ইনসাইড পলিটিক্স

শেখ হাসিনার সহ্যের সীমা কতদূর?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 08/07/2020


Thumbnail

আমরা জানি যে, শেখ হাসিনা ধৈর্য্যশীল, ক্ষমাশীল এবং তাঁর সহ্য ক্ষমতা অপরিসীম। আর এই করোনাকালে তাঁর সহ্য ক্ষমতার আমরা নতুন মাত্রা দেখছি যে, তিনি ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে চাইছেন। কিন্তু শেখ হাসিনার এই ধৈর্য্য এবং সহ্য ক্ষমতাকে অনেকে দূর্বলতা মনে করছে কিনা সেই ব্যাপারে জনগণের মনে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে মুষ্টিমেয় কয়েকজন ব্যক্তির জন্য জনদূর্ভোগ যে চরম সীমায় পৌঁছে গেছে সেজন্য মানুষ অপেক্ষা করছে যে, শেখ হাসিনার ধৈর্য্যের বাঁধ কখন ভাঙবে, কখন তাঁর সহ্যের সীমা অতিক্রম করবে?

কারণ করোনা পরিস্থিতি শুরুর পর থেকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে ন্যাক্কারজনক, নজিরবিহীন, অকর্মণ্যতা, অযোগ্যতা এবং দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে তাতে তাঁদের বিরুদ্ধে বহু আগেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ধৈর্য্যশীল, ক্ষমাশীল এজন্য তিনি মনে করেছেন যে, করোনা শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বেই নতুন অভিজ্ঞতা। তাই তাঁদের হয়তো বুঝে উঠতে সময় লাগছে। তাঁরা হয়তো খাপ খাওয়াতে পারেনি। কিন্তু দিন যতই যাচ্ছে ততই স্পষ্ট হচ্ছে যে, আসলে সমস্যা তাঁদের আন্তরিকতায়, তাঁরা দুর্নীতিগ্রস্ত, তাঁরা জনগণ এবং সরকারের প্রতিপক্ষ হিসেবে কাজ করছে। এখন প্রধানমন্ত্রী কি পদক্ষেপ নেন সেদিকে তাকিয়ে আছে আপামর জনগণ। শেখ হাসিনা এই সমস্ত অপকর্মকারী, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কি সিদ্ধান্ত নেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়। কারণ এটার সঙ্গে মানুষের জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন জড়িত।

করোনা সঙ্কটের শুরু থেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একের পর এক অপকর্ম করেছে। চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে যেমন তাঁরা অপকর্ম করেছে, তেমনি করোনা পরীক্ষায় নমুনা সংগ্রহের দায়িত্ব এমন সব প্রতারকদের হাতে তুলে দিয়েছে যারা নমুনা পরীক্ষা না করেই মানুষদের ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এমন কর্মকাণ্ড করেছে- যে কর্মকাণ্ড নূন্যতম কোন মানুষের পক্ষে করা অসম্ভব। এই করোনাকালেও দুর্নীতিবাজদের উল্লাসের নৃত্য দেখা গেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। প্রত্যেকটা কেনাকাটায় নজিরবিহীন দুর্নীতি হয়েছে। করোনা পরীক্ষার জন্য যে মেশিন কেনা হয়েছে সেই মেশিন কেনা হয়েছে ২০০৯ এর মডেলের। সারাদেশে মেশিন বসানোর ক্ষেত্রে সীমাহীন উদাসীনতা দেখা গেছে। যে হাসপাতালগুলোকে করোনা চিকিৎসার জন্য করা হয়েছে সেই হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা কখনোই দেওয়া হয়নি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একমাত্র চিন্তা কোন কাজ দিলে কে কত টাকা দেবে। এরকম ভাবনা থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি এখন রুপকথাকেও হার মানিয়েছে।

সর্বশেষ রিজেন্ট হাসপাতালের যে ঘটনা, সেই ঘটনায় মানুষ বিস্ময়ে হতবাক হয়েছে। যেই হাসপাতালটির অনুমোদন নেই, সেই হাসপাতালটির সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী কিভাবে চুক্তি করেন? স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কক্ষে পায়ের ওপর পা তুলে দিয়ে ওই ভুয়া প্রতারক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার কিভাবে বৈঠক করেন? এই সমস্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে গেলে মানুষ অসহিষ্ণু হয়ে ওঠে।

আমরা জানি যে প্রধানমন্ত্রী অনেক ধৈর্যশীল, তিনি স্থির এবং ঠান্ডা মাথায় সব সিদ্ধান্ত নেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিনীত অনুরোধ করে বলতে হয়, এখন বোধহয় দেরী হয়ে যাচ্ছে। এখনি যদি এ সমস্ত অপকর্মকারী এবং অমানবিক দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে জনগনের মধ্যে হতাশা বাড়বে। কারণ জনগনের শেষ আশ্রয়স্থল হলেন আপনি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাধারণ মানুষের তাই এখন একটাই কথা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কঠোর হতে হবে। যারা জনগনের প্রতিপ্রক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭