ইনসাইড আর্টিকেল

হুরপরি নিয়ে যা বলা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 25/05/2020


Thumbnail

হুর হল হাওরা শব্দের বহুবচন। আরবি ভাষায় হাওরা শব্দের অর্থ নারীসঙ্গী। হুর শব্দের অর্থ শুধু সঙ্গী নয়। যা নর-নারী উভয়ের জন্য ব্যবহার করা যায়। বরং হুর শব্দের অর্থ হবে বহু নারীসঙ্গী। পবিত্র কোরআনের সূরা আর রাহমানে হুর শব্দের বিশেষণ এনেছেন মাকসুরাত। এই শব্দটিও একটি স্ত্রীবাচক বহুবচন। এই বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়, তাদের (হুর) করেছি কুমারি, সোহাগিনী, সমবয়ষ্কা। সূরা আন নাবাতে বলা হয়, মুত্তাকিদের জন্য রয়েছে সাফল্য, উদ্যান, আঙ্গুর এবং স্ফীত স্তনবিশিষ্টা সমবয়সী বালিকা।

পবিত্র কোরআনে জান্নাত লাভকারী মানুষদের পুরস্কারের বিবরণ দিতে যেয়ে আল্লাহতায়ালা যে সব হুরের কথা বলেন, তারা হবে মানুষ সাদৃশ্য জান্নাতি নারী। সুস্থ, পরিচ্ছন্ন ও শালীন রুচিবোধ থেকে এ কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যেহেতু হুররা জান্নাতি নারী হবে তাই পুরস্কারস্বরূপ তাদের পাবে একমাত্র জান্নাত লাভকারী পুরুষরা।

ঐ সমস্ত হুর এবং স্ত্রীগণ শুধু কুমারীই হবে না বরং এমন অবস্থায় থাকবে যে, জান্নাতীদের স্পর্শের পূর্বে কোনো মানুষ অথবা জ্বীন তাদেরকে স্পর্শ করে নি বা দেখেও নি। এই বিষয়ে সূরা আর রাহমানে বলা হয়, আলামীন নিজেই বলেনঃ তাদেরকে (জান্নাতীদের) পূর্বে কোনো মানুষ অথবা জ্বীন স্পর্শ করে নি। হুরেরা হবে আবরণে রক্ষিত উজ্জ্বল মণি-মুক্তার মতো সুন্দরী। তাদের সৌন্দর্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে কোরআনে বলা হয়, হুরের উদাহরণ হলো, আবরণে রক্ষিত মুক্তার মতো সুন্দর ও উজ্জ্বল এবং আয়তলোচনা। অন্য আরেকটি সূরায় বলা হয়, তাদের (হুরদের) চোখ সর্বদাই অবনত (পবিত্রা যারা অন্যের দিকে তাকায় না), সুন্দর চোখ বিশিষ্ট এবং তারা যেন ডিমের আবরণের ভেতর সুপ্ত উজ্জ্বল।

বুখারি শরীফে বর্ণিত আমাদের প্রিয় নবী করীম (সা.) বলেন, জান্নাতীগণের স্ত্রীদের মধ্যে থেকে কোনো একজন স্ত্রী যদি পৃথিবীর দিকে উঁকি মেরো দেখতো তবে আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী সবকিছু আলোকিত হয়ে যেতো এবং গোটা পৃথিবী সুগন্ধে ভরে যেতো। তার মাথার উড়নাটিও পৃথিবী এবং পৃথিবীর সমস্ত বস্তুর চেয়ে দামী। অন্য আরেকটি বর্ণনায় এসেছে, হুরেরা অত্যন্ত উজ্জ্বল সুন্দরী, রূপবতী, লাবণ্যময়ী, সুন্দর ও বড় বড় চোখের অধিকারিণী হবে, কাপড়ের মধ্য দিয়ে তাদের হাড়ের ভেতরের মজ্জা দেখা যাবে, তাদের দেহ আয়নার মতো স্বচ্ছ হবে এবং যে কেউ নিজের চেহারা তাতে দেখতে পাবে।

আনাস ইবন মালেক থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেন, মোমিনকে জান্নাতে ১শত নারীর সাথে যৌনমিলনের শক্তি দেয়া হবে। সোনার খাটে মুখোমুখি হয়ে হেলান দিয়ে বসবে বলে জানা যায়। সূরা ওয়াকিতে বলা হয়, জান্নাতীরা সোনার খাটে পরস্পর মুখোমুখি হয়ে হেলান দিয়ে আরামের সাথে আলাপচারিতা করবে। একই বিষয়ে সূরা ইয়াসিনেও বলা হয়। বলা হয়, তারা এবং তাদের স্ত্রীরা ছায়ার মধ্যে খাটে হেলান দিয়ে বসবে। সেখানে তাদের জন্য রয়েছে ফল-মুল এবং তারা যা চাবে সবই ।

হাদীস থেকে হুরদের প্রাণ মাতানো সংগীতের ক্ষমতা সম্পর্কেও জানা যায়। এই বিষয়ে তিরমিযী শরীফে বর্ণিত এক হাদীস থেকে জানা যায় নবী করীম (সা.) বলেন, জান্নাতের মধ্যে হুরদের একটি সমষ্টি থাকবে, যারা এমন মধুর সুরে গান গাবে, আল্লাহর কোন সৃষ্টি এত সুন্দর কণ্ঠের গান আর কোনো দিন শোনে নি। তারা এ বলে গাইবে, আমরা চিরস্থায়ী, কোন দিন খতম হবো না,আমরা চিরসুখী, কোনদিন দুঃখী হবো না। আমরা চিরসন্তুষ্ট, কোনদিন অসন্তুষ্ট হবো না, সুসংবাদ, আমরা যাদের জন্য এবং যারা আমাদের জন্য। তাই কোনো হুরের লোভে নয়। আবার হুর না পাওয়ায় আশাহত হয়েও নয়- বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় ঈমানের সঙ্গে সৎ কর্মে আত্মনিয়োগ করাই মানুষের কর্তব্য।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭