ইনসাইড আর্টিকেল

সিঁধেল চোর কি হারিয়ে গেল!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 06/07/2020


Thumbnail

গভীর রাতে করবো চুরি, মাঁখছি গায়ে তেল, বেজায় রকম পিছল্যা এখন, দেখবা মজার খেল। দুই হাতে ধরতে এলে, বাঈম মাছের মতো, পিছল্যা বাইর হইয়া যামু, ধরতে পারবা নাতো। সিঁধেল চোর নিয়ে রিয়েল আব্দুল্লাহ আল মামুনের ছড়া এটি।  সিঁধেল চোর শব্দটি গ্রামে বেশ পরিচিত। সিঁধ কাটিয়া চুরি করে তাই আঞ্চলিক ভাষায় শিং চোরও বলে অনেকে। এমন চোরের যন্ত্রনায় একসময় পুরো গ্রাম অতিষ্ঠ থাকত। কত সালিশ, শাস্তি, লজ্জা, জ্ঞান, বুঝ, পরামর্শ যে দেয়া হতো সিঁধেল চোরদের। কুরআন শপথ থেকে শুরু করে আল্লাহর কিরা, মসজিদে তওবা পড়ানো ইত্যাদি করার পরও শুধরাতো না। কিন্তু এখন হঠাৎ করেই যেন বিলুপ্তির খাতায় নাম উঠাল তারা। অশব্য এখন সিঁধেল চোর যেমন আগের মতো নাই। তেমনি আগের মতো গ্রামে আর কাঁচা বা মাটির ভিটের ঘরও তেমন নাই। 

কয়দিন আগেই রাজধানীর এক অভিজাত এলাকায় পুলিশের হাতে এক চোর ধরা পড়ে। বেচারা চোর গ্রিল কেটে নাকি চুরি করতে গিয়েছিল। কিন্তু বাসায় কাউকে না পেয়ে তিনদিন থেকে গেল। কেন থেকে গেল জানতে চাইলে জানায়। বাসায় অনেক ভালো ভালো খাবার ছিল। সেইসাথে নাকি প্রচুর বিদেশী এলকোহলও ছিল। তাই আর ফিরে যেতে ইচ্ছে করেনি। অবশ্য বাসার মালিক যদি প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রে বসে চোরকে না দেখতে পেত। তাহলে তো আর কিছু করারই ছিল না। যাই হোক গ্রামের হারিয়ে যাওয়া সিঁধেল চোরদের কিছু বৈশিষ্ট্য ছিল। তারা যেমন সব বাড়িতে চুরি করত না। তেমনি চুরির ব্যাপারেও তাদের কিছু বিশেষ জিনিসের প্রতি আগ্রহ থাকত। চুরি করার ক্ষেত্রে তারা মাটির ভিটের তৈরি ঘর দেখত। সেইসাথে কোন বিধবা বা কোন নারী একা কোন ঘরে থাকলে ঐ সমস্ত ঘর টার্গেট করত।    


নগদ টাকা

জানা যায়, সিঁধেল চোর চুরি করার ক্ষেত্রে নগদ টাকা সবার উপরে রাখে। এর নগদ মূল্য আছে। যে কোনো লেনদেনে ব্যবহার করা যায়। আর সে কারণেই সিঁধেল চোরের প্রথম টার্গেট থাকে নগদ টাকা। অথবা সহজেই নগদ টাকায় পরিণত করা যায় এমন কিছু সামগ্রী।


মোবাইল, টিভি

মোবাইল, টেলিভিশন, ভিসিআর, সিডি, ডিভিডি ইত্যাদি যন্ত্রপাতি সিঁধেল চোররা চুরির ক্ষেত্রে পছন্দের তালিকায় রাখত। গ্রামে এই সমস্ত জিনিসের বেশ ভালো দাম পাওয়া যেত। তাই এসব জিনিস তারা চুরি করার ক্ষেত্রে গুরুত্বে রাখত।

জামা কাপড়, খেলনা

সিঁধেল চোরদের চুরির তালিকা থেকে বাদ পড়ত না বাচ্চাদের খেলনাও। সেইসাথে এই চোরেরা স্বভাবগত দিক থেকে খুবই ছ্যাঁচড়া প্রকৃতির হতো। তারা হাতের কাছে যা পেত তাই নিয়ে চলে যেত। তাদের হাত থেকে পুরাতন জামা কাপড় থেকে শুরু করে জুতা, ফ্যান সবই নিয়ে চলে যেত। অবশ্য অনেকেই বলে থাকেন, সিঁধেল চোরেরা অভাবে পড়ে চুরি করত। তাই এমনভাবে সব কিছু নিয়ে চলে যেত।


গয়না

গয়না সহজেই নগদ টাকায় বিক্রি করা যায়। অলংকারের দোকানে বন্ধকও রাখা যায়। এটা খুব সহজেই পকেটে ভরে রাখা এবং বহন করা যায়। নগদ টাকা সিঁধেল চোরের চুরির তালিকায় শীর্ষে থাকে। এছাড়া আরো কিছু মূল্যবান সামগ্রী যেমন গয়না এবং বন্দুকও রয়েছে। যেহেতু বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বেশ এগিয়েছে। তাই চোরেরাও তাদের চুরির ধরণ এবং তালিকায় পরিবর্তন আনছে। তারা নতুন নতুন প্রযুক্তি পণ্য এবং নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস চুরি করত



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭