ইনসাইড ইকোনমি

পাত্তা পেলেন না মমতা; ভারত-বাংলাদেশ আমদানি-রপ্তানি শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 06/06/2020


Thumbnail

৭৫ দিন পর আবারও শুরু হলো ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সড়কপথে আমদানি- রপ্তানি। করোনা সঙ্কটের কারণে গত ২৩ মার্চ দু’দেশের মধ্যে সড়ক পথে পণ্য আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছিল। কিন্তু কিছুদিন যেতেই দু’দেশের সরকারই আবারও বাণিজ্যের জন্য সড়কপথ খুলে দিতে একমত হয়। কিন্তু এতে বারবার বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এবার আর তিনি পাত্তা পেলেন না। দু’দেশের প্রশাসন ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আজ শনিবার (৬ জুন) সকাল থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ জুন) বিকেলে সীমান্তের জিরো পয়েন্ট এলাকায় দুই দেশের প্রশাসন ও ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে এ বৈঠক হয়।

মমতা বারবার যুক্ত দেখাচ্ছিলেন যে, বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্য ঢুকলে তার সঙ্গে করোনা ভাইরাসও ভারতে ঢুকে পড়বে। মমতার এই হাস্যকর দাবির সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করছিলেন অনেক বিশেষজ্ঞ। কারণ বাংলাদেশের থেকে ভারতের, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের করোনা পরিস্থিতি বহুগুণে খারাপ। তাই বাংলাদশ থেকে ভারতে করোনা সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কার থেকেও বড় শঙ্কা হলো ভারত থেকে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ আরও বেড়ে যায় কিনা সেটা।

সব কিছু বিবেচনায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার গত ২৪ এপ্রিল দু’দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানির অনুমোদন দিলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুমতি না থাকায় দীর্ঘদিন সড়কপথে বন্ধ ছিল ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্য। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বারবার চিঠি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে স্থলবন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শুরুর অনুমতি দেয়ার অনুরোধ করলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। এছাড়াও বনগাঁর সিন্ডিকেটের কারণেও বাণিজ্যে জটিলতা দেখা দিয়েছিল। পরে রেলওয়ের মাধ্যমে পণ্য আমদানির অনুমতি দেয়ায় স্থলপথে আমদানি-রপ্তানির ওপর চাপ সৃষ্টি করে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর এলাকার শ্রমিকসহ ট্রাক মালিক ও চালকরা। বাধ্য হয়ে তড়িঘড়ি করে বৈঠকে বসে দু’দেশের কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে আমদানি-রপ্তানি চালু করতে রাজি হয় ভারতের প্রশাসনসহ বনগাঁ সিন্ডিকেট।

তবে করোনার সংক্রমণ নিয়ে আশঙ্কা থাকায় সীমান্ত অতিক্রমের আগেই গাড়ি চালকদের শারীরিক অবস্থার পরীক্ষা করা হবে। এছাড়াও ট্রাকগুলো উভয় দেশে স্যানিটাইজ করা হবে। ফেরার সময়ও চালকদের শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। একই সঙ্গে দ্রুত পণ্য খালাস করে দিনের মধ্যেই ট্রাকগুলো ফিরে যাবে। প্রাথমিক পর্যায়ে আমদানি-রপ্তানির জন্য ৫০টি পণ্যবাহী ট্রাক দিতে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা সম্মতি দিয়েছেন। পরে পরিস্থিতি দেখে ট্রাকের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।

প্রসঙ্গত যে, সরকার অনুমোদিত ২৩টি স্থলবন্দরের মধ্যে চলমান ১২টি বন্দরের মধ্যে অন্যতম বেনাপোল স্থলবন্দর। প্রতিবছর এ বন্দর দিয়ে প্রায় ৮০ হাজার মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হচ্ছে। যা থেকে সরকার প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে থাকে। আমদানি পণ্যের মধ্যে গার্মেন্টস সামগ্রী, তৈরি পোশাক, শিল্পকারখানা ও ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল, শিল্প প্রতিষ্ঠানের মূলধনী যন্ত্রপাতি, কেমিক্যাল, খাদ্যদ্রব্য, চাল, পেঁয়াজ, তুলা, বাস, ট্রাক ট্যাসিস, মটর সাইকেল এবং পার্টস ও টায়ার রয়েছে। রপ্তানি পণ্যের মধ্যে পাট ও পাটজাত দ্রব্য, সাদা মাছ, ব্যাটারি, ওভেন গার্মেন্টস, নীটেড গার্মেন্টস, নীটেড ফেব্রিকস, বর্জ্য কাপড় উল্লেখ্যযোগ্য।

এ বন্দর থেকে ভারতের কলকাতা শহরের দূরত্ব ৮৩ কিলোমিটার। মাত্র ৩ ঘণ্টায় একটি পণ্যবাহী ট্রাক আমদানি পণ্য নিয়ে কলকাতা শহর থেকে বন্দরে পৌঁছাতে পারে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় এ পথে ব্যবসায়ীদের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি।

 

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭