টেক ইনসাইড

করোনাকালে ডিজিটাল বাংলাদেশের গুরুত্ব কেমন বাড়লো?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 07/05/2020


Thumbnail

করোনা ভাইরাস এর প্রাদুর্ভাবে থমকে আছে বিশ্ব । ভাইরাসটির ভয়াবহতায় সব কিছুই প্রায় বন্ধ । বদলে দিয়েছে মানুষের দৈনন্দিন জীবন ব্যবস্থা । বাংলাদেশ ও এর বাহিরে নয় । দেশের মানুষের পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে অনেক নিয়ম । এই সকল পরিবর্তন নিয়েই আজকের এই আয়োজন –

অনলাইন ভিত্তিক কেনাকাটা:

অনলাইনে সবচেয়ে বড় যে সুবিধা ক্রেতারা যেটা চাচ্ছেন, সেটা ঘরে বসে অর্ডার দিলেই পেয়ে যাচ্ছেন। বিশ্বজুড়েই যার আলাদা কদর তৈরী হয়েছে।  আর অনেক ক্ষেত্রে এই দাম শপিংমলের দামের থেকেও কম থাকায় ক্রেতারাও আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

বাংলাদেশে এখন এধরনের ওয়েবসাইটের বাইরেও সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুকে বিভিন্ন পেজ খুলেও বেচাকেনা হচ্ছে বিভিন্ন জিনিসের। একাধিক পেজে মানুষের কেনার হিরিক দেখা যাচ্ছে প্রতিদিন।  ঈদ কে সামনে রেখে ঘরে বসেই অনেকে ফেসবুক এর মাধ্যমে এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন । শপিংমল, রেস্তোরাঁয় গণজমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির কারণে মানুষ এখন ঘরে বসেই অর্ডার করছে।  আগে যেটা ছিল বাংলাদেশে শৌখিন জিনিসপত্রের অর্ডারই অনলাইনে বেশি হতো।  তবে করোনাকালে নিত্য দিনের পন্য অর্ডার করারও একটা ব্যাপক প্রবণতা তৈরী হয়েছে। বিভিন্ন জরিপ ও সুপারশপ সূত্রগুলো সেটাই জানাচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের সুবিধা হলেও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা।  বাংলাদেশে এখন বছরে এক হাজার কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হয় অনলাইনে৷ আর প্রতিদিন অনলাইনে ডেলিভারি দেয়া হয় ২০ হাজার অর্ডার৷ দেশে ওয়েবভিত্তিক অনলাইন শপ আছে এক হাজার৷ ফেসবুক ভিত্তিক আছে ১০ হাজারেরও বেশি। ভাবা যায়, কত বড় মার্কেট তৈরী হচ্ছে এই অনলাইনে।

অনলাইনে ব্যাংকিং:

করোনাভাইরাসের কারণে দেশের সার্বিক অর্থনীতি বিশেষ করে আর্থিক খাত ভয়াবহ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও অনলাইন ব্যাংকিংয়ের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ।  নানা দরকারে ব্যাংকে যাওয়াটা দীর্ঘদিনের অভ্যাস। সেখান থেকে অনেকদিন আগেই ব্যাংকগুলো অনলাইনে নানা সুবিধা দিলেও গ্রহণ করা হয়নি তেমন। তবে এই করোনাকালে ঘরবন্দি আর সামাজিক দূরত্বের বদৌলতে মানুষ অনলাইন ব্যাংকিং এর দিকেও ঝুঁকেছে। ব্যাংকের লম্বা লাইনে না দাড়িয়ে সময় বাঁচিয়ে হাতের ফোনটা দিয়েই যে সেরে ফেলা যায় সেই কাজগুলো।

অনলাইন পড়াশোনা:

মূলত সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার লক্ষ্যে বিশ্বের অন্যসব দেশের মতো বাংলাদেশেও নেওয়া হয় এমন সিদ্ধান্ত। তবে কীভাবে চলছে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা? সেক্ষেত্রে একমাত্র ভরসা প্রযুক্তির ব্যবহার। অর্থাৎ অনলাইন স্কুলিং বা হোম স্কুলিং। এর আবার রয়েছে অনেক প্লাটফর্ম। লাইভ ক্লাস করতে গুগলের হ্যাংআউট/জুম/স্কাইপে সহজেই ব্যবহার করা যায়। আবার ফেসবুক লাইভ করেও ক্লাস নিয়ে নেওয়া যাবে। এতে অবশ্য সুবিধাও রয়েছে। যারা লাইভে আসতে পারবে না, তারা পরবর্তীতে রেকর্ড করা ভিডিও দেখে নিতে পারবে। এ ছাড়া ইমো বা হোয়াটসঅ্যাপও ভালো সমাধান। বিশ্ববিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক, ‘এ’ লেভেল এবং ‘ও’ লেভেলের ছাত্রছাত্রীরা অনলাইন স্কুলিংয়ে অভ্যস্ত হলেও মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীরা কিছুটা অনভ্যস্ত। বাংলাদেশ সরকার প্রান্তিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের জাতীয় টেলিভিশনের মাধ্যমে পড়াশোনার ব্যবস্থা করেছে।

অনলাইনে বিনোদন:

বিনোদন জগতের  রুপরেখাই যেন পাল্টে গেল এই করোনাকালে।  মানুষ প্রচুর সিনেমা সিরিজ দেখেছে এই ঘরবন্দি অবস্থায়। আর দেশি বিদেশি অনলাইন প্লাটফর্মগুলোর ভিউয়ার্স রিপোর্ট দেখলে তাজ্জব বনে যেতে হয়। অন্তপক্ষে ৫০ শতাংশ বেশি সাবস্ক্রাইবার বেড়েছে তাদের। নেটফ্লিক্স,  অ্যামাজান, হইচইয়ে এই ঘরবন্দি অবস্থায় ঢু মারেনি এমন দর্শক পাওয়া দুস্কর। দেশি ওয়েব সাইটগুলোও প্রচুর দেখেছে মানুষ। আর তাতে যে অভ্যাসটা হয়েছে বিনোদনের আসছে দিনের নতুন প্লাটফর্মের সঙ্গে একটা বড় অংশ পরিচিত হলো।  সিনেমা হলে আরো অনেকটা দিন মানুষ যাবে না সেটাই  স্বাভাবিক। আর এই সময়ে বিনোদন মানে অনলাইনই।   

বাড়িতে বসে অফিস:

ক্ষুদ্র অনেক শিল্পের জন্য অফিস নেওয়াটা বড় ধরণের রিস্ক। এত টাকা অফিস ভাড়া ও মেইনটেনেন্স খরচ করে ব্যবসা করাটা কঠিন সাধ্য।  সেক্ষেত্রে এই করোনাকাল আমাদের নতুন অভ্যাস তৈরী করলো।  করোনার প্রকপে বিশ্বজুড়ে অফিস-আদালতে তালা ঝুলছে।  ইতিমধ্যে অনেক টেক কোম্পানি তাদের সকল কাজ বাড়িতে বসে করার নির্দেশনা দিয়েছে । সাধারণত যুক্তরাজ্যে ১৫ লাখ মানুষ ঘরে বসে কাজ করেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রভাবে সমগ্র বিশ্বে ঘরে বসে অফিসের কাজকর্ম সেরে নেওয়াদের তালিকা বাড়ছে।  বাংলাদেশেও প্রায় সকল প্রতিষ্ঠানের কার্যকলাপ বাড়িতে বসেই সেরে নিচ্ছে মানুষ । তবে অনেক সরকারি অফিস কাজের তাগিদে খোলা রাখতে হচ্ছে । বাড়ি থেকে কাজের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো যোগাযোগ।  পাশাপাশি ভাবনায় পরিবর্তন আনুন।  শুয়ে শুয়ে কাজ নয় এবং বাড়ির সদস্যদের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়ে অফিসের কাজটা করার চিন্তাভাবনা থাকতে হবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭