ইনসাইড বাংলাদেশ

মাঠ প্রশাসনে চরম অসন্তোষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 22/07/2017


Thumbnail

মাঠ প্রশাসনে একটি অনিবার্য বিদ্রোহ কোনোরকম ঠেকাল সরকার। এখনো বিরাজ করছে তীব্র অসন্তোষ। বরগুনার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারিক সালমানকে নিয়ে সৃষ্ট ঘটনায় এই অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের শীর্ষ সংগঠন অ্যাডমিনস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এক জরুরি সভায় এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে। সংগঠনের মহাসচিব কবির বিন আনোয়ার বলেছেন ‘এরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে মাঠ পর্যায়ে প্রশাসন কাজ করতে পারবে না।

তারিক সালমান বরিশালের আগৈলঝাড়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় তিনি, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। প্রতিযোগিতায় ঘোষণা করা হয় যে, বিজয়ীদের ছবি দিয়ে স্বাধীনতা দিবসের কার্ড করা হবে। প্রতিযোগিতায় জয়ী হয় শিশু আদ্রি। সে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি আঁকে। ২৬ মার্চ তার ছবি দিয়েই স্বাধীনতা দিবসের কার্ড হয়। এই কার্ডে বঙ্গবন্ধুর ছবিকে বিকৃত করা হয়েছে এই অভিযোগ তুলে বরিশাল আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ ওবায়দুল্লাহ সাজু মানহানির মামলা করেন। এর মধ্যেই তারিক সালমানকে বরগুনা সদরে বদলি করা হয়। গত ১৭ জুলাই এই মামলায় হাজিরা দিতে এলে, তাঁকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এর দুই ঘণ্টা পর বিচারক আগের সিদ্ধান্ত পাল্টে তাঁকে জামিন দেন। এই ঘটনা মাঠ প্রশাসনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা এই ঘটনার দ্রুত নিষ্পত্তি না হলে, তাঁরা কাজ বন্ধ করে দেবেন বলে জানিয়ে দেন। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ. টি. ইমামের নজরে এল, তিনি স্বাধীনতা দিবসের কার্ডের কপিসহ প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেন। বৃহস্পতিবারই অ্যাডমিনস্টেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন, অবিলম্বে এই ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। সমিতির মহাসচিব কবির  বিন আনোয়ার ঘটনা এবং তার প্রতিক্রিয়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন।

শুক্রবার গণভবনে ছিল স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কমিটির সভা। ওই সভায় প্রধানমন্ত্রী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কোথায় তাঁকে পুরুস্কৃত করব, তা না করে তাকে শাস্তি দিল কে?

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সাজুর সাময়িক বহিষ্কার প্রশাসনের অস্থিরতা কিছুটা কমলেও এখন অসন্তোষ র‍য়েই গেছে। বিশেষ করে, তারিক সালমানের গ্রেপ্তাতারের ক্ষেত্রে কোনো রকম প্রশাসনিক অনুমোদন নেওয়া হয়নি। গত কয়েক বছর ধরেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে, মাঠ পর্যায়ে নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে সমন্বয় নেই। একজন আরেক জনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন। তারিক সালমানের ঘটনা আরেকটি বিষয় উন্মোচন করেছে, তাহলো মাঠ প্রশাসনের ওপর দলীয় চাপ। এ ধরনের অনভিপ্রেত চাপ সৃষ্টির ফলে নির্বাচনের দেড় বছর আগে মাঠ প্রশাসন সম্পূর্ণ সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে বলে অনেকের ধারণা।

বাংলা ইনসাইডার




প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭