ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ব্রেক্সিটের পর হেট ক্রাইম, আতঙ্কে অভিবাসীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 16/07/2017


Thumbnail

ব্রিটেনে গত বছর গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায়ের পর ঘৃণাজনিত অপরাধ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। অন্য বর্ণ ও ধর্মের মানুষদের প্রতি ঘৃণাজনিত অপরাধে (হেট ক্রাইম) ব্যবহার করা হচ্ছে অ্যাসিড। বিশেষ করে মুসলিম, ইউরোপীয় ও ইহুদিদের ওপর হামলার পরিমাণ দিন দিন বেড়ে চলছে।

ব্রিটেনের ন্যাশনাল পুলিশ চিফ কাউন্সিল এক বিবৃতিতে জানায়, গত ছয় মাসে চারশতাধিকের বেশি ঘৃণাজনিত অপরাধে অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়। ব্রিটেনের পুলিশ স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, গত ১১ মাসে আগের তুলনায় ঘৃণাজনিত অপরাধ ৪০ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই হয়েছে ওয়েলস ও লন্ডনে। সাধারণত অন্য বর্ণের বা ধর্মের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করতে যে অপরাধগুলো করা হয় সেগুলোই ঘৃণাজনিত অপরাধ বলে পরিচিত। 

গত এক বছরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হামলার ঘটনাগুলো হলো: একজন মুসলিম নারীকে রাস্তায় প্রকাশ্যে জোর করে হিজাব টেনে খোলা, দুইজন পোলিশ নাগরিকের ওপর হামলা এবং দুইজন মুসলিম ভাইবোনকে অ্যাসিড হামলা। এসব হামলার অধিকাংশ শিকার হলেন মুসলিমরা। ব্রিটেনে মুসলিম অধিকারবিষয়ক সংগঠন মুসলিম এনগেজমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট জানায়, এ বছরের শুধু এপ্রিল মাসেই তাঁরা ২৩টি ঘৃণাজনিত অপরাধের অভিযোগ পেয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা জানান, ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট আসার পর ঘৃণাজনিত অপরাধ ও অ্যাসিড হামলা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। ব্রিটেনে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এই ঘৃণাজনিত অপরাধ আরও বেড়েছে। ব্রিটিশ শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে বিদেশীদের প্রতি ঘৃণা যে বেড়েছে তা এই হামলার পরিমাণ থেকে অনুমান করা যায়।

গত জুন মাসে রমজানে মসজিদের সামনে এশার নামাজ আদায়ের জন্য জড়ো হওয়া মুসলিমদের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেয় হামলাকারী। অকথ্য ভাষায় তিনি মুসলিমদেরকে উদ্দেশ্য করে গালি দিচ্ছিলেন। ্ম্প্রএ হামলায় নিহত হন একজন বাংলাদেশি। গত বৃহস্পতিবার পূর্ব লন্ডনে মাত্র দেড় ঘণ্টায় পাঁচজনের ওপর অ্যাসিড হামলা করা হয়। বাংলাদেশের ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ব্রিটেনে কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে গেলে ঘৃণাজনিত অপরাধে শিকার হন বলে শোনা যায়। তিনি সপরিবারে লন্ডনে এক রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে সেখানে অ্যাসিড নিয়ে তাঁর স্ত্রীর ওপর হামলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তামিম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি অস্বীকার করেন।

অ্যাসিড হামলার উদ্দেশ্য শুধু যে ঘৃণাজনিত কারণে নয় বরং ছিনতাই, নিপীড়নের ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্রিটেনে অ্যাসিড খুব সহজে পাওয়া যায়। অ্যাসিডজনিত অপরাধের শাস্তি তেমন গুরুতর নয়। ফলে অপরাধীরা অ্যাসিড ব্যবহারে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন।

অন্য ধর্ম বা বর্ণের প্রতি ঘৃণা মানসিক ব্যাধি। এর জন্য প্রয়োজন কাউন্সেলিং। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার এ ধরনের হামলা ঠেকাতে শুধুমাত্র পুলিশ মোতায়েন করা ছাড়া অন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ব্রিটিশ পুলিশরা সাথে অস্ত্র রাখতে পারেন না। তাই এ ধরনের হামলা ঠেকানোর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সঙ্গে সঙ্গে নিতেও পারেন না তাঁরা। এক্ষেত্রে প্রয়োজন সচেতনতা তৈরি করা। ব্রিটিশ সরকারকেও সচেতনতা তৈরিতে এগিয়ে আসতে হবে।


বাংলা ইনসাইডার/আরএইচবি




প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭