কালার ইনসাইড

জন্মদিনে ড. ইনামুলের জানা- অজানা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 30/05/2020


Thumbnail

আজ বর্ণাঢ্য জীবনের ৭৭তম বছর পূর্ণ করে ৭৮ বছরে পা রাখলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণী অভিনেতা, নাট্যকার, নির্দেশক ও শিক্ষক ড. ইনামুল হক। ১৯৪৩ সালের ২৯ মে ফেনী সদরের মটবী এলাকায় জন্ম হয় তার। বাবার নাম ওবায়দুল হক ও মা রাজিয়া খাতুন।

লকডাউনের কারণে এবার নাট্যজন ড. ইনামুল হকের জন্মদিনের তেমন কোনো আয়োজন। তবে ভালোবাসার এই মানুষটিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন অনেকেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় জন্মদিনের শুভেচ্ছায় ভাসছেন তিনি।

ড. ইনামুল হকের পুরো পরিবারই নাটকের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন। তার দাম্পত্য সঙ্গী বরেণ্য নাট্যজন লাকী ইনাম। তাদের সংসারে দুই মেয়ে হৃদি হক (স্বামী লিটু আনাম) আর প্রৈতি হক (স্বামী সাজু খাদেম)। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই জন্মদিন কাটছে তার।

ফেনী পাইলট হাইস্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকার নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি এবং পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ থেকে তিনি অনার্স ও এমএসসি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে মানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি লাভ করেনন ড. ইনামুল হক।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি দীর্ঘ ৪৩ বছর শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত থাকার সময়ে দীর্ঘ ১৫ বছর রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং দুই বছর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডীন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

নটরডেম কলেজে পড়াশুনাকালীন সময়েই তিনি প্রথম মঞ্চে অভিনয় করেন। ফাদার গাঙ্গুলীর নির্দেশনায় তিনি ‘ভাড়াটে চাই’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন। ১৯৬৮ সালে বুয়েট ক্যাম্পাসেই ‘নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়’র যাত্রা শুরু হয়। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন তিনি। দলটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এই দলের হয়ে প্রথম তিনি মঞ্চে অভিনয় করেন আতাউর রহমানের নির্দেশনায় ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো’। এরপর এই দলের হয়ে ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’, ‘নূরুল দীনের সারা জীবন’সহ আরো বহু নাটকে অভিনয় করেন।

১৯৯৫ সালের তিনি এই দল থেকে বের হয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ‘নাগরিক নাট্যাঙ্গন’। দলটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে আজও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এই দলের হয়ে তিনি মঞ্চে অভিনয় করেন ‘জনতার রঙ্গশালা’,‘সরমা’সহ আরো বেশ কয়েকটি নাটকে। ২০০০ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘নাগরিক নাট্যাঙ্গন ইন্সটিটিউট অব ড্রামা’ নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান। এর অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

ইনামুল হক অভিনীত প্রথম টিভি নাটক মোস্তফা মনোয়ার পরিচালিত ‘মুখরা রমনী বরশীকরণ’। তার লেখা প্রথম নাটক ‘অনেকদিনের একদিন’ নির্মাণ করেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। দেশ স্বাধীনের পর বিটিভির প্রথম নাটক ‘বাংলা আমার’ এবং একুশের প্রথম নাটক ‘মালা একশত মালঞ্চের’র তারই লেখা ছিলো। নিজের জন্মদিন প্রসঙ্গে ইনামুল হক বলেন ,‘ছোট্ট এই জীবনে অনেক কিছুই করার ছিলো। কিন্তু পারলামনা, তাই অপূর্ণতা নিয়েই হয়তো একদিন চলে যেতে হবে। তারপরও শান্তি এই যে আমি আমার স্ত্রী , দুই সন্তান হৃদি, প্রৈতী’ ও তাদের সন্তানদের নিয়ে ভালো আছি।’ তিনি জানান,‘ মোটামুটি সুস্থই আছেন। বাসায় আছেন পরিবারের সঙ্গে। ছোট করে জন্মদিনও পালন করবেন।’

১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে জনসাধারণকে উদ্ভুদ্ধ করার জন্য তিনি অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন আন্দোলনমুখী নাটকে। নাটককে হাতিয়ার করেই অংশ নেন ১৯৭০ সালের অসহযোগ আন্দোলনে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে ট্রাকে করে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে পথ নাটক করেন ড. ইনামুল হক।

এ পর্যন্ত তাঁর ১৮টি নাটক প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখযোগ্য নাট্যগ্রন্থ ‘নির্জন সৈকতে’, ‘গৃহবাসী’, ‘মুক্তিযুদ্ধ নাটকসমগ্র’, ‘মহাকালের ঘোড় সওয়ার’ ইত্যাদি। বহুমুখী কার্যক্রমের জন্য ইনামুল হক ২০১২ সালে পেয়েছেন একুশে পদক।

স্ত্রী লাকী ইনামকে নিয়ে রাজধানীর বেইলি রোডে বসবাস ড. ইনামুল হকের। ড. ইনামুল হক ও লাকী ইনামের বিয়ে হয় ১৯৭০ সালের ১৪ ডিসেম্বর।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭