লিভিং ইনসাইড

তুলনা করার চর্চা পরিবারের জন্য ভালো কি!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 01/07/2020


Thumbnail

পরিবারকে বলা হয়ে থাকে সবচেয়ে ছোট সামাজিক প্রতিষ্ঠান। মানবসভ্যতার শুরু থেকে নানান রকম গুরুত্বের কথা চিন্তা করেই পরিবারের উৎপত্তি। পরিবারেই একজন সদস্য নৈতিক ও মূল্যবোধের শিক্ষা পেয়ে থাকে। পারিবারিক শিক্ষার মাধ্যমেই গড়ে উঠে একটি শিশুর মানসিক বিকাশ। মনোবিজ্ঞানের জনক সিগমন্ড ফ্রয়েডের মতে, মানুষ আজীবন তার শৈশবের শিক্ষা দিয়ে তাড়িত হয়। সুতরাং আমাদের জীবনে পরিবার ও পারিবারিক শিক্ষার গুরুত্ব খুব সহজেই অনুধাবন করা যায়। এবার আশা যাক, তুলনা করার বিষয়ে। পরিবারে অনেক সময় নানা বিষয়ে তুলনা করা হয়ে থাকে। যেমন- একজন বাবা অনেক সময় তার সন্তানকে নিজের কলিগের সন্তানের চেয়ে কম যোগ্য মনে করে। স্বামী তার স্ত্রীর রান্নার চেয়ে পাশের বাসার ভাবীর রান্নার প্রশংসা বেশি করে। এই রকম চর্চা কম বেশি সকল পরিবারেই হয়ে থাকে। আবার অনেক সময় এমন তুলনা যৌক্তিক কারনেও করা হয়ে থাকে। কিন্তু এই ধরণের তুলনা চর্চা কি কোনভাবেই ইতিবাচক। চলুন জেনে নেই এই বিষয়ে।  
           
অন্যের সাথে তুলনা

মা-বাবা নানা কারণে অন্যের সাথে তুলনা করে থাকেন। সন্তানকে সবসময় অন্যের সাথে তুলনা করে। দেখো, ও কতো নাম্বার পেয়েছে আর তুমি কতো নাম্বার পেয়েছো। ওর আচরণ কতো ভালো, আর তোমার আচরণ! এই কথাগুলো প্রায়ই সন্তানকে বলা হয়ে থাকে। কিন্তু মনোবিজ্ঞানীদের মতে, কখনো অন্যের সাথে তুলনা করা উচিত নয়। এমন তুলনা বাচ্চার মধ্যে হিংসাত্মক মনোভাব তৈরি করে। এতে করে সে অন্যকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবতে শুরু করে। এবং নিজের প্রতি আস্থা ও আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। সেইসাথে তাদের মতে, এমন তুলনায় করলে যে কারো মাঝেই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এতে করে ধীরে ধীরে সে হতাশ হয়ে পড়ে। তাই পরিবারে এমন চর্চা উচিত নয় বলে জানান তিনি।

প্রশংসা না করা

পরিবারে সবসময় ভালো কাজের প্রশংসা করতে হবে। এমন চর্চা করতে হবে সবার। পরিবারের প্রতিটি সদস্যই আলাদা আলাদা গুণের অধিকারী। তাই ভালো কাজের প্রশংসা করতে হবে। এতে করে প্রত্যেকে অনুপ্রাণিত হবে এবং ভালো কাজ করার জন্য নিজেকে তৈরি করবে। কিন্তু অনেকেই মনে করেন সামনা সামনি প্রশংসা করা ঠিক না। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। বরং প্রশংসা করলে ভালো কাজ করার প্রতি অনুপ্রেরণা বাড়বে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। তাই তারা পরিবারে প্রশংসা করার চর্চা চালুর কথা বলে থাকেন তারা।

কে শিখিয়েছে এসব

অনেক সময় পরিবারের কোন কনিষ্ঠ সদস্য খারাপ কিছু বললে বা করলে। সবাই বলি, এটা তোমাকে কে শিখিয়েছে? কিন্তু এমন কথা বলা মোটেও উচিত নয়। এতে করে, খারাপ কাজের দোষ অন্যের উপর চাপানো যায়। সদস্যদের মধ্যে এমন ধারণা জন্মাবে। পরবর্তীতে সে ভুল করলে, দোষ অন্যের উপর চাপিয়ে দিবে। তাই এমনটা বলা থেকে বিরত থাকা উচিত। আর এই বিষয়টাকে পারিবারিক শিক্ষার অংশ হিসেবেই নেওয়া উচিত বলে মনে করেন অনেকে।

কর্তৃত্ব খাটানো

অনেকেই সন্তানের কর্তৃত্ব নিজের কাছে রেখে দেয়। সব সিদ্ধান্ত মা-বাবা নিয়ে থাকে। এতে করে অনেক সময় সন্তানদের উপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়। এটা অনেক ক্ষেত্রেই সন্তানের মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে অন্তরায় বলে জানা যায়। হিউম্যান বিহ্যাভিয়ার ও সাইকোলজি নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞরা জানান, সন্তানদের ভালো মন্দ বিবেচনাবোধ ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া উচিত। মা-বাবা অবশ্যই গাইড করবে। তবে কিছু কিছু সিদ্ধান্তের বিষয়ে অবশ্যই সন্তানের মতামত নেওয়া উচিত। সেইসাথে মতামত প্রদান বা কোন পরামর্শ প্রদানের চর্চা পরিবারেই শুরু করা উচিত।  



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭