নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 28/05/2020
লিভ টুগেদার ইংরেজি শব্দ। বাংলা অর্থ হল একসঙ্গে থাকা। কিন্তু পারিভাষিক দিক থেকে লিভ টুগেদার শব্দটিকে একটা বিশেষ অর্থে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিয়ের আগে গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড স্বামী স্ত্রীর মত একসঙ্গে থাকাকে লিভ টুগেদার বলে। এটি আমাদের সমাজে নিষিদ্ধ। তবে পাশ্চাত্য দেশগুলোতে এই রীতিটি মহামারি আকারে রয়েছে। বিয়ের আগেই বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড একসঙ্গে থাকতে শুরু করে। কিন্তু মানুষটির সাথে মনের মিল হবে কি না তা না থেকে বোঝা যায় না। তাই বিয়ের আগেই তারা প্রিয় মানুষটির সঙ্গে থাকার অভ্যাস গড়ে তোলে। মনের মিল হয়ে গেলে তারপরে তারা বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। পাশ্চাত্য দেশগুলোতে এমনও দেখা গেছে যে ছেলেমেয়েসহ তারা বিয়ের আসরে বসেন।
বিয়ে বহির্ভূতভাবে পুরুষ ও নারীর একত্রে বসবাসকেই আমরা লিভ টুগেদার হিসেবে গণ্য করে থাকি। অবশ্য এখানে শারীরিক সম্পর্কের একটা বিষয়ও থাকে। ইউরোপ আমেরিকার অনেক দেশে লিভ টুগেদার আইনগত বৈধতা পেয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশে সমকামিতাও আইনগত বৈধতা পেয়েছে। আমাদের দেশেও কোনো আইনেই লিভ টুগেদারকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি। সত্যি করে বলতে গেলে এই বিষয়ে এখনো তেমন কোন আইনকানুন তৈরি হয়নি। অনেকেই বলে থাকেন রাজধানী ঢাকাতে আশঙ্কাজনকভাবে লিভ টুগেদারের হার বাড়ছে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে। অবশ্য আগে এই রকম ঘটনা শুধু উচ্চবিত্তের মধ্যে সীমিত থাকলেও এখনো তার বিস্তৃতি ঘটেছে। এখন অনেকেই এটাকে ফ্যাশন বা আধুনিকতার অনুষঙ্গ মনে করছেন। তবে এখনো পর্যন্ত এই বিষয়ে কোন আইন তৈরি হয়। তাই এটাকে নৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয়, অনাচার এবং ধর্মীয় দৃষ্টিতে পাপাচার হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
ভারতে লিভ টুগেদার বৈধ। এটা অনেকেই জানেন। কিন্তু দেশটির সর্বোচ্চ আদালত লিভ টুগেদারের ফলে জন্ম নেওয়া শিশু বৈধ বলেও উল্লেখ করেন। বলা হয়, বিয়ের বন্ধন নেই। তবু এক ছাদের নিচে স্বামী-স্ত্রীর মতো একসঙ্গে অনেক দিন ধরে বসবাস। এমন সম্পর্কের বেলায় সন্তান হলে তা বৈধ। একই সঙ্গে ওই জুটি পাবে স্বামী-স্ত্রীর মর্যাদা। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট লিভ-টুগেদার সম্পর্কের এমন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। বর্তমান সময়ে সমাজতাত্ত্বিকেরা অসংখ্য টার্ম বের করেছেন। জৈবিক পিতা (বাইয়োলজিক্যাল ফাদার), আদর্শিক পিতা (আইডিওলজিক্যাল ফাদার)। তাছাড়া, অভিভাবক দুই রকমের জৈবিক অভিভাবক আর আইনগত অভিভাবক। আমাদের দেশে বিয়ে-বহির্ভূত নারী-পুরুষের জীবন যাপন এখন পর্যন্ত সামাজিক অনাচার ও ধর্মীয় পাপাচার হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। আমাদের দেশে এমন জীবন যাপন আইনগত স্বীকৃতি পেলে সামাজিক মূল্যবোধ বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবে। যদিও আমাদের দেশে এটি আইনের দৃষ্টিতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়। তবুও আমাদের আর্থসামাজিক, ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে এ ধরনের জীবন যাপন অনাকাঙ্ক্ষিত। আইন কানুন, যুক্তি তর্ক কিংবা ভালো মন্দ যাই হোক না কেন? এখনো পর্যন্ত আমাদের দেশের সংস্কৃতি লোভ টুগেদার সমর্থন করছে না। সুতরাং এখানে যুক্তি তর্ক দিয়ে কিছু আসে যায় না।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭