ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগে নতুন নেতৃত্বের পদধ্বনি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 25/05/2020


Thumbnail

করোনা সঙ্কটে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা ছন্দ হারিয়ে ফেলেছেন আবার অনেক নেতা পাদপ্রদীপে এসেছেন, জনগণ এবং দলের নেত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। বিশেষ করে নেতা এবং তৃণমূলের কাছে আস্থাভাজন হয়েছেন। সঙ্কটকালীন সময়ে যারা জনগণের পাশে থাকে, কর্মীদের পাশে থাকে তাঁরাই আলোচিত হন এবং তাঁদেরকে ভবিষ্যতের নেতা হিসেবে ধরা হয়। আওয়ামী লীগে অবশ্য কাউন্সিল অধিবেশন হয়েছে মাত্র কিছুদিন আগে এবং কাউন্সিল অধিবেশনে দ্বিতীয়বারের মতো দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে যে দ্বিতীয়বারের পর ওবায়দুল কাদেরের আর সাধারণ সম্পাদক হওয়ার আর কোন সুযোগ নেই এবং এরপরে আগামী কাউন্সিলে আওয়ামী লীগ নতুন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করবে। সেটা অনেক দূরের ব্যাপার হলেও এখন থেকেই আগামী সাধারণ সম্পাদক কে হতে পারে সেটা নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয় এবং এটাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির তাৎপর্যপূর্ণ দিক। এই বিবেচনায় যারা বেশি জনবান্ধব, যারা বেশি কর্মীবান্ধব এবং যারা বেশি তৃণমূলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তাঁদেরকেই এগিয়ে রাখা হয়। তাছাড়া এবারের করোনা সঙ্কটে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, হৃদরোগের অসুস্থতার পর ওবায়দুল কাদেরের চলাফেরা, দায়িত্ব পালন সবই সীমিত করা হয়েছে এবং তিনি এই করোনা সঙ্কটের পুরোটা সময় ধরে ঘর থেকে বের হননি। এটা তাঁর নিজের দোষ নয়, এটা স্বাস্থ্যগত বাস্তবতা এবং এই কারণেই আওয়ামী লীগে নতুন নেতৃত্বের সূচণা হয়েছে। এই করোনা সঙ্কটে আওয়ামী লীগে কয়েকজন নেতা সামনে চলে এসেছেন যারা বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং কর্মকাণ্ডে তৃণমূল, জনগণ এবং নেতাকর্মীদের নজরে এসেছেন। এই কারণে আওয়ামী লীগে নতুন নেতৃত্বের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। নতুন নেতৃত্বে কারা কি অবস্থানে আছে একটু দেখে নেয়া যাক-

ড. আব্দুর রাজ্জাক

ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং এবারের করোনা সঙ্কটে যাঁদেরকে সবথেকে বেশি সপ্রভিত এবং ব্যস্ত দেখা গেছে তাঁদের মধ্যে ড. আব্দুর রাজ্জাক অন্যতম। ড. আব্দুর রাজ্জাক মন্ত্রণালয়ের কাজের ক্ষেত্রে যেমন দৃঢ়তা দেখিয়েছেন। সবসময় সামনে দেখা গেছে। তেমনি দলের নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ এবং কৌশল নির্ধারণেও তাঁকে ব্যস্ত দেখা গেছে। ড. আব্দুর রাজ্জাক ধান উত্তোলন এবং কৃষকরা যেন ধান-চালের ন্যায্য মূল্য পান তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছেন। বিশেষ করে হাওড় এলাকায় যখন ধান কাটা নিয়ে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছিল, তখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সেখানে সহায়তা পাঠানো এবং ধান কাটা যেন নির্বিঘ্নে হয় তা নিশ্চিত করতে তিনি কাজ করেছেন। পরবর্তী পর্যায়ে কৃষকরা যেন ন্যায্য মূল্য পায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সার্বক্ষণিকভাবে যোগাযোগ রেখেছেন। যেহেতু আওয়ামী লীগ একটি কৃষি বান্ধব দল এবং কৃষকরাই আওয়ামী লীগের প্রাণশক্তি, সেজন্য কৃষিমন্ত্রী হিসেবে ড. আব্দুর রাজ্জাকের এই পদক্ষেপ কর্মীদের মাঝে সাড়া ফেলেছে এবং তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধান কাটায় অংশগ্রহণ করেছে এবং সরকারি কার্যক্রমের সঙ্গে দলকে সম্পৃক্ত করেছেন।

জাহাঙ্গীর কবির নানক

জাহাঙ্গীর কবির নানক মন্ত্রী বা এমপি নন। কিন্তু করোনা সঙ্কটের সময়ে তিনি আওয়ামী লীগের ঘরে বাতি জ্বালিয়ে রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা যখন ঘরে ঢুঁকে গেছেন তখন তিনি অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতাদের নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যলয়ে নিয়মিত বৈঠক করে সারাদেশের মনিটরিং করা, ত্রাণ তৎপরতাসহ নানারকম কার্যক্রম কিভাবে হচ্ছে সে ব্যাপারে তদারকি করার উদ্যোগ নেন। সারাদেশের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগযোগ করেন এবং এই যোগাযোগের মাধ্যমে তিনি নিজেকে পুনরায় প্রমাণ করেন। এর মাধ্যমে তিনি নতুন নেতৃত্বের বড় দাবিদার হয়েছেন।

ড. হাছান মাহমুদ

ড. হাছান মাহমুদ একাধারে মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক। এবার তিনি পদোন্নতি পেয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক হয়েছেন। করোনা সঙ্কটের সময় যাঁদেরকে বেশি সপ্রতিভ দেখা গেছে, উজ্জ্বল দেখা গেছে তাঁদের মধ্যে ড. হাছান মাহমুদ অন্যতম। একদিকে যেমন তিনি গণমাধ্যমের বিভিন্ন সঙ্কট নিয়ে কথা বলেছেন, অন্যদিকে তেমনি তিনি বিরোধী দলের বিভিন্ন সমালোচনার জবাব দিতে কার্পণ্য করেননি। বিরোধী দলের বক্তব্য খণ্ডন করার ক্ষেত্রে তিনি মূখ্য কুশীলভের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এর ফলে তিনি আওয়ামী লীগের অন্যতম মুখপাত্রে পরিণত হয়েছেন।

এই তিনজনই নিজ যোগ্যতা এবং গুণে করোনা সঙ্কটকালীন সময়ে পাদপ্রদীপে এসেছেন এবং আগামী সময়ে যদি তাঁরা তাঁদের আদর্শ এবং নীতি নিয়ে টিকে থাকতে পারেন তাহলে অবশ্যই তাঁরা বিবেচিত হতে পারেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭