ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

নয়া বর্ণবাদ উস্কে দিচ্ছেন ট্রাম্প!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 04/06/2020


Thumbnail

২ বৎসর আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হাইতি, এল সালভাডর ও আফ্রিকার কিছু দেশকে খুবই স্থূল ভাষায় বর্ণনা করেন বলে অভিযোগ উঠে। পরে এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানায় জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ। জানা যায়, হোয়াইট হাউসে অভিবাসন নীতি নিয়ে এক বৈঠকের সময় ট্রাম্প এসব দেশকে ‘শিটহোল’ বা ‘পায়খানার গর্তে’র সঙ্গে তুলনা করেন বলে খবর দেয় মার্কিন গণমাধ্যম। অবশ্য বিষয়টি নিয়ে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক নিন্দা এবং প্রতিবাদ শুরু হয়। পরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য এরকম শব্দ ব্যবহারের কথা অস্বীকার করেন। ট্রাম্প কি বর্ণবাদী? এমন প্রশ্নের উত্তরে কি বলবেন জানি না। কিন্তু ট্রাম্প নিজে নানাভাবে এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। দেশটির প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্টকে ‘বিদেশি’ বলে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়েছে ট্রাম্প। মেক্সিকানদের ঢালাওভাবে ধর্ষক, আফ্রো-আমেরিকানদের অলস ও খুনে, সন্ত্রাসবাদী ইত্যাদি নানা জাতির মানুষকে নানা বিশেষণে বিশেষিত করেন তিনি। এই কারণে মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে আসা নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করেন। এসবের পর তাকে সরাসরি বর্ণবাদী বলার কোন অবকাশ থাকে না। অবশ্য অনেকেই এই মনোভাবকে রাজনৈতিক রণকৌশল ভেবে তার ব্যাখ্যা করেছে।

রাষ্ট্র ও রাজনীতি নিয়ে বলতে গেলে উগ্র জাতীয়তাবাদ টার্মটা খুব সহজেই চলে আসে। সেইসাথে চলে আসে অ্যাডলফ হিটলার, সিনর বেনিতো মুসোলিনি ইত্যাদি রাজনীতিকের নাম। হয়তো এই দূরদেশে বসেও ট্রাম্পের কপালে অশুভ ইঙ্গিত দেখতে পাই বলেই উগ্র জাতীয়তাবাদ আর উগ্র রাজনীতিকদের কথা মনে পড়ে। আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বুড়ো এই প্রেসিডেন্টের একটা দিক খুব ভালো। তিনি সবকিছুকে রাজনীতির চোখে দেখেন। রাজনীতির চোখে দেখেন বলেই তিনি করোনার একটি বৈজ্ঞানিক নাম থাকা সত্ত্বেও এর নামকরণ করলেন ‘চায়না ভাইরাস’। কভিড-১৯ বা করোনা বললে ক্ষতি না হলেও তো লাভ হচ্ছে না। কিন্তু চায়না ভাইরাস বললে তো নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে নেকী কিংবা বলতে পারেন রাজনৈতিক ফায়দা।
পুরো করোনা সংক্রমণের সময় জুড়ে ট্রাম্প প্রণোদনা আর ভাতা দিয়ে নাগরিকদের প্রাণ কিনে নেন। যুক্তরাষ্ট্রে কার্যত লকডাউন ছিল না অর্থনীতি ধ্বসে পড়ার আশঙ্কায়। তারা শুধু কিছু অপ্রয়োজনীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে আর ঘরে থাকার নির্বাহী আদেশ জারি করেছে। অর্থের কাছে নাগরিকের জীবনের কোন মূল্যই ছিল না। এক জর্জ ফ্লয়েডকে কেন্দ্র করে ফুঁসে উঠেছে দেশটির বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্য। অনেকেই ভাবতে পারে, যা হচ্ছে বেশি হয়ে যাচ্ছে। এতো জ্বালাও পোড়াও ঠিক হচ্ছে না। কিন্তু তাদের জন্য বলে রাখি। একবার গুগলে গিয়ে ‘হোমলেস পিপল ইন অ্যামেরিকা’ লিখে সার্চ করেন। দেখবেন কি বিমর্ষ সব ছবি উঠে আসে। আর সেখানে কৃষ্ণাঙ্গ বা শেতাঙ্গ কে কত শতাংশ একটু খেয়াল করবেন? আমি বলছি না এভাবে ছবি দেখে সিদ্ধান্ত নিবেন। দেখে এই বিষয়ে একটু ঘাঁটাঘাঁটি করেন। তাইলে প্রকৃত চিত্র কিছুটা হলেও বুঝতে পারবেন। করোনায় যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণাঙ্গদের বসবাসকারী প্রদেশগুলোতে একটু মৃত্যুর সংখ্যাটা দেখবেন। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় কৃষ্ণাঙ্গদের মৃতের হার অনেক বেশি এটা নিয়ে অনেক ভালো লেখাও পাবেন। পড়লেই দেখতে পাবেন, জানতে পারবেন ভিতরের কারণগুলো। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে এই আন্দোলনেও লাভ হচ্ছে ট্রাম্পেরই।          



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭