ইনসাইড আর্টিকেল

ইতিহাসে স্থান নেওয়া কৃষ্ণাঙ্গরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 02/06/2020


Thumbnail

শেতাঙ্গ, কৃষ্ণাঙ্গ, বর্ণবাদ। এই শব্দগুলো শুনতে বা বলতে যথেষ্ট রকম বিশ্রী। বরং এর স্থলে মানুষ বললেই যেন প্রাণটা আনচান করে উঠে। করোনা সংকটের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে চলছে কৃষ্ণাঙ্গদের বিক্ষোভ। সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন, সুতরাং রাজনীতিতে কেউ না কেউ এই ফ্যাক্টরটি কাজে লাগাবে সন্দেহ নেই। কিন্তু তবুও থেমে যাবে কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার। তাই চলুন জেনে নেই কিছু মহীয়সী কৃষ্ণাঙ্গ সম্পর্কে।  

বারাক ওবামা

বারাক ওবামা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য। ওবামা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে ডিগ্রি লাভ করেন। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে তিনি ইলিনয় অঙ্গরাজ্য থেকে মার্কিন সিনেটর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং বিপুল ব্যবধানে রিপাবলিকান দলের প্রতিপক্ষ অ্যালেন কীয়েজকে পরাজিত করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১২ সালের ৭ নভেম্বর ডেমো ক্র্যাটিক প্রার্থী মিট রমনিকে হারিয়ে পুনরায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। দুইমেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন ওবামা। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্ববিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন ২০১১ সালে ওবামাকে ‘পার্সন অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে মনোনীত করে। ওই তালিকায়- স্টিভ জবস, আঙ্গেলা মার্কেল, সিলভিও ব্যার্লুস্কোনি, লিওনেল মেসি প্রমুখ বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিত্বদের পাশাপাশি তিনিও স্থান পেয়েছেন। ২০১২ সালেও তিনি দ্বিতীয় বারের মতো টাইম ম্যাগাজিনের ‘পার্সন অব দি ইয়ার’ মনোনীত হয়।

মার্টিন লুথার কিং

মার্টিন লুথার কিং, বিখ্যাত আফ্রিকান-আমেরিকান মানবাধিকার কর্মী। নাগরিক ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় অহিংস আন্দোলনের জন্য ১৯৬৪ সালে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ। ১৯৬৩ সালে ওয়াশিংটন অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচীতে তাঁর ঐতিহাসিক ভাষনের শিরোনাম ছিল, আই হ্যাভ এ ড্রিম। কর্মজীবনের শুরুতে মার্টিন লুথার কিং, জুনিয়র মানবাধিকার কর্মী ছিলেন, নাগরিক অধিকার রক্ষাই তার উদ্দেশ্য ছিল। মহান এই খ্রীষ্টাননেতা ১৯৫৫ সালে মন্টোগমারীতে বাস বয়কটের নেতৃত্ব দান করেন। তিনি একজন সফল বক্তা হিসেবে পরিচিত। মার্টিন লুথার কিং, জুনিয়র তার খ্রীষ্টীয় মতানুসারে অহিংস উপায় নাগরিক অধিকার রক্ষায় অবদানের জন্য অধিক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। বক্তৃতা দ্বারা জনমনে স্থায়ী আসন করে নিয়েছেন।

নেলসন ম্যান্ডেলা

নেলসন ম্যান্ডেলা ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী, রাজনৈতিক নেতা ও প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি। তিনি ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দেশটির প্রথম কৃষাঙ্গ রাষ্ট্রপ্রধান। আফ্রিকান জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্রের আদর্শের ধারক ম্যান্ডেলা দীর্ঘদিন আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। গণতন্ত্র ও সামাজিক ন্যায়ের প্রতীক হিসেবে গণ্য ম্যান্ডেলা ২৫০ টিরও অধিক পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ভারত সরকার প্রদত্ত ‘ভারতরত্ন’ পুরস্কার, ১৯৯৩ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার। ১৯৮৮ সালে তিনি শাখারভের অভিষেক পুরস্কারটি যৌথভাবে অর্জন করেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় ম্যান্ডেলা তার গোত্রের নিকট মাদিবা নামে পরিচিত। অর্থ হল ‘জাতির জনক’।

ওপ্‌রা উইনফ্রি

ওপ্‌রা গেইল উইনফ্রি হলেন জনপ্রিয় টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব। টক শো’র উপস্থাপিকা হিসেবে তিনি আশির দশকের মধ্যভাগ হতে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ওপ্‌রা নামেই সমধিক পরিচিত তিনি। সেইসাথে একজন মানবহিতৈষী ও গণমাধ্যম ধনকুবের। আন্তর্জাতিকভাবে বিস্তৃত টক শো ‘দ্য ওপরা উইনফ্রি শো’ তাকে একাধিক এমি পুরস্কার এনে দিয়েছে। এই শো টেলিভিশনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি প্রচারিত বলে গণ্য। পরপর তিন বছর তিনি বিশ্বের অনন্য কৃষ্ণাঙ্গ কোটিপতি হিসেবে বিবেচিত হন। সেইসাথে ফোর্বস কর্তৃক বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী নারী নির্বাচিত হয়েছেন পাঁচবার। তাছাড়া, মার্কিন রাষ্ট্রপতি পদক এবং ডিউক ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭