নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 28/06/2020
হলিউড- বলিউডের সিনেমা তো কম বেশি সবাই দেখেন। প্রিয় নায়ক, প্রিয় নায়িকা কিংবা প্রিয় পরিচালকের ছবি মিস যায় না। এর মধ্যে অস্কার কিংবা বিভিন্ন প্রতিযোগীতামূলক অনুষ্ঠানের মাধ্যমেও কিছু ছবির খোঁজ মেলে। এসব ছাপিয়ে কিছু ছবি থাকে যা নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয় না। বড় কোন তারকারও সিনেমা না। কিন্তু যদি দেখতে বসেন, তাহলে বলবেন ইস! এতদিন কেন দেখিনি। আপনার না দেখার তালিকায় থাকতে পারে এমন কিছু আন্ডাররেটেড সিনেমার খোঁজ দেওয়া হলো।
Tracks
Country: Australia
এন অর্ডিনারী পারসন ইজ ক্যাপাবল অফ এনিথিং ঠিক এই চিন্তা ভাবনা থেকে Robyn Davidson নামের এক অল্পবয়সী মেয়ে ১৯৭৭ সালে চারটি উট এবং তার বিশ্বস্ত কুকুর নিয়ে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমি জুড়ে ১৭০০ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ভারত মহাসাগরে উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। নানান বাধা বিপত্তি পেরিয়ে পায়ে হেটে একা একজন মেয়ে আসলেই কি এতদূর পথ অতিক্রম করতে পারবে? এই নিয়েই মুলত মুভির গল্প। এছাড়াও চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য , অস্ট্রেলিয়ান আদিবাসী সংস্কৃতি সম্পর্কিত তথ্য এ মুভিতে খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এডভেঞ্চার রিলেটেড মুভি যারা পছন্দ করেন তারা চাইলে দেখে নিতে পারেন।
Parched -2015 ( 18+)
Country: India
একটা অন্ধকারছন্ন, কুসংস্কারধর্মী সমাজব্যবস্থায় আলো আনতে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। সমাজের জড়তা, অসারতা কিংবা কুসংস্কারধর্মী রীতিনীতি ভেঙ্গে মানুষকে সত্য ও সুন্দর পথের অনুসারী করতে শিক্ষাই হতে পারে সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার।
সিনেমার গল্পটা ভারতের রাজস্থানের কোনো এক গ্রামের, যেখানে সমাজের কুসংস্কার পূজারী মূর্খ তথা সত্যর আলো ভীতূ প্রবীণ নীতিনির্ধারকদের চালনে ধূকতে থাকা মানুষের দুঃখ কষ্ট নিপীড়নের কথা সুন্দর করে তুলে ধরা হয়েছে। বাল্যবিবাহ্, নারীনির্যাতন, শিক্ষাভীতি ছিল সিনেমার মূল বিষয়।
Leena Yadav এর ডিরেকশন, প্রধান একটি চরিত্রে রাধিকা আপ্তের ন্যাচারাল এক্টিং সিনেমাটিকে আরো সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছে। সিনেমায় ছিল বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ।
আমাদের পুরোনো ও এখনোও কিছু কিছু যায়গায় চলা সামাজিক কুসংস্কারের সঙ্গে যার পাওয়া যায় অনেক মিল।
Shotgun Stories
Country: United States
ক্লিমেন হেস সাউদার্ন আরকান্সাসের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ী, ব্যাবসায় প্রতিষ্ঠা লাভের পূর্বে ক্লিমেন নিকোল নামের এক গরীব ঘরের মেয়েকে বিয়ে করেন সেখানে তার তিনজন পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। তাদের নাম সান,কিড আর বয়।
পরে ব্যাবসায় প্রতিষ্ঠা লাভ করলে স্ত্রী আর তিনপুত্রকে পুরাপুরিভাবে পরিত্যাগ করেন, নতুন আরেকটা বিয়ে করেন এবং নতুন সন্তানদের আদর্শ পিতার ন্যায় বড় করেন।
চরম দারিদ্র্য আর অসহায়ত্ব নিয়ে বড় হওয়া প্রথম পক্ষের তিন সন্তান স্বাভাবিক কারণেই পিতা আর সৎভাইদের দেখতেই পারতেন না। সৎভাইরাও এড়ায় চলতো তাদের।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন ক্লিমেন হেসের মৃত্যুর পরে তার ফিউনেরালে যখন উভয় পক্ষের সন্তানেরাই হাজির হন এবং প্রথম পক্ষের বড় ছেলে সান(মাইকেল শ্যানন) সদ্যমৃত বাবার কফিনে থুতু দেন। বাবার প্রতি ঘৃণামিশ্রিত যত কথাবার্তা বলা যায় বলেন।
এই ঘটনা কেন্দ্র করেই দুই পক্ষের ভাইদের অলিখিত যুদ্ধ শুরু হয়। সৎভাইদের এই দ্বন্দ নিয়েই পুরা সিনেমার কাহিনী এগিয়ে যায়।
মাড,টেক শেল্টারের মতন ক্রিটিকালি এক্লেইমড সিনেমা বানানোর আগে পরিচালক জেফ নিকোলস এই দুর্দান্ত ইন্ডি সিনেমার মাধ্যমে নিজের ডেব্যু করেছিলেন।
জোনাকি
দেশ: ভারত- ফ্রান্স
ভারত-ফ্রান্সের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত বাংলা মুভি। নির্বাক ছবিটি নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছিল। পরিচালকের নাম আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্ত। নি:সন্দেহে গত দশকে ডেভিউ হওয়া ভারতবর্ষের অন্যতম সেরা পরিচালক। `আসা যাওয়ার মাঝে` চলচিত্রটি তারই নির্মাণ। সেটিও একটি নির্বাক চলচিত্র। যেটাকে গত দশকের অন্যতম সেরা বাংলা মুভি বলা হয়।
পরিচালকের দ্বিতীয় মুভি এটা। জোনাকি` প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত শুধু মুগ্ধতাই ছড়াবে। । মুভিতে কিছু সিন এমন চমৎকারভাবে দেখিয়েছে যা আগে কোনো ভারতীয় মুভিতে দেখা যায়নি হয়তো।
অসাধারণ অভিনয়, কালার, সিনেম্যাটোগ্রাফি, সাউন্ড, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক সব মিলিয়ে অনবদ্য ছিলো মুভিটা । `জোনাকি`র ক্ষেত্রে লোকেশন অন্যতম সেরা জিনিস। ললিতা চট্টোপাধ্যায়-এর শেষ কাজ তার অন্যতম সেরা কাজ হয়ে থাকবেই।
দেখার সময় আপনার একবারো মনে হবেনা এটা বাংলা মুভি। সিনেমাটোগ্রাফি, কালার এতোটাই এক্সট্রিম লেভেলের। আপনি কোনো হলিউডের মুভির ফিল পাবেন।
Columbus
Country: Korea
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আগত জিন লি কোমাতে চলে যাওয়া বাবার কলম্বাস শহরের আর্কিটেকচারের কথা শোনে ছুটে আসে ইন্ডিয়ানার কলম্বাসে। ক্যাসে লাইব্রেরির কাজে জড়িত হলেও যেকিনা স্বপ্ন দেখে একদিন সফল আর্কিটেক্ট হিসেবে নিজেকে দেখার। কাজেরই জন্য সে জড়িয়ে যায় জিন লির সাথে। দুজনের আলাপচারিতায় আর্কিটেকচারের চমৎকার সৌন্দর্যের পাশাপাশি উঠে আসে তাদের জীবনের নানান পঙ্কিলতার সাথে চলার জীবনগাঁথা।
খুবই সিম্পল ধাঁচের হলেও গল্পটি প্রকৃতি, ভালোবাসা আর মানুষের সম্পর্কের কমপ্লেক্সগুলো সুন্দরভাবে দেখিয়েছে।
Risky Business
টম ক্রুজের ক্যারিয়ার শুরু করে দেওয়া এই সিনেমাটা ঠিক ওই ধরনের সিনেমাগুলির মতো, যেগুলি দেখার সময় প্রতিটা সিক্যুয়েন্স কোন একক ক্রিয়েটিভ ফোর্সের প্রোডাক্ট হিসেবে প্রতিভাত হয়। যেন কোন লেখক নিজের ভাড়া করা রুমে বসে বারবার এডিট করে চিত্রনাট্য শেষ করেছেন।
বড়লোক বাবা-মা কয়েকদিনের জন্য বেড়াতে যাবেন, একা ছেলের দায়িত্বে পুরা বাড়ি- এই বেসিক টিনএজ কমেডির প্লটে অবিস্তারে কাজ সেরেছেন লেখক ও পরিচালক পল ব্রিকম্যান। ব্রিকম্যান মাত্র দুইটা সিনেমার পরেই বন্ধ হয়ে যান; কেন? প্রডিউসারদের সাথে তার ভিশন মিলে নাই এবং হয়ত আরও ব্যক্তিগত কারণ থাকতে পারে।
টম ক্রুজের সম্ভাব্য প্রেমিকার চরিত্রে আছেন তার দুই-তিন বছরের সিনিয়র রেবেকা ডে মর্নে, হলিউডের অন্যতম স্টক রোল "হুকার উইথ আ হার্ট অফ গোল্ড" এর ভূমিকায়। আসলে পুরা মুভিটাই গতানুগতিক সব প্লট পয়েন্টে বানানো, রাইটার-ডিরেক্টরের বেদস্তুর আন্তরিকতা সেটা খেয়াল করতে দেয় নাই।
halima`s path
বসনিয়ান ড্রামা মুভি। হালিমা নামের একজন বসনিয়া যুদ্ধে তার স্বামী এবং পালিত পুত্রকে হারায়। ছেলেটা ছিল তার চাচাতো বোন সাফিজার। কোন এক কারনে তার সাথে ২৩ বছর যোগাযোগ নেই। যুদ্ধ শেষে দেহাবশেষ হস্তান্তরের সময়ে স্বামীরটা পেলেও ছেলের ডিএনএ স্যাম্পল না থাকায় তার দেহাবশেষ সনাক্ত করতে পারেনি। এ অবস্থায় তার একমাত্র উপায় ছিল তার বোন সাফিজাকে খুজে বের করা।এক পর্যায়ে খুজে পায়, কিন্তু সাথে সাথে সম্মুখীন হয় এক ভয়ংকর সত্যের।
দারুন এক ড্রামা। মুভিটা সত্য ঘটনার উপর নির্মিত। যুদ্ধ না দেখিয়েও যুদ্ধের নির্মমতাকে ভালভাবেই দেখানো হয়েছে।
Private
মধ্যবয়স্ক মুহাম্মদ। কিছুটা একরোখা এবং নীতিবান। স্ত্রী এবং ৫ সন্তান নিয়ে এমন এক বাড়িতে থাকেন যেটা পড়েছে ফিলিস্তিন এবং ইসরাইল কলোনির মাঝে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি শুরু হবার পরে সবাই বাড়ি ছেড়ে যেতে চাইলেও তিনি বাড়ি ছেড়ে যেতে নারাজ।নিজের বাড়ি থাকা সত্তেও কেন তিনি রিফিউজি হয়ে ঘুরবেন পরিবার নিয়ে। এছাড়া ভয়ে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া একধরনের কাপুরুষতা। এক পর্যায়ে ইসরাইল সৈন্যরা বাড়ি দখল করে নেয়। বাড়ির মালিক বাড়ি ছেড়ে যেতে রাজি না হওয়াতে তারা বাড়িটাকে তিন ভাগে ভাগ করে। নিচতলার একটা অংশে মুহাম্মদ তার পরিবার নিয়ে একটা রুমে থাকে। আর উপর তলায় থাকে সেনারা,যেখানে তাদের কারো প্রবেশ নিষেধ এবং বাড়ির আর একটা অংশে শুধু সেনাদের নির্দেশে প্রবেশ করতে পারবে তারা। এভাবে চলতে থাকে ইসরায়েল সেনা আর মুহাম্মদ পরিবার মধ্যকার ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ। তবে এই যুদ্ধ ছিল মনস্তাত্তিক।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭