ইনসাইড আর্টিকেল

দেশ ভেদে ঈদ পালনে যত ভিন্নতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 24/05/2020


Thumbnail

ঈদ অর্থ আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। ঈদ মানেই উৎসব। মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব এটি। কারণ এই একটি মাত্র উৎসব ধনী গরীব নির্বিশেষে সারা বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হয়। উৎসব উদযাপনের ব্যাপারটা যেন একেবারেই নিজের পছন্দমতো হতে হয়। পৃথিবীর সকল মুসলিম বা অমুসলিম দেশে বেশ আনন্দঘন উৎসব আমেজের মধ্যে দিয়ে পালিত হয় ঈদের এই খুশির দিনটি। তবে যে কোনো উৎসবের সঙ্গেই মিশে থাকে প্রতিটি দেশের নিজস্ব সংস্কৃতি, আচার-অনুষ্ঠান। তাই চলুন আনন্দের এই ঈদ পালনে দেশভেদে যত ভিন্নতা সেই সম্পর্কে জেনে নেই।

ভারত  

ভারতীয়দের ঈদ সংস্কৃতি অনেকটা আমাদের মতো। তবে খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে কিছুটা ব্যতিক্রমতা লক্ষ্য করা যায়। সেভিয়া মিষ্টিটি ছাড়াও নানা পদের কাবাব, নেহারি, হালিমসহ নানা রকমের মুখরোচক খাবারে সরগরম হয়ে থাকে ভারতের প্রতিটি ঘর। আরেকটি বিষয়, নতুন সিনেমা মুক্তি না পেলে ভারতীয়দের কাছে ঈদই যেন পানসে মনে হয়।

আফগানিস্তান

আলোচিত মুসলিম দেশ আফগানিস্তানে একটু ভিন্নভাবে ঈদ পালন করা হয়। দেশটিতে ঈদ উদযাপনে ডিম যুদ্ধের আয়োজন করা হয়। পুরুষদের জন্য খোলা কোনো ময়দানে ঈদের দিন ডিম যুদ্ধের আয়োজন করা হয়। সেখানে তারা পরস্পরের দিকে সেদ্ধ করা ডিম ছুড়ে মারে। এমনকি অনেক সময় তালেবানদের আক্রমণের সময়ও তাদের ঈদের দিনের ঐতিহ্যগত ডিম যুদ্ধ থামেনি।

সৌদি আরব

সৌদি আরবে ঈদ পালনে খুব আন্তরিকতা লক্ষ্য করা যায়। বাড়ির সামনে কম্বল বিছিয়ে বসে সবাই তাদের রান্না করে। খাবার তাদের প্রতিবেশি কিংবা পথচারীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে খায়। শহরজুড়ে শিশুদের বিনোদনের জন্য আতশবাজির খেলা দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়।

মিসর

সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানের দেশ মিসরে ঈদ আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়। টানা চারদিন ব্যাপি সেখানে ঈদ পালন করা হয়ে থাকে। উৎসবের প্রাণ হয়ে থাকে মজাদার সব মাছের আয়োজন। ঐতিহ্যবাহী খাবার ফাতা, কাহক ছাড়া মিসরীয়দের ঈদ একেবারেই জমে না।

তুরস্ক

তুরস্ক বিশ্ব মুসলমানদের ইতিহাসে অত্যন্ত পরিচিত, সমৃদ্ধ এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ। ঈদকে তুরস্কে ‘সেকের বায়রামি’ বলে। এই দিনটিকে তারা উৎসর্গ করে বহুবিধ ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্নের নামে। বাচ্চারা প্রতিবেশি, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের বাসায় বেড়াতে যায় আর ভালোবাসা ও আশীর্বাদের নিদর্শন স্বরুপ তাদের পাতে তুলে দেয়া হয় টার্কিশ ডিলাইট এবং বাকলাভার মতো মজাদার সব খাবার।

ইরাক

রমজান এবং ঈদের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিটি উৎসবে ইরাকিরা বেশি গুরুত্ব দেয় খেজুরের উপর। ক্লাইচা নামের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার ইরাকে খুব প্রচলিত যা না থাকলে ইরাকিদের যেকোনো অনুষ্ঠান অসম্পূর্ণ রয়ে যায়। ক্লাইচা মূলত এক ধরণের কুকি যা বাদাম, খেজুর এবং গুলকন্দ দিয়ে বানানো হয়। যেহেতু এতে খেজুর রয়েছে, ঈদ-উল-ফিতরে ইরাকিদের কাছে এর মহিমা কতোটা বেশি হতে পারে তা বলাই বাহুল্য।

চীন

ঈদে চীনের মুসলিম, অমুসলিম সকলের জন্য ২/৩ দিনের সরকারি ছুটি থাকে। ঈদের নামাজ শেষে চীনা মুসলিমরা দরিদ্রদের মধ্যে খাবার বিলি করে। আর তাদের সংস্কৃতির সাথে মিল রেখে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য ও উৎসব আয়োজন করে থাকে।

উত্তর আমেরিকা

উত্তর আমেরিকার দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় ঈদের নামাজ হয় ইসলামি কেন্দ্র, খোলা মাঠ, কনভেনশন হল বা মসজিদে।  মজার বিষয় হল সেখানে, বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির পোশাক পরিধান করে ঈদগাহে আসে। তাছাড়া, বাচ্চাদের মধ্যে উপহার বিতরণ, স্পাইসি খাবার রান্না, দরিদ্র লোকজনদের মাঝে খাবার বা অর্থ বিলির মাধ্যমে ঈদ উদযাপন করা হয়।
ঈদ মুসলমানদের মধ্যে ধনী-দরিদ্র, বর্ণ-গোত্র, ভাষা, ভৌগোলিক অবস্থানগত পার্থক্য ও উঁচু-নিচুর ভেদাভেদে ভুলিয়ে দেয়। সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসব উদযাপনের মধ্যে দিয়ে বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় হয়। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭