ইনসাইড এডুকেশন

এসএসসিতে অকৃতকার্যরা যা করতে পারেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 02/06/2020


Thumbnail

সৃষ্টিজগতের মধ্যে মানুষই সম্ভবত একমাত্র প্রাণী, যারা জীবিকার জন্য খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার জন্য ২০ থেকে ৩০ বৎসর বয়স পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিয়ে থাকে। যা প্রকৃতির অন্য প্রাণীদের করা লাগে না। আর এই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাক্ষেত্রে চলে চাপিয়ে দেওয়া এক অসুস্থ প্রতিযোগিতা। ফলে শিক্ষা ক্ষেত্রের এই ধাপে অনেকেই পরীক্ষায় পাশ করতে না পেরে, মনোবল হারিয়ে ফেলে। ভাবতে শুরু করে জীবন বোধ হয় এখানেই শেষ। নতুন করে শুরু করার সুযোগ নেই। পারিবারিক ও সামাজিক লজ্জা থেকে শুরু করে, জুনিয়র ব্যাচে আবার নতুন করে পড়াশোনা! ইত্যাদি নানা কারণেই অনেকে শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি টানেন।

একটা পরীক্ষায় ফেইল করা মানে জীবনের তরে ফেইল করা নয়। কিংবা জীবন এখানেই শেষ হয়ে যাওয়া নয়। তাই আবার নতুন করে, নব উদ্যমে শুরু করতে হবে। আমাদের দেশে সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থার উপর চাপ অনেক বেড়ে গেছে। এই শিক্ষা ব্যবস্থার ভিতর দিয়ে গিয়ে অনেকেই চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে। সম্মানজনক কাজও খুঁজে পাচ্ছে না, আবার দীর্ঘদিনের পড়াশোনা শেষে পরিবারের উপর অনেকটাই বোঝা হয়ে যায়। তাই এই সময়ে সবচেয়ে বেশি দরকার কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা। অকৃতকার্য হওয়ার কারণে ভেঙে না পড়ে, কারিগরিতে আবার নতুন করে শিক্ষা জীবন শুরু করতে পার।

ভোকেশনাল এডুকেশন বা কারিগরি শিক্ষা এমন এক শিক্ষা পদ্ধতি যেখানে পাস ফেল বলে কিছু নেই। বরং এটি একজন মানুষকে যোগ্য প্রতিযোগী করে গড়ে তোলার এক প্রয়াস। যেখানে হয় আপনি যোগ্য অথবা এখনও যোগ্য নন। তাই পরিপূর্ণ দক্ষতা অর্জনের জন্য এবং একজন যোগ্য প্রতিযোগী হতে আপনাকে যতবার প্রয়োজন ততবার পরীক্ষা দেবার এবং নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ দেয়া হয়।

কারিগরি শিক্ষায় তত্ত্বীয় পড়াশুনার চেয়ে বাস্তব প্রয়োগে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। এতে করে একজন কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তি নিজের যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে, সবচেয়ে ভালো কাজের সুযোগ খুঁজে নিতে পারে। বাস্তব কাজের অভিজ্ঞতা থাকায় কারিগরি শিক্ষাকে চাকুরির ক্ষেত্রেও খুব গুরুত্বের সাথে দেখা হয়। একজন চাইলে খুব সহজেই কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করে নিজের পূর্বের কাজ থেকে বেরিয়ে নতুন কাজ করতে পারে এবং নিজের ক্যারিয়ার কে সমৃদ্ধ করতে পারে।
বাংলাদেশে কারিগরি বা ভোকেশনাল শিক্ষার যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৭ সালে। বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমানে ৪৯টি সরকারী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট রয়েছে। এর মধ্যে পুরোনো ইন্সটিটিউটের সংখ্যা ২০টি, যেগুলো পুরোপুরি সরকারি। নতুন রাজস্বভুক্ত ইন্সটিটিউটের সংখ্যা পাঁচটি, মনোটেকনিক ইন্সটিটিউট ৩টি, প্রকল্পভুক্ত ১৮টি ও মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সংখ্যা ৩টি। বেসরকারী পলিটেকনিকের সংখ্যা ৩৮৭টি।

বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব অনেক। দেশের চাহিদা মেটানো ও বিদেশে জনশক্তি রপ্তানিতে ব্যাপক কারিগরি শিক্ষা প্রয়োজন। কেননা আমাদের জনশক্তি বিশাল। এখানে বাইরের বাজার না ধরতে পারলে পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে যাবে। সেইসাথে জনশক্তি রপ্তানিতে আমরা এখনো অদক্ষ ক্যাটাগরিতেই রয়ে গেছি। তাই অকৃতকার্য হওয়ায় ভেঙে পড়ার কোন কারণ নেই। কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে নতুন শিক্ষা জীবনের যাত্রা শুরু করতে পার। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭