ইনসাইড পলিটিক্স

সরকারের গোপন তথ্য পাচার হচ্ছে বিএনপির কাছে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 05/04/2020


Thumbnail

গত ৪ এপ্রিল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সমেলন করেন এবং সংবাদ সম্মেলনে তিনি করোনা মোকাবেলার জন্য ৮৭ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ প্রণোদনার জন্য প্রস্তাব করেন। একইসাথে তিনি বলেন যে এটা জিডিপির ৩ শতাংশ। এমনকি তিনি ঐ প্যাকেজ প্রণোদনার জন্য কোন কোন খাতে কি কি বরাদ্দ দিতে হবে তাঁর একটি হিসাব গ্রহণ করেন। গত ১০ বছর যাবত যারা বিএনপিকে চেনেন তাঁরা জানেন যে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তো দূরের কথা, পুরো বিএনপির পক্ষ থেকে এই ধরণের একটি প্রস্তাব তৈরি করা অসম্ভব। গত ১০ বছর বিএনপি শুধুমাত্র ইস্যুর পেছনে ছুটেছে। প্রধানমন্ত্রী বা নীতিনির্ধারক মহল যে বক্তব্য দিয়েছে সেই বক্তব্যের সমালোচনা করা এবং সরকার যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছে, সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করাই ছিল তাঁদের একমাত্র কাজ। সেই বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির পর হঠাৎ করে প্যাকেজ প্রণোদনার প্রস্তাব দিবে- এটা ছিল বিষ্ময়কর। এবং তাঁর চেয়েও বিষ্ময়কর ছিল যে আজ প্রধানমন্ত্রী যে ৭২ হাজার সাতশো পঞ্চাশ কোটি টাকার প্যাকেজ প্রণোদনা দিয়েছেন, সেই প্রণোদনা প্যাকেজে যদি আমরা লক্ষ্য করি তাহলে দেখা যাবে যে সেখানে অর্থের হেরফের থাকলেও খাত অনুযায়ী মৌলিক পার্থক্য নেই।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এরপরে একটা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন যে, এই প্যাকেজ প্রণোদনাটি তাঁদের আশ্বস্ত করেছে এবং কিছু কিছু আপত্তি সত্ত্বেও সরকার যে তাঁদের কথা শুনতে পেরেছে এটাতে তাঁরা সন্তুষ্ট। প্রশ্ন উঠেছে যে, বিএনপির মতো একটি অগাছালো দল, যেখানে কার্যকর অর্থনীতিবিদও নেই, সেই দলের মহাসচিব কিভাবে ৮৭ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ প্রণোদনার প্রস্তাব দিলেন? এবং দুটি প্রস্তাবের মধ্যে মোটাদাগে পার্থক্যও নেই। তাহলে প্রশ্ন হলো, সরকারের মধ্য থেকে কেউ কি আগে থেকে এই প্যাকেজ প্রণোদনা তথ্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দিয়েছেন? আর সেকারণেই প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আগেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্যাকেজ প্রণোদনা প্রস্তাব ঘোষণা করলেন? তাহলে সরকারের মধ্যেই কি গুরুত্বপূর্ণ এমন কোন ব্যক্তি রয়েছেন যে বিএনপিকে তথ্য পাচার করছে? শুধু প্যাকেজ প্রণোদনার বিষয়টিই নয়, আমরা যদি লক্ষ্য করি যে করোনা শুরু হওয়ার পর থেকেই বিভিন ইস্যুতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ আগাম তথ্য দিচ্ছেন, যে সার্জিক্যাল মাস্ক কিনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রত্যাহার করেছে সেই খবর বিএনপির একজন নেতা প্রকাশ করেছিলেন। ওই নেতা এই মাস্কের যে সমস্যা আছে তা জানলেন কিভাবে। কারণ সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন নীতি নির্ধারক ছাড়া এই তথ্য কারো জানার কথা না।

শুধু তাই নয়, বিভিন্ন জায়গায় যে আইসিউ ওয়ার্ডগুলো হয়েছে সেগুলো যে এখনো সম্পূর্ণ নয় সেই তথ্যও বিএনপি আগাম প্রকাশ করছে। আর এই সমস্ত ঘটনা থেকেই একটা প্রশ্ন উদয় হয়েছে যে, সরকারের মধ্যে কি বিএনপির কিছু এজেন্ট সক্রিয় হয়েছে? বিশেষ করে বেগম জিয়ার মুক্তির পর তারা কি এখন আগের চেয়ে সক্রিয়? তারা কি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো পাচ্ছেন? যে কারণে ইস্যুর পেছনে ছুটে চলা বিএনপি এখন নিজেই আগাম বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলছে এবং প্রস্তাব দিচ্ছে। এ বিষয়টি অবিলম্বে তদন্ত হওয়া দেরকার বলে সরকারের নীতি নির্ধারকরা মনে করেন এবং এই ঘটনা যদি চলতে থাকে তাহলে সেটির সরকারের গোপনীয়তার জন্য উদ্বেগজনক বলেও তারা মনে করেন।

বাংলা ইনসাইডার 

  



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭