ইনসাইড আর্টিকেল

ঈদুল ফিতরের যত আনুষ্ঠানিকতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 24/05/2020


Thumbnail

ঈদ একটি ইবাদত। আনন্দের মাধ্যমেও যে ইবাদত পালন করা যায়, তার একটি অন্যতম উদাহরণ হল ঈদ। ঈদে আনন্দ প্রকাশ করার বিষয়ে কোরআনে বলা হয়, বল, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত, সুতরাং এ নিয়েই যেন তারা খুশি হয়। এটি যা তারা জমা করে তা থেকে উত্তম।

পবিত্র ঈদুল ফিতর আমাদের জন্য একটি বিরাট নিয়ামত। কিন্তু আমরা এ দিনকে নিয়ামত হিসাবে গ্রহণ করি না। এ দিনে অনেক কাজ আছে যার মাধ্যমে আমরা আল্লাহ’তালার নিকটবর্তী হতে পারি। কিছু করণীয় দিক মেনে চললে ঈদ উদযাপন একটি ইবাদতে পরিণত হতে পারে। তাই চলুন এমন কিছু করণীয় সম্পর্কে জেনে নেই।

গোসল করা

ঈদের দিন গোসল করার মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিছন্নতা অর্জন করা প্রয়োজন। ইবনে উমার (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদীস থেকে জানা যায়, নবী করীম (সা.) ঈদুল ফিতরের দিনে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে গোসল করতেন।

নামাজ আদায়

ঈদের দিনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ঈদের নামাজ আদায় করা। প্রকৃতপক্ষে একজন ঈমানদার বান্দা নামাজ আদায়ের মাধ্যমে বেশি আনন্দিত হয়ে থাকে। হাদিসে শরীফে আছে, নবী করিম (সা.) ঈদুল ফিতরের দিনে বের হয়ে দু রাকাত ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। এর পূর্বে ও পরে অন্য কোনো নামাজ আদায় করেননি।

ঈদগাহে যাওয়া

ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া হলো সুন্নত। হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, সুন্নত হলো ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া।

খাবার গ্রহণ

ঈদুল ফিতরের দিনে ঈদের নামাজ আদায়ের পূর্বে খাবার গ্রহণ করা এবং ঈদুল আজহার দিন ঈদের সালাতের পূর্বে কিছু না খেয়ে নামাজ আদায়ের পর কোরবানির গোশত খাওয়া সুন্নত। হজরত বুরাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ঈদুল ফিতরের দিনে না খেয়ে বের হতেন না, আর ঈদুল আজহার দিনে ঈদের সালাতের পূর্বে খেতেন না।

পোশাক পরিধান

উত্তম জামাকাপড় পরিধান করে ঈদ উদযাপন করার বিষয়ে জানা যায় হাদীস থেকে। ইবনুল কায়্যিম বলেন, নবী করিম (সা.) দু ঈদেই ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে সর্বোত্তম পোশাক পরিধান করতেন।

খুতবা শ্রবণ

ঈদের খুতবা বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে। এতে ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়ে থাকে। হজরত আবদুল্লাহ বিন সায়েব (রা.) থেকে বর্ণিত হাদীস থেকে জানা যায় তিনি বলেন, আমি নবী করিম (সা.) এর সঙ্গে ঈদ উদযাপন করলাম। যখন তিনি ঈদের নামাজ শেষ করলেন, বললেন, আমরা এখন খুতবা দেব। যার ভালো লাগে সে যেন বসে আর যে চলে যেতে চায় সে যেতে পারে।

ফিতরা দেয়া

রমজান মাসে সিয়ামের ত্রুটি-বিচ্যুতি পূরণার্থে এবং অভাবগ্রস্তদের খাবার প্রদানের উদ্দেশ্যে ঈদের সালাতের পূর্বে নির্ধারিত পরিমাণের যে খাদ্য সামগ্রী দান করা হয়ে থাকে, শরিয়তের পরিভাষায় তাকেই জাকাতুল ফিতর বা ফিতরা বলা হয়। হাদিসে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) ঈদের নামাজে যাওয়ার পূর্বে ফিতরা আদায় করার আদেশ দিলেন।

অভাবীকে খাওয়ানো

ইয়াতিমের খোঁজ-খবর নেয়া, তাদেরকে খাবার খাওয়ানো এবং সম্ভব হলে তাদের নতুন কাপড়ের ব্যবস্থা করে দেয়া। এটা ঈমানদারদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। পবিত্র কোরআনে কারিমে বলা হয়েছে, তারা খাদ্যের প্রতি আসক্তি থাকা সত্ত্বেও মিসকিন, ইয়াতিম ও বন্দীকে খাদ্য দান করে।

সেইসাথে নিজ পরিবার পরিজনের সাথে সময় অতিবাহিত করা, আত্মীয় স্বজন, মাতা পিতার সাথে দেখা করা ও খোঁজ-খবর নেয়া, পাড়া প্রতিবেশী, গরীব অসহায় নির্বিশেষে সকলের খোঁজ খবর নেয়া ও কুশল বিনিময় করা, সম্ভব হলে পরস্পরকে দাওয়াত দেয়া, আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা, ঝগড়া, বিবাদ, কলহ, হিংসা, বিদ্বেষ ভুলে সবার সাথে মোলাকাত আলিঙ্গন ও একাকার হয়ে যাওয়া।

যা বর্জনীয়

ঈদ মুসলিম জাতির গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা ঈদ পালনে ইসলাম সমর্থন করে না এমন সব কাজ করছি। যা আমাদের বর্জন করা দরকার। ঈদে বর্জনীয় বিষয়গুলো হলো- জুয়া, মদ, ব্যভিচার ও মাদকদ্রব্য সেবন, নারী-পুরুষ একে অপরের বেশ ধারণ, নারীদের অশালীন পোশাকে রাস্তায় বের হওয়া, নারীদের সাথে অবাধে দেখা-সাক্ষাৎ, ঈদের নামাজ আদায় না করে কেবল আনন্দ ফুর্তি করা, মানুষকে কষ্ট দেয়া, ঈদের দিনকে কবর জিয়ারতের জন্য নির্দিষ্ট করা, জামাতের সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায়ে অলসতা করা, রোজা পালন, বিজাতীয় আচরণ, বেহুদা কাজে সময় ব্যয় করা, ঈদে কেনাকাটার নামে অপচয় অপব্যয় না করা ইত্যাদি কাজকে বর্জন করা উচিত। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭