ইনসাইড পলিটিক্স

হেভিওয়েটরা কি আসছে মন্ত্রিসভায়?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 28/06/2020


Thumbnail

এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে করোনা পরিস্থিতি শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্ব থেকেই সহসা যাচ্ছে না। আমরা কেউই বলতে পারছি না করোনা সঙ্কট কতদিন থাকবে। আর এই সঙ্কট যখন দীর্ঘমেয়াদে থাকবে তখন এটা শুধু জনস্বাস্থ্যের সঙ্কট থাকবে না। এটা পরিণত হবে আর্থসামাজিক সঙ্কটে এবং সবথেকে বড় কথা হচ্ছে এটা অর্থনৈতিক সঙ্কট হিসেবে আমাদের সামনে আসবে। অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে, অনেক দেশে দারিদ্রতা বাড়বে, বেকারত্ব বাড়বে, অভাব বাড়বে, এমনকি খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন। এই বাস্তবতায় সরকার পরিচালনায় দক্ষতার কথা বিভিন্নভাবে আলোচিত হচ্ছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে দূরদৃষ্টি নেতৃত্ব এবং তাঁর যে আকাঙ্ক্ষা সেই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত করার মতো যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের মন্ত্রিসভায় আনার ব্যাপারটি খোদ মন্ত্রিসভায় বিভিন্নভাবে আলোচনা হচ্ছে। 

আওয়ামী লীগের নেতারাও মনে করছেন যে, ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বরের পর ৭ই জানুয়ারি যে মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছিল, সেই মন্ত্রিসভা ঠিকই ছিল। শেখ হাসিনা নতুনদেরকে সুযোগ দিতে চেয়েছিলেন যেন নতুনরা যোগ্য হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। কিন্তু এই নতুনদের মধ্যে কেউ কেউ যোগ্যতার পরিচয় দিলেও অনেকেই যোগ্যতার পরিচয় দেননি। তারপরেও প্রধানমন্ত্রীর মহানুভবতা এবং উদারতার কারণে তাঁরা মন্ত্রিসভায় আছেন এবং প্রধানমন্ত্রী একাই সবকিছু সামলে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু করোনা সঙ্কটের সময় দেখা গেল আরেক ধরণের সমস্যা। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং কাজ করতে বলছেন সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন এবং সেই মোতাবেক কাজ করার ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে অনেক মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রীদের অনীহা এবং অনাগ্রহ। প্রধানমন্ত্রীর ভাষাও তাঁরা বুঝছেন না এবং প্রধানমন্ত্রী যে পরিমাণ পরিশ্রম করছেন সেই পরিশ্রমের একশ ভাগের এক ভাগ-ও করতে তাঁদের অনীহা। এই বাস্তবতায় খোদ আওয়ামী লীগের মধ্যেই কথা এসেছে যে, এখন একটি সংকটকালীন সময়, যুদ্ধাবস্থা। যুদ্ধাবস্থায় দরকার হলো সবচেয়ে ভালো সৈনিকদের সামনে নিয়ে আসা এবং প্রধানমন্ত্রীর এই লড়াই জিততে গেলে তাঁর সবথেকে বিশ্বস্ত এবং যারা পারফর্ম করতে পারে এরকম ব্যক্তিদের মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসার কথা বিভিন্ন মহল থেকেই উচ্চারিত হচ্ছে। সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, খুব শীঘ্রই মন্ত্রিসভায় একটি রদবদল হতে যাচ্ছে এবং বাজেট পাশের পরপরই এই রদবদল হবে। তবে মন্ত্রিসভার এই রদবদলে কে থাকবেন, কে যাবেন এই ব্যাপারে কেউ নিশ্চিত নন। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন যে, মন্ত্রিসভার রদবদল আদৌ হবে কিনা বা হলে কিভাবে হবে তা সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তিনি বলেন যে, সংবিধানে মন্ত্রিসভায় সদস্য নেওয়া বা কাউকে বাদ দেওয়ার ক্ষমতা একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর, অন্য কারো এই ক্ষমতা নেই। আর প্রধানমন্ত্রী তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতা কখন-কিভাবে প্রয়োগ করবেন সেটা তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত অভিপ্রায়। 

তবে আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন যে, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু কিছু মন্ত্রণালয়ের যে হতশ্রী অবস্থা এবং দায়িত্ব পালনে অযোগ্যতা, তাতে প্রধানমন্ত্রীও অসন্তুষ্ট হয়েছেন। কাজেই মন্ত্রিসভার সম্ভাব্য রদবদলে এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই তিনি রদবদল করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এই রদবদলের ক্ষেত্রে দুটি বিষয় বিবেচনা করা হতে পারে বলে একাধিক সূত্র বলছে। একটি হলো, গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের একজন করে প্রতিমন্ত্রী দেওয়ার বিষয়টি ভাবা হচ্ছে। যাতে মন্ত্রণালয়গুলো এক ব্যক্তির উপর নির্ভরশীল না হয়। 

দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, এই সংকটকালীন সময় এবং যুদ্ধাবস্থা মোকাবেলার জন্য যারা দলে পরীক্ষিত এবং সিনিয়র নেতা অর্থাৎ রাজনীতির ভাষায় যাদেরকে বলে ‘হেভিওয়েট’ সেই হেভিওয়েটদেরকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে কিনা, বিশেষ করে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরীর মতো প্রবীন, বিজ্ঞদেরকে মন্ত্রিসভায় আনার বিষয়টি আলোচনা হচ্ছে। 

তৃতীয় যে বিষয়টি আলোচনা হচ্ছে তা হলো, যেহেতু এখন একটি সংকটকাল। তাই ১৪ দল থেকেও কাউকে মন্ত্রিসভায় আনা হতে পারে কিনা বা এনে সরকার সম্বিলিতভাবে সঙ্কট মোকাবেলা করতে পারে কিনা। 

তবে যা কিছুই ভাবা হচ্ছে তা সবই অনুমাননির্ভর এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মহলের আকাঙ্ক্ষা। বাস্তবে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা ঠিক করবেন প্রধানমন্ত্রী। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭