ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ফের অনিশ্চয়তায় নওয়াজ শরীফ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 13/07/2017


Thumbnail

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ফের অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। চলতি বছরের ২০ এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া কোনো রকম ঠেকাতে পারলেও এবার নওয়াজের ভাগ্যে শিকে ছিড়বে কিনা তা বলা মুশকিল। মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের তীর যে এখনো নওয়াজের দিকেই।

২০১৪ সালে পানামার আইন বিষয়ক প্রতিষ্ঠান মোসাক-ফনসেকার প্রায় এক কোটি ১০ লাখ নথি ফাঁস হয়ে যায়। বিশ্বের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ীদের বিদেশী কোম্পানি এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যে যোগসূত্র তা এর মাধ্যমে প্রকাশ হয়ে যায়। এ নথির মধ্যে নওয়াজ শরীফ ও তাঁর পরিবারের নামও পাওয়া যায়।

নথিতে দেখা যায় নওয়াজ ও তাঁর সন্তানদের বিদেশী কোম্পানির মালিকানা রয়েছে কিন্তু তাঁদের পারিবারিক সম্পত্তির প্রতিবেদনে এ বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই। এই কোম্পানি থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে বাইরের দেশে তাঁরা সম্পদ গড়েছে বিশেষ করে লন্ডনের অভিজাত এলাকায় বেশ কিছু অ্যাপার্টমেন্টও আছে। দেশে কর ফাঁকি দিতে নওয়াজ শরীফ ও তাঁর সন্তানেরা এই কোম্পানি তৈরি করেছে বলে অভিযোগ ওঠে।

পানামাগেট কেলেঙ্কারি নিয়ে নওয়াজের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে ৫ সদস্যের বেঞ্চ গঠন করা হয়। এপ্রিল মাসে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে নওয়াজের প্রধানমন্ত্রীত্ব হারানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে আরও সময় দেয়। নওয়াজ ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত তথ্য না পাওয়ায় জয়েন্ট ইনভেস্টিগেশন টিম বা জেআইটি গঠনের নির্দেশ দেয়। আগামী সোমবার জেআইটির ১০ খণ্ডের প্রতিবেদন আদালত পর্যালোচনা করে রায় দেবে। জেআইটি জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সম্পদের হিসাবে গরমিল রয়েছে।

নওয়াজ শরীফ দুর্নীতির মামলার আসামী হওয়ায় তাঁর পদত্যাগের জোর দাবি তুলেছে দেশটি বিরোধী দল এবং গণমাধ্যম। ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ বা পিটিআই ও বিলাওয়াল ভূট্টোর জারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টি বা পিপিপি ইতিমধ্যেই নওয়াজকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দায়িত্বে দুর্নীতিপরায়ন নেতা ক্ষমতায় থাকতে পারে না বলেই তাঁদের বক্তব্য। তাঁরা জানান, নওয়াজ শরীফের পদত্যাগের জন্য জাতীয় পরিষদকে চাপ দেবেন।

পাকিস্তানের স্বনামধন্য পত্রিকা ‘ডন’ তাঁদের সম্পাদকীয়তে নওয়াজের পদত্যাগ চেয়ে একটি প্রতিবেদন করে। তাঁরা জানায়, নওয়াজ ক্ষমতায় থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করা সম্ভব হবে না। তিনি যেন সাময়িক সময়ের জন্য হলেও ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান। দেশে গণতন্ত্রকে রক্ষা ও শক্তিশালী করার জন্য তাঁরা নওয়াজকে এ অনুরোধ করেন।

জেআইটি গত সোমবার তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে দেখা যায় ন্যাশনাল অ্যাকাইন্টেবিলিটি ব্যুরো অর্ডিন্যান্সের ৯ নং ধারা লঙ্ঘন করেছেন প্রধানমন্ত্রী, তাঁর দুই ছেলে ও মেয়ে। এখন সুপ্রিম কোর্টের রায়েই নির্ধারিত হবে নওয়াজের ভাগ্য। বিরোধী দল, গণমাধ্যম ও দেশের জনগণের দাবির বিপরীতে নওয়াজকে পদত্যাগ করতে হতে পারে। কিন্তু সেজন্য অপেক্ষা করতে হবে আগামী সোমবার পর্যন্ত।


বাংলা ইনসাইডার/আরএইচবি




প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭