লিভিং ইনসাইড

কুৎসা রটানোর স্বভাব অসুখ যাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 02/07/2020


Thumbnail

বান্ধবিকে নিয়ে বাইরে কোথাও ঘুরতে যাবেন। ভালো জামা কাপড় পড়ে গুছিয়ে নিলেন। একটু পরিপাটি হয়েই বের হলেন। রিকশায় উঠতে গিয়েই দেখা ঠোঁটকাটা এক বন্ধুর সাথে। আপনাকে দেখেই চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো। ওরে, কি ভাব রে! কিরে এতো ভাব নিয়ে কই যাস? কার সাথে দেখা করবি? প্রেমিকা! এমন ঘটনায়, আপনি কি করবেন জানি না। তবে এইটুকু বলে রাখি। এমন আচরণে, মহাপুরুষেরাও ক্ষিপ্ত না হয়ে পারে না। আর, আপনি আমি তো সাধারণ মানুষ। আমাদের এই সমাজে এমন অনেক মানুষ রয়েছে। তারা অন্যের ভালো দেখতে পারে না। তাদের কাজই হল আপনার আমার পেছনে লাগা। টিপ্পনী কাঁটা, খোঁচা দেওয়া কিংবা কুৎসা রটানো। এসব নিন্দনীয় কাজে এরা মহাপণ্ডিত। অবশ্য অন্য কোন যোগ্যতা তাদের পাবেন না। তবে হ্যাঁ, কেউ কেউ আবার মেধাবীও আছে। কিন্তু কুৎসা রটানোর এই অসুখে পড়ে, মেধা যেন চাপা পড়ে গেছে।

চারপাশে লক্ষ্য করলেই পেয়ে যাবেন। শহর কিংবা গ্রাম, এমন মানুষ এখন সবখানেই। সবখানেই যেন বাড়ছে এমন রোগ। পরনিন্দা চর্চার অভ্যাস, বাঙালি সমাজে বহু পুরনো। কিন্তু এমন আচরণ বাঙালি সংস্কৃতিতে নতুন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। নৃবিজ্ঞানীদের অনেকেই বলেন, বাঙালির প্রশংসা করার জুড়ি নেই। প্রশংসা বাঙালি এই পরিমানে করতে পারে। তা না দেখে বা দেখলে কেউ বিশ্বাসই করতে পারবে না। বলতে গেলে এটাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। এই নিয়ে হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ‘তৈলমর্দন’ নামক একটি প্রবন্ধও রয়েছে। যে কেউ পড়া মাত্রই উৎকৃষ্ট প্রবন্ধের স্বাদ নিতে পারবে। সে যাই হোক। একটা সময় প্রশংসায় থাকা খ্যাতি এখন নিন্দার দিকে যাচ্ছে। হয়তো এইদিকেও একটা রেকর্ড অন্তত দরকার।

কিন্তু এমন মানুষজন সম্পর্কে মনোবিজ্ঞানীরা কিন্তু ভিন্ন কথা-ই বলেন। তাদের মতে, এটা এক ধরণের মনোবৃত্তি। এবং এটা যে একটা রোগ, তাতে কোন সন্দেহ নেই। এমন মানুষজন অন্যের ভালো দেখতে পারে না। তারা সারাদিন রাত অন্যের অনিষ্ট কামনা করে। অবশ্য কাজের কাজ কিছু করতে পারে না। বিশেষজ্ঞরা জানান, তাদের আচরণ বিশ্লেষণ করে এমনটা জানা যায়। এমন মানুষজন মুখে অনেক কিছু করে ফেলে। কিন্তু কাজে কিছুই করতে পারে না। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে। তারা নিজেদের নিয়ে ভাবে খুব কম। নিজের উন্নতি কিংবা অবনতি নিয়ে ভাবে না।

জানা যায়, মানুষ হিসেবে তাদের এমন আচরণ সত্যিই নিকৃষ্ট ও নিন্মমানের। এই ধরণের মানুষ সমাজের কোন কাজে আসে নয়া। সেইসাথে তারা অন্যদের কাজ করতে দেয় নয়া। কেউ কেউ হয়তো তাদের বিরোধিতা সহ্য করেও কাজ করে। তাদের কথার পাত্তা দেয় না। কিন্তু অনেকেই সংকোচ করে পিছিয়ে যায়। তবে মনোবিজ্ঞানীরা এমন সমস্যার চিকিৎসা রয়েছে বলেও জানান। তারা জানান, সঠিকভাবে কাউন্সেলিং করলে এমন সমস্যা কাটানো যায়। অবশ্য দরকার হলে কিছু থেরাপিও দেওয়া যেতে পারে। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭