ইনসাইড আর্টিকেল

বান্দার পাপ মোচনে তওবার যত গুরুত্ব

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/05/2020


Thumbnail

তওবা একটি আরবি শব্দ। যার অর্থ প্রত্যাবর্তন বা ফিরে আসা। পবিত্র কোরআন ও হাদীসে শব্দটি আল্লাহর নিষেধকৃত বিষয়গুলো ত্যাগ করে তার নির্দেশিত দিকে ফিরে আসা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। ইসলামে তওবা বলতে নিজের কৃত পাপের জন্য অনুতপ্ত, ক্ষমা প্রার্থনা ও তা পরিত্যাগের সংকল্পকে বোঝায়। তওবা ব্যতিরেকে কবিরা গুনাহ মাফ হয় না। যে ব্যক্তির তওবার পর পাপকর্মের পুনরাবৃত্তি হয় না, তাকে বলে তওবাতুন নাসুহা বা খাঁটি তওবা।

শরীয়ত মতে, বান্দা তওবা করলে মহান রাব্বুল আলামীন তা গ্রহণ করেন। আলেম গণ এ বিষয়ে একমত যে, যদি কোনো ব্যক্তি তার কৃত পাপের জন্য অনুতপ্ত না হয় বা তা পরিত্যাগের ইচ্ছা না করে, তাহলে তার মৌখিক তওবা উপহাস ছাড়া আর কিছু নয়। মৌখিক তওবা প্রকৃত তওবা নয়। আন্তরিক তওবার কিছু শর্ত রয়েছে। হযরত আলী (রা.) তওবা’র ক্ষেত্রে ছয়টি বিষয়ের কথা বলেন। এগুলো হলঃ নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হওয়া, অনাদায়ী ফরয/ওয়াজিব ইবাদতসমূহ আদায় করা, অন্যের সম্পত্তি/অধিকার নষ্ট করে থাকলে তা ফেরত দেয়া, শারীরিক বা মৌখিকভাবে কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে ক্ষমা চওয়া, ভবিষ্যতে পাপকাজ পরিত্যাগের দৃঢ় সংকল্প করা, আল্লাহর আনুগত্যে নিজেকে সমর্পণ করা।

যদি কোনো গুনাহ আল্লাহ সুবানাহুতায়ালা মাফ করে দেন, তাহলে তার হিসাব দিতে হবে না। নবী করীম (সা.) বলেন, গুনাহ থেকে তওবাকারী ব্যক্তি হচ্ছে ওই ব্যক্তির মতো, মনে হয় যে তাঁর কোনো গুনাহই নেই। সুতরাং সত্যিকার তওবা যদি আল্লাহ সুবানাহুতায়ালার কাছে আপনি করে থাকেন, তাহলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আপনার এই তওবা কবুল করবেন। তওবা কবুল হলে আপনার গুনাহ একেবারেই মুছে যাবে।

আল্লাহ সুবানাহুতায়ালা যাঁদের তওবা কবুল করে থাকেন, তাঁদের গুনাহসমূহকে আল্লাহ সুবানাহুতায়ালা মিটিয়ে দেন, মুছে দেন। সুতরাং আল্লাহতায়ালা যাঁদের তওবা কবুল করেন, তাঁদের গুনাহগুলোকে একেবারে মিটিয়ে দেন। শুধু তাই করেন না, বরং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁদের যে গুনাহগুলো আছে, সেগুলো পুণ্যের কাজে পরিপূর্ণ করে দেন। সুতরাং কেয়ামতের দিন প্রশ্নের বা জবাবদিহিতার মুখোমুখি আর হতে হবে না।

কিন্তু সেই তওবাটুকু আপনাকে জানতে হবে। সেই তওবা সত্যিকার তওবা হতে হবে, যেই তওবার কথা নবী করীম (সা.) আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। এই তওবার কথা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন, হে ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে তওবা করো একেবারেই নিষ্কলুষ তওবা করো যে তওবার মধ্যে কোনো ধরনের কলুষতা নেই, কোনো ধরনের কৃত্রিমতা নেই। এমন অকৃত্রিম তওবা যদি করতে পারো, খাঁটি তওবা করতে পারো, তাহলেই সেটা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এবং আল্লাহ সুবানাহু তায়ালা সেই তওবার মাধ্যমে তোমাদের যেই গুনাহগুলো আছে, সেই গুনাহগুলোকে ক্ষমা করে দেবেন।

তওবার কারণে আল্লাহ তোমাকে তার আনুগত্য করা সহজ করে দিবেন। সেইসাথে নেক কাজ করার তওফীক ও সৌভাগ্য লাভ হবে। গুনাহের পরিণতি হল, গুনাহ মানুষকে বঞ্চিত করার অভিবাকত্ব করে এবং লাঞ্ছনা ও বঞ্চনার দিকে ঠেলে দেয়। গুনাহতে আবদ্ধ লোককে আল্লাহর আনুগত্যের পথে চলা ও আল্লাহর দীনের খেদমতে অগ্রসর হতে গুনাহ বারণ করে। গুনাহের বোঝা ভারি হলে সকল প্রকার নেক আমল তার জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। তার জন্য আর কোন নেক আমল করা সহজ হয় না ইবাদত বন্দেগীতে সে আর কোন উৎসাহ পায় না। আর সব চেয়ে বিপদজ্জনক বিষয় হল, যারা সব সময় গুনাহে লিপ্ত থাকে তাদের অন্তর কালো হয়ে যায়। ফলে তারা অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। অন্তর ভাল মন্দের বিচার করতে অক্ষম  হয়ে যায়। তাদের অন্তর পাথরের চেয়েও শক্ত হয়ে যায়। ফলে কোন ভাল কাজ তার অন্তর কবুল করে না।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭