যে অবর্ণনীয় মানবিক বিপর্যয় ঘটেছিল এগুলো তারই ছবি।
একাত্তরের আজকের দিনে ভোর নাগাদ চট্টগ্রামের কালুঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন মেজর জিয়াউর রহমান। সেখানে তিনি বলেন, আমি মেজর জিয়া, বাংলাদেশ লিবারেশন আর্মির প্রাদেশিক কমাণ্ডার-ইন-চিফ। শেখ মুজিবর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি। আমি আরো ঘোষণা করছি যে, আমরা শেখ মুজিবুর রহমানের অধীনে একটি সার্বভৌম ও আইনসিদ্ধ সরকার গঠন করেছি যা আইন ও সংবিধান অনুযায়ী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদের সরকার জোট নিরপেক্ষ নীতি মেনে চলতে বদ্ধপরিকর। এ রাষ্ট্র সকল জাতির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে এবং বিশ্বশান্তির জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। আমি সকল দেশের সরকারকে তাদের নিজ নিজ দেশে বাংলাদেশের নৃশংস গণহত্যার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার একটি সার্বভৌম ও আইনসম্মত সরকার এৰং বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পাবার দাবিদার।
বঙ্গবন্ধুর এই নির্দেশনা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এবং বিদেশেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। পূর্ণ উদ্যোমে জনগন স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
বাংলার মানুষের এই স্বাধীনতা সংগ্রামকে কামান-ট্যাংকের নিচে গুঁড়িয়ে দেবার নির্দেশ দিয়েছিলেন লেঃ জেনারেল নিয়াজী। তারা ধারণা করেছিল, নৃশংসতা চালিয়ে বাঙালির স্বাধীনতার স্বপ্নকে রুখে দেওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু হলো ঠিক উল্টোটি। পাকিস্তানিদের অন্যায়- অত্যাচার রুখে দিয়ে স্বাধীনতার যাত্রাই শুরু করেছিল বাঙালি।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭