ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

দুর্ধর্ষ যত গোয়েন্দা সংস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 29/05/2020


Thumbnail

গোয়েন্দা সংস্থা বা কোনো গুপ্তচরকে কল্পনা করলেই কেমন গা ছমছম করা অনুভুতি জেগে ওঠে। বর্তমানে বিশ্বে ক্ষমতাধর দেশগুলোর শক্তির অন্যতম উৎস হলো এই গোয়েন্দা সংস্থা বা ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি। কোনো দেশের নিরাপত্তার জন্যেও গোয়েন্দা সংস্থা কতটা দরকারী শ্রীলঙ্কার ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। বিশ্বের ক্ষমতাধর সব দেশই তাদের সীমানার ভিতর ও বাইরে কি ঘটছে তা জানার জন্য এই সংস্থাগুলোকেই কাজে লাগিয়ে থাকে। মানুষের দৃষ্টির অগোচরে গোয়ন্দারা কত দুর্ধর্ষ কর্মকাণ্ড সেরে ফেলে তা প্রায়ি খবরের শিরনাম হয়। এ নিয়ে নাটক সিনেমাও কম হয় নি। চলুন দেখে নিই বর্তমানে সারা বিশ্ব দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কোন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো-

মোসাদ (ইসরায়েল)

বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর একটি ইসরায়েলের মোসাদ। সংস্থাটি ১৯৪৯ সালে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বিবিসি’র চোখে বর্তমান বিশ্বের সেরা গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। অনেকে মনে করেন আইএস আল কায়েদাসহ যত জঙ্গি সংগঠন রয়েছে সবই এই মোসাদের সৃষ্টি।

আইএসআই (পাকিস্তান)

ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স হলো পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা। তারা যে দুর্ধর্ষ এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা আছে। তালেবান, জইশ আল ইসলামসহ উপমহাদেশের বেশকিছু জঙ্গিগোষ্ঠীকে তারা সরাসরি সহায়তা দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। বিবিসি তাদের সেরা গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় দুইয়ে রেখেছে তাদের।

এমআই৬ (ব্রিটেন)

ব্রিটিশদের এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল ১৯০৯ সালে। অথচ বিশ্ববাসী প্রথম তাদের সম্পর্কে জানতে পেরেছিল ১৯৯৪ এ। এই গোয়েন্দা সংস্থাটি প্রতি বছর সন্ত্রাস বিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য ২ দশমিক ৬বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করে। বিশ্বের বাঘা বাঘা অনেক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীদেরই প্রশিক্ষণ দিয়েছে ব্রিটিশরা। তাই গোয়েন্দা কর্মকাণ্ডে তারাই যে সেরা এটা বলা অপেক্ষা রাখে না। বিবিসি’র তালিকায় তারা আছে তিনে।

সিআইএ (যুক্তরাষ্ট্র)

১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। সন্ত্রাসবাদবিরোধী গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মধ্যে সর্বোচ্চ বাজেটে পরিচালিত হয় এই গোয়েন্দা সংস্থাটি। সিআইএ এর অসংখ্য গোয়েন্দা পৃথিবীর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে। বলা হয়, প্রায় ২১ হাজার গোয়েন্দা নিয়ে গঠিত সিআইএ বিশ্বের সবচেয়ে বড় গোয়েন্দা সংস্থা। গত শতাব্দীতে সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে বেশি তহবিলে পরিচালিত সন্দেহজনক মানব পরীক্ষাগুলি সিআইএ পরিচালনা করছিল। বিবিসির তালিকায় তারা আছে চারে।

বিএনডি (জার্মানি)

১৯৫৬ সালে যাত্রা শুরু করেছিল বিএনডি। সন্ত্রাসবাদ, ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের জন্য অবৈধ অস্ত্রের বিস্তার, প্রযুক্তির অবৈধ স্থানান্তর ও ব্যবহার, মানি লন্ডারিং এবং অবৈধ অভিবাসনের তথ্য সংগ্রহ করে থাকে তারা। ইরাকে আক্রমণের এক মাস আগে এই জার্মান গোয়েন্দা সংস্থাটি মার্কিন সামরিক বাহিনীকে বিভিন্ন তথ্য প্রদান করে সাহায্য করেছিল বলে জানা যায়।

র (ভারত)

১৯৬৮ সালে ভারত-চীন ও ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পরপরই ভারতের প্রধান গোয়েন্দা বাহিনী ‘র’ গঠিত হয়। সংস্থাটি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন পর্যবেক্ষণ করে থাকে এবং সেই সাথে ভারতের সন্ত্রাস বিরোধী কার্যক্রমে বিশাল ভূমিকা পালন করছে। বিবিসি সেরা গোয়েন্দা সংস্থার তালিকার ছয়ে রেখেছে র’কে। কিন্তু অনেক বিশ্লেষকই উপমহাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী গোয়েন্দা সংগঠন হিসেবে র’কেই আখ্যায়িত করে।

ডিজিএসই (ফ্রান্স)

বলা হয়, ফ্রান্সের সংস্থা ডিজিএসই কাজ করে একেবারে নিঃশব্দে। সিআইএ, র কিংবা মোসাদের মতো সংস্থাকে নিয়ে যতটা শোরগোল হয়। ডিজিএসই’কে নিয়ে তেমনটা কখনই হয়নি। কিন্তু সারা বিশ্বে গোপনে কী কী কাহিনী হচ্ছে তার সবই এই সংস্থাটির জানা বলে দাবি করেন অনেকে। বিবিসি’র সেরা গোয়েন্দা বাহিনীর তালিকায় তারা আছে সাতে। 

সিএসআইএস (কানাডা)

দি কানাডিয়ান সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসও অনেকটা ডিজিএসই’র মতোই। তারাও খুব কমই খবরের শিরোনাম হয়। কিন্তু দেশে এবং দেশের বাইরে সন্ত্রাসী তৎপরতা থেকে শুরু করে নিজেদের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে এমন প্রতিটি বিষয়ে ওয়াকিবহাল তারা।  

এএসইস (অস্ট্রেলিয়া)

অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রীয় সিক্রেট সংস্থা হিসেবে ১৯৫২ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।  তবে প্রথম তাদের সম্পর্কে বিশ্ব জানতে ১৯৮৩ সালে। সে সময় মেলবোর্নের শেরাটন হোটেলে একটি ব্যঙ্গ প্রশিক্ষণ মিশনে ব্যায়ামের জন্য হোটেলের স্টাফ এবং অতিথিরা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হলে এই সিক্রেট এজেন্সি পরিচিতি লাভ করে। যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ এবং ব্রিটেনের এমআই৬ এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে এএসইস। বিবিসি’র সেরা গোয়ান্দা বাহিনীর তালিকায় তারা আছে নয় নম্বরে।

এমএসএস (চীন)

১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থাটি চীনের সেন্ট্রাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের একটি অংশ। এটি তাইওয়ান, ম্যাকাও এবং হংকং এর মতো অঞ্চলে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অপারেশন পরিচালনার ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছে। তাদের অপারেশনের ব্যাপ্তি সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। বিবিসি এমএসএস’কে বিশ্বের শীর্ষ দশ গোয়েন্দা সংস্থার একটি হিসেবে মনে করছে।

বিবিসি তাদের ২০১৯ সালের সেরা গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় রাশিয়ার গোয়েন্দা দলকে স্থান দেয়নি। তবে ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের অনেকেই রুশ গোয়েন্দা সংস্থাকে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্ধর্ষ বলে মনে করা থাকেন।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭