নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 11/07/2017
গত দুইছর ধরে যেভাবে খেলোয়াড়রা মাঠে ক্রিকেট খেলছে, তার জ্বালানি তারা পাচ্ছে এই ম্যাশের কাছে থেকেই। ১৫ বছরেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে অনেক কিছু পেয়েছেন আবার হারিয়েছেনও। ২০১১ তে নিজের দেশে হয়ে যাওয়া বিশ্বকাপ খেলতে পারেননি ইনজুরি ও নানা কোন্দলের কারণে। বিশ্বকাপের দলে নিজের নাম না দেখে কেঁদেছিলেন অনেক।
সেই ম্যাশের নেতৃত্বে ২০১৫ সালে বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছিল বাংলাদেশ। সর্বশেষ তারই অধীনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে খেলেছে টাইগাররা। আইসিসির বৈশ্বিক আসরে প্রথমবারের মতো সেমিতে খেলার কৃতিত্ব দেখিয়েছে বাংলাদেশ।
সমর্থকদের চোখে মাশরাফি বিন মর্তুজা শুধু অধিনায়ক না, বসও বটে। আবার অনেকের কাছে তিনি সম্মানের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। গত ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর যদি বাংলাদেশ ক্রিকেটে কোনো উন্নতির বিপ্লব হয়ে থাকে, সে বিপ্লবের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। সবশেষ শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ড সফরের পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও বাংলাদেশ দলের সম্মানজনক লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।
মাশরাফি বিন মর্তুজা শুধুমাত্র একজন ক্রিকেটারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে, অনেক কারণেই এদেশের মানুষের কাছে আইডল। তার হাত ধরেই বর্তমানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ দল।
২০১৪ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে মাশরাফির বাংলাদেশের রঙিন পোশাকের অধিনায়কত্ব গ্রহণের পর থেকে আসতে থাকে এক এক করে সাফল্য। কিন্তু এত সব সাফল্যের মাঝেও কিন্তু অনেকেই আছেন, যারা প্রশ্ন তুলছেন মাশরাফিকে নিয়ে। কেউ তার পরফরম্যান্সের কথা বলছেন, ফিটনেসের কথা বলছেন।
এমনকি ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে ম্যাশের নেতৃত্বে দল খেলবে কিনা তা নিয়েও শুরু হয়েছে কানা-ঘুষা। কিন্তু পরিসংখ্যান তো বলছে অন্য কথা। ক্রিকইনফোর এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে হার না মানা মাশরাফির গল্প। সেই সঙ্গে প্রতিবেদনে এটাও দেখা গেছে, একজন অধিনায়ক মাশরাফি শুধু পারফর্মারই নন, দেশের সেরা পারফর্মারদেরই একজন।
দুই হাঁটু মিলে ৭ টি অপারেশন। তবুও খেলে যাচ্ছেন দেশের জন্য। তবে ইনজুরি জর্জরিত শরীরটার জন্য সামর্থ্যের পুরোটা দিয়ে খেলতে পারেননি কখনো। কিন্তু তারপরেও মাশরাফি সব বাধাকে জয় করেই এগিয়ে গেছেন। দেশকে দিয়েছেন উজাড় করে।
হয়তো মোস্তাফিজ-তাসকিনদের মাঝে তাকে একটু ম্লান মনে হয় কখনো। কিন্তু পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে, ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের পর ওয়ানডেতে দেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি মাশরাফি।
২০১৫ বিশ্বকাপের পর ৩০ ওয়ানডেতে ৪.৯৯ গড়ে ৪২টি উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি। নড়াইল এক্সপ্রেসের উপরে কেবল আছেন মোস্তাফিজুর রহমান। ২২ ম্যাচে যার শিকার ৪৪ উইকেট। এই সময়ে মাশরাফির সমান খেলেও সাকিব আল হাসানের উইকেট ৩৪টি। মাশরাফির চেয়েও ৮ উইকেট কম। ২৭ উইকেট নিয়ে তাসকিন আছেন চতুর্থ স্থানে, ১৬ উইকেট নিয়ে নাসির পঞ্চম। অবশ্য তাসকিন ও নাসির ম্যাচও খেলেছেন কম। তাসকিন খেলেছেন ২০ ওয়ানডে, নাসির ১৬টি।
সময়ের দৈর্ঘ্য যদি একটু কমিয়ে আনা হয়, তবে দেখা যাবে ২০১৬ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের পর ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি উইকেট মাশরাফিরই। ২৮.৮৯ গড়ে ২৮ উইকেট!
গত শ্রীলঙ্কা সফরে টি টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে বিদায় নেন মাশরাফি। এখন কেবল ওয়ানডে ক্রিকেটটা খেলে যাবেন। সর্বশেষ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তার নেতৃত্বেই প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো ইভেন্টে সেমিফাইনালে খেলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু সেই সাফল্যের পরেও প্রশ্ন উঠছে মাশরাফিকে নিয়ে। যারা প্রশ্ন তুলেছেন পরিসংখ্যান নিশ্চয়ই তাদের ভুলের বার্তাই দেবে।
হ্যাঁ, এটা সত্যি যে, ম্যাশের বয়স হয়েছে। তাই ফিটনেসও একটা বড় বাধা। কিন্তু ম্যাশ তো ফুরিয়ে যায়নি। এখনও তিনি যখন বোলিং করেন তখন পুরো গ্যালারী ম্যাশ বলে চিৎকার করে ওঠে। তারমত কিংবা তার থেকে ভালো নেতৃত্ব কি বিসিবি এখনও পেয়েছে?
তথ্যসূত্র:ক্রিকইনফো
বাংলা ইনসাইডার/ডিআর
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭