ইনসাইড আর্টিকেল

এখনো চলছে বর্ণবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 02/06/2020


Thumbnail

ফর্সা বা কালো হওয়ার উপর কারো হাত নেই। মানুষ কালো বা ফর্সা হওয়ার জন্য দায়ী মেলানিন নামক এক ধরণের রাসায়নিক রঞ্জক পদার্থ। এই পদার্থের তারতম্যের কারণেই মানুষের গায়ের রঙ বিভিন্ন হয়। যাদের ত্বকে মেলানিনের পরিমাণ বেশি থাকে তাদের গায়ের রং কালো হয়। অন্য দিকে যাদের ত্বকে মেলানিনের পরিমাণ কম তাদের গায়ের রঙ ফর্সা হয়। এভাবেই সমাজ ও রাজনীতিতে আবির্ভাব ঘটে বর্ণবাদের। আমাদের কাছে বর্ণবাদ মানেই মধ্যযুগীয় ব্যাপার মনে হয়। মনে হয় আমাদের বর্তমান মানবসভ্যতা বর্ণবাদ থেকে বহু দূরে। কিন্তু তাই কি?

ব্রিটেনে কৃষ্ণাঙ্গ ও সংখ্যালঘু নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর লোকজন এখনো তীব্র বর্ণবাদের শিকার হচ্ছে বলে জানায় দেশটির সমতা ও মানবাধিকার কমিশন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করার সুপারিশ করে সংস্থাটি। ব্রিটিশ সংস্থাটি দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্বেতাঙ্গ, কৃষ্ণাঙ্গ এবং সংখ্যালঘু নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীগুলোর অবস্থা পর্যালোচনা করে। এতে চাকরি, আবাসন, মজুরি, অপরাধের বিচার—এ কয়েকটি খাতে আতঙ্কিত হওয়ার মতো চিত্র ধরা পড়ে।

কমিশনের সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ইংল্যান্ডে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গদের খুন হওয়ার ঝুঁকি তিন গুণ বেশি। একই রকম প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা অর্জনের পরও কর্মক্ষেত্রে একজন কৃষ্ণাঙ্গের আয় শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তির চেয়ে ২৩.১ শতাংশ কম। এছাড়া সাধারণ শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীগুলোর সদস্যের দারিদ্র্য ও বেকারত্বের হার খুব বেশি এবং দেশের ক্ষমতা কাঠামোয় তাদের প্রতিনিধিত্ব অত্যন্ত কম।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ ও প্রশাসনের এমন চরিত্র যে একে বর্ণবাদী ব্যতিরেকে অন্য কিছু বলা চলে না। অথচ অভিবাসীদের নিয়ে হিসাব করলে দেখা যায় যে, কৃষ্ণাঙ্গ, বাদামি ও হিস্পানিদের সংখ্যা সমাজে নেহাত কম নয়। ওবামার দীর্ঘ শাসন সমাজে গুণগত পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি। পারেনি প্রশাসনেও। বিশেষ করে দক্ষিণের অঙ্গরাজ্যগুলোতে। দক্ষিণের এই সংকীর্ণতা, রক্ষণশীলতা ও অমানবিকতার কারণ যেমন অর্থনৈতিক, তেমনি সমাজিক। সেই সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী শ্বেতাঙ্গ মানসিকতার প্রভাব। যে জন্য অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্য যে সেখানাকার বিচারব্যবস্থাও এ কুপ্রভাব থেকে মুক্ত নয়।

সমাজ ও রাজনীতির বিশ্লেষণে উল্লিখিত পত্রিকার প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৫০ বছর পর ১০০ সিনেটরের মধ্যে মাত্র দুজন কৃষ্ণাঙ্গ। ৫০০টি কোম্পানির মধ্যে ১০ জন কৃষ্ণাঙ্গ সিইও, পাঁচ শতাধিক কোটিপতির মধ্যে মাত্র দুজন কৃষ্ণাঙ্গ, আর সেইসাথে এখনো পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কৃষ্ণাঙ্গ পুলিশের হাতে নিহত। বলা বাহুল্য, এই পুলিশ সদস্যদের সবাই শ্বেতাঙ্গ। আর এতে করে খুব সহজেই অনুধাবন করা যায়, বর্ণবাদ এখনো শেষ হয়নি। বর্ণবাদ আমাদের অগোচরেই চলছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭