ইনসাইড বাংলাদেশ

গেজেট দিচ্ছে কি সরকার?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 15/07/2017


Thumbnail

নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরিবিধির গেজেট প্রণয়নের নির্দেশ সম্পর্কিত মামলাটি আগামীকাল রোববার আপিল বিভাগের কার্যতালিকার এক নম্বরে আছে। প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সব বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে মামলাটি আদেশের জন্য আছে।

এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, অধঃস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণসংক্রান্ত বিধিমালার এই গেজেট চলতি মাসের ১৫ তারিখের (আজ শনিবার) মধ্যে প্রকাশ করা হবে। গত ২ জুলাই রোববার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে একই দিনে অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে এটিকে ‘শেষ সুযোগ’ বলে উল্লেখ করেছিলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিন্‌হা রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম দুই সপ্তাহ সময়ের আবেদন জানালে তা মঞ্জুর করে প্রধান বিচারপতি ওই কথা বলেন।

তবে নাটকীয় কিছু না ঘটলে আগামিকালও সরকার গেজেট প্রকাশ করছে না বলে জানা গেছে। কারণ গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই গেজেট প্রকাশ করা হয়নি। এরপর দুইদিন শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিত ছু্টির পর আগামিকাল সপ্তাহের প্রথম দিন রোববার সকাল ৯টায় আদালত বসার কথা রয়েছে। জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা বলছেন, ছুটি থাকা না থাকা কোনও বিষয় নয়। সকরারের প্রবণতাই হচ্ছে বিষয়। দিনের পর দিন সরকার এ নিয়ে যেভাবে গড়িমসি করছে, তাতে বোঝাই যাচ্ছে তারা এটি এখনই দেবে না।

আইনমন্ত্রীর বক্তব্য সম্পর্কে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা বলেন, প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সব বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত এই বেঞ্চেই ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এসেছে। যার ফলে বিচারপতি অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে আর থাকলো না। এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য ধার্য তারিখের আগের দিন মন্ত্রী এমন সরল বক্তব্য কী উদ্দেশ্যে দিয়েছেন, তা সবাই বুঝে, নিশ্চয়ই আদালতও বুঝেছে।

প্রসঙ্গত, এর আগে বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে গত ২৯ মে সরকারকে ২ জুলাই পর্যন্ত সময় দিয়েছিল আপিল বিভাগ। তার আগেও আপিল শুনানিতে গেজেট প্রকাশের বিষয়ে দফায় দফায় সময় নেয় রাষ্ট্রপক্ষ। গত ২ জুলাই শেষবারের মতো সময় পায় রাষ্ট্রপক্ষ। নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন না করায় আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে গত ১২ ডিসেম্বর তলবও করেছিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

গত ৭ নভেম্বর বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা ২৪ নভেম্বরের মধ্যে গেজেট আকারে প্রণয়ন করতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল আপিল বিভাগ। ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেয়া হয়। ওই রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। ১২ দফার মধ্যে ইতিমধ্যে কয়েক দফা বাস্তবায়ন করেছে সরকার। এ জন্য বারবার আদেশ দিতে হয়েছে আপিল বিভাগকে। এমনকি, ২০০৪ সালে আদালত অবমাননার মামলাও করতে হয়েছে বাদীপক্ষকে। এরপর ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক ঘোষণা করে। 

এ অবস্থায় ২০১৫ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগ চার সপ্তাহ সময় দেয় সরকারকে। এরপর গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় থেকে একটি খসড়া শৃঙ্খলাবিধি তৈরি করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়। কিন্তু তা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে না হওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি গঠন করে আলাদা একটি শৃঙ্খলাবিধি তৈরি করে। গত ২ জানুয়ারি এ বিষয়ে আপিল বিভাগে শুনানি হয়। 

২০০৭ সালের ১০ জানুয়ারি আপিল বিভাগ বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ সংক্রান্ত চারটি বিধিমালা সাত দিনের মধ্যে গেজেট আকারে প্রকাশের নির্দেশ দেয়। তবে এ-সংক্রান্ত মামলাটি এখনও আপিল বিভাগে বিচারাধীন। ১২ দফা নির্দেশনার যেসব দফা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্যও তাগিদ রয়েছে।

বাংলা ইনসাইডার/এমএএম




প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭